সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া ভোটে ভোটারদের তেমন আনাগোনা দেখা না গেলেও দিনশেষে সবর্মোট ৮৫১৩৫ বৈধভোট পড়েছে।
ভোটগ্রহণ শেষ হবার পর থেকেই চলে অপেক্ষার পালা। উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে জড়ো হতে থাকে প্রার্থী ও সমর্থকেরা। ধীরে ধীরে কানায় কানায় ভরে যায় নির্বাচনী ফলাফল সংগ্রহ ও পরিবেশনা মঞ্চ। বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে আসতে থাকে প্রার্থীদের প্রাপ্ত ভোটের হিসাব। আগ্রহী ভোটাররা মেলাতে থাকে জয়-পরাজয়ের হিসাব-নিকাশ। কেন্দ্র থেকে আসা তথ্যে দেখা যায় অধিকাংশ কেন্দ্রেই খোরশেদ আলম বিপুল ভোটে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীকে হারিয়ে দিচ্ছেন। সেই উল্লাসে মেতে উঠে মুহুর্মুহু শ্লোগানে মুখর করে তুলছেন খোরশেদসমর্থকেরা।
এদিকে সহকারী রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্বে থাকা বাঁশখালীর ইউএনও জেসমিন আক্তার প্রাপ্ত ভোটের হিসাব মাইক্রোফোনে উপস্থিত জনতার সামনে মিনিটে মিনিটে জানিয়ে দিচ্ছিলেন। সামনেই বসা ছিল সম্ভাব্য বিজয়ের পথে এগিয়ে যাওয়া প্রার্থী ও নেতা-কর্মীরা। সন্ধ্যা শেষে রাত ঘনিয়ে আসতেই সব কেন্দ্র থেকে আসা ভোটের হিসাবে জয়ের পথে এগিয়ে যান খোরশেদ আলম। তিনি আর চুড়ান্ত ফলাফলের অপেক্ষায় বসে না থেকে বিজয়ের মালা গলায় দিয়ে বেরিয়ে পড়েন রাজপথে! হাজারও জনতার অভিনন্দনে সিক্ত হয়ে এগিয়ে আসেন, সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। বিজয়ের মালা গলায় দিয়ে ছাদখোলা গাড়িতে চড়ে ধীর গতিতে এগিয়ে যেতে থাকেন আর কর্মী-সমর্থকেরা শ্লোগানে শ্লোগানে মুখর করে তোলেন উপজেলা সদর।
বাঁশখালী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রথম থেকেই নিজেকে একজন শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে আসছেন। তিনি চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগের শ্রমবিষয়ক সম্পাদক।
খোরশেদ আলম চট্টগ্রাম দক্ষিণজেলা ও বাঁশখালী আওয়ামী লীগের একজন পরীক্ষিত নেতা। তিনবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েও খুব কম ভোটের ব্যবধানে বার বার হেরে যাওয়া চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের শ্রমবিষয়ক সম্পাদক খোরশেদ আলম লড়েছেন দোয়াত কলম প্রতীক নিয়ে।
এবারের নির্বাচনে তিনি এক পথসভায় ভোটারদের কাছে কান্নাজড়িত কণ্ঠে অনুরোধ করে বলেছেন, তার সন্তান মারা গেছে। তিনি সব সময় বাঁশখালীবাসীর সুখে-দুখে ছিলেন। তিনি বাঁশখালীবাসীকে ফেলে চলে যাননি। সবাই যেন এবার তাকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করেন।
বাঁশখালী উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে খোরশেদ আলম ছাড়াও আরো যারা প্রার্থী ছিলেন তারা হলেন- বাঁশখালীর সাবেক পৌর মেয়র শেখ ফখরুদ্দীন চৌধুরী (ঘোড়া), বাঁশখালী উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এমরানুল হক (আনারস), চট্টগ্রাম সিটি কলেজের সাবেক জিএস, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী যুবলীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক জাহিদুল হক চৌধুরী মার্শাল (মোটর সাইকেল) প্রতীক। যিনি ভোটের কয়েকদিন আগে ভোট থেকে সরে দাঁড়ান।
উল্লেখ্য, বাঁশখালীতে মোট ভোটার সংখ্যা রয়েছে ৩,৭৬,৯০৬ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ১,৭৪,৫৮১ পুরুষ ২,০২,৩২১, হিজরা ভোটার রয়েছে ৪ জন এবং কেন্দ্র সংখ্যা ১১৫ টি।