তাফহীমুল ইসলাম, বাঁশখালী- বঙ্গোপসাগরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আনোয়ারা উপজেলার জেলেদের হামলায় বাঁশখালীর একজন নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। নিহত নাসির উদ্দীন (৩০) উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের ইলশা গ্রামের শামসুল আলমের পুত্র। তিনি ছোটকাল থেকে খানখানাবাদের নানার বাড়িতে থাকতেন। আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে গভীর সাগরের গহীরা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে।
জানা যায়, বাঁশখালীর জেলেরা হারুণ ও বশরের মালিকানাধীন ‘মাওলানা বোট’ নিয়ে সীমান্তে জাল বসাতে ফাঁড় ফেলতে গেলে আনোয়ারা উপজেলার জেলেদের দুইটি বোট এসে দুইদিক থেকে হামলা চালায়। এসময় নাসির উদ্দীন নামে বোটে থাকা এক ব্যক্তি নিহত ও ২১ জেলে আহত হয়।
বোটে থাকা ছাদুর রশিদ বলেন, ‘আমরা ফাঁড় ফেলতে গেলে আনোয়ারার দুইটি বোট এসে দুইদিক থেকে একইসাথে হামলা চালায়। এতে আমাদের বোট উল্টে গেলে আমরা সবাই পানিতে পড়ে যাই। আমরা এক ঘন্টার বেশি সময় পানিতে ভেসে অপর বোটের সহযোগিতায় তীরে ফিরে আসতে পারলেও আমাদের সাথে থাকা নাসিরকে তারা ফিরতে দেয়নি। তারা নাসিরকে পানিতে ভাসমান থাকা অবস্থায়ও মারধর করে। এসময় সেখানেই নাসিরের মৃত্যু হয়।’
বোটে থাকা ভুবন জলদাস বলেন, নাসিরের লাশটি আমরা উদ্ধার করে বোটে তুলেছিলাম। তারা আমাদের মারধর করে লাশটি আবার ছিনিয়ে নেয়। তাদের হাতে কিরিচসহ ভারী অস্ত্রশস্ত্র ছিল।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মুহাম্মদ ইসমাইল বলেন, নিহত নাসির ছোটকাল থেকে আমার এলাকায় বসবাস করতো। সে দিনমজুর হিসেবে আজ জেলেদের সাথে গভীর সমুদ্রে ফাঁড় ফেলতে গিয়েছিল৷
পশ্চিম বাঁশখালী উপকূলীয় মৎস্য সমবায় সমিতির সভাপতি তারেকুল ইসলাম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ শুয়াইব জানান, আমরা আমাদের সীমানায় জাল ফেলতে গেলেও দীর্ঘদিন ধরে আনোয়ারার জেলেরা তাদের হুমকি ধমকি দিয়ে আসছিল। তারই ফলশ্রুতিতে আজ আমাদের বোটে হামলা চালিয়ে নাসিরকে তারা হত্যা করেছে।
খানখানাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ বদরুদ্দীন চৌধুরী বলেন, আনোয়ারার জেলেদের হামলায় নাসির নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। লাশ এখনো নিখোঁজ রয়েছে। এ ঘটনায় উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। একই সাথে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত লাশ নিখোঁজ রয়েছে। লাশের অপেক্ষায় কদমরসুল সাগর উপকূলে নিহতের স্বজনসহ শত শত মানুষ অপেক্ষা করছে।