মিজান বিন তাহের, বাঁশখালী টাইমস: উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চতুর্থ ধাপে বাঁশখালী উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন খোরশেদ আলম । তাঁর নির্বাচনী প্রতীক ছিল দোয়াত কলম । এই উপজেলায় ৩ জন প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এর মধ্যে খোরশেদ আলম পেয়েছেন ৬১ হাজার ৫১১ভোট।
বুধবার (০৫ জুন) রাত সাড়ে ৯ টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার জেসমিন আক্তার এই ফলাফল ঘোষণা করেন।
দায়িত্বরতরা জানান, বাঁশখালী উপজেলায় ১৪টি ইউনিয়ন ও ১ টি পৌরসভার ১১৫টি কেন্দ্রে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ হয়েছে। এই উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা তিন লাখ ৭৬ হাজার ৯০৬। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার দুই লাখ ২৩ হাজার ২১ জন এবং নারী ভোটার এক লাখ ৭৪ হাজার ৫৮৪ জন।
“ভাইস চেয়ারম্যান” পদে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন মোহাম্মদ হোছাইন। তাঁর নির্বাচনী প্রতীক ছিল মাইক। এই উপজেলায় ৭ জন প্রার্থী ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এর মধ্যে মোঃ হোছাইন পেয়েছেন ২১ হাজার ২১১ ভোট।
আর “নারী ভাইস চেয়ারম্যান” পদে লড়েছেন তিনজন। বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন নুরী মন আক্তার। তাঁর নির্বাচনী প্রতীক ছিল ফুটবল। এই উপজেলায় ৩ জন প্রার্থী মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এর মধ্যে নুরীমন আক্তার নুরী পেয়েছেন ৪৫ হাজার ১৩০ ভোট।
উপজেলা সহকারী রিটার্নিং অফিসার জানান, চেয়ারম্যান পদে দোয়াত কলম প্রতীকে খোরশেদ আলম পেয়েছেন ৬১ হাজার ৫১১ ভোট এবং আনারস প্রতীক নিয়ে তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইমরানুল হক পেয়েছেন ২১ হাজার ৯৭৯ ভোট। বেসরকারি ফলাফলে খোরশেদ আলম বিজয়ী হয়েছেন।
বিজয়ী ঘোষণার পর উপজেলার বিভিন্ন সড়কে বিজয় মিছিল ও উল্লাস করে খোরশেদের অনুসারী, নেতাকর্মী ও সাধারণ ভোটাররা।
বিজয়-পরবর্তী অনুভূতি জানিয়ে খোরশেদ আলম বলেন, ‘বাঁশখালীবাসী ও দোয়াত কলম প্রতীকের সমর্থকদের দেখভাল করার দায়িত্ব আমার কাঁধে পড়ল।’ তাঁর সব সমর্থক, ভোটার সর্বোপরি কর্মীদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘শান্তির মধ্য দিয়ে বাঁশখালীবাসীকে নিয়ে আমরা ভালো থাকতে চাই এবং এই উপজেলার সব নাগরিককে ভালো রাখার চেষ্টা করব।’
এদিকে দিনভর বিভিন্ন কেন্দ্রে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণ হয়েছে। সকালে প্রথম দিকে দু-একটি কেন্দ্রে বিছিন্ন ছোট খাটো কিছু সমস্যা দেখা দিলেও পরে তার সমাধান হয়।
সকাল ১০ টার দিকে ছনুয়া কাদেরিয়া উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার সান্টু চৌধুরী জানান, এই কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ২৪২৮। আড়াই ঘন্টায় এক বুথে দুই ভোট পড়েছেন। সকাল ১০ টা পর্যন্ত ১৪৩ ভোট মাত্র ৬ % রেকর্ড হয়েছে। তবে এই কেন্দ্রে সব প্রার্থীর এজেন্ট উপস্থিত আছেন। সকাল থেকে ভোটার উপস্থিত কম। প্রতি বুথে চার-পাঁচজন করে ভোটার এসেছেন।
খোরশেদ আলম বিজয়ী হওয়ার কারণ হিসেবে সাধারণ ভোটাররা বলছেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে উপজেলার সব এলাকার জনগণের সঙ্গে তাঁর চমৎকার সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। এ ছাড়া পর পর তিনবার উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। তিনি হেরে গিয়েও উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সামাজিক ও ধর্মীয় অবকাঠামো উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছেন। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পছন্দের প্রার্থী হিসেবে সবার চেয়ে এগিয়ে তিনি। এরই ধারাবাহিকতায় তাঁরও রয়েছে সাধারণ জনগণের মধ্যে একটি শক্ত অবস্থান।
বাঁশখালী উপজেলার বৈলছড়ী ইউপির হামিদিয়া রহিমা আলীয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রে খালেদ নামের এক যুবক বলেন, ‘যাঁরা নির্বাচন করছেন, তাঁদের মধ্যে খোরশেদ ভাইকে সবচেয়ে বেশি পছন্দ করে সাধারণ মানুষ। জনগণ সেই ভালোবাসা থেকে ভোট দিয়ে তাঁকে বিজয়ী করেছেন।’
অপর দিকে জাল ভোট দেওয়ার অপরাধে বাহারচড়া থেকে ৪ জনকে ১ লক্ষ টাকা জরিমানা করেন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ও মিরসরাই উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রসান্ত চক্রবর্তী।