আরকানুল ইসলাম, বাঁশখালী টাইমস: বাঁশখালীর জঙ্গল সাধনপুরে ৫৭০ একর জায়গার উপর গড়ে তোলা হয়েছে ‘গুলবাগ এগ্রো লিমিটেড’। বাঁশখালীর বিশিষ্ট সমাজসেবী মরহুম এম. আনোয়ারুল আজিম (ভোলা) ১৯৮০ সালে নিজস্ব জায়গার উপর এই এগ্রো ফার্ম প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর থেকেই এই এগ্রো ফার্ম ভোলার পাহাড় বা ভোলার বাগান নামে পরিচিতি লাভ করে।
বিশাল এই এলাকার প্রায় ৩৭৫ একর জায়গাজুড়ে রয়েছে লিচুবাগান, আমবাগান, মাল্টাবাগান, পেয়ারাবাগান, আদাসহ আরো নানান জাতের ফলজ বৃক্ষাধি। রয়েছে মৎস প্রজেক্ট, গয়ালের খামার। সামনে তৈরি হবে ইকো রিসোর্টস, হাঁসের খামারসহ আরো নানান উন্নয়নমুখী প্রজেক্ট।
চট্টগ্রামের বাজারে সুস্বাদু রসালো ফল হিসেবে বাঁশখালীর ভোলার বাগানের লিচুর খ্যাতি দীর্ঘদিনের।
সুদীর্ঘ ৪০ বছর ধরে এই বাগানের বিভিন্ন ফল স্থানীয় বাজারের চাহিদার যোগান দিয়ে শহরের বাজারে সরবরাহ হচ্ছে।
সরেজমিনে বাগানে গিয়ে দেখা যায়, থোকায় থোকায় ঝুলছে স্বাদে অতুলনীয় এই লিচু, ভারে নুয়ে পড়ছে মাটিতে। প্রতি বছরের তুলনায় এবার লিচুর ফলন অধিক হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন গুলবাগ এগ্রো লিমিটেডের পরিচালক রেজাউল করিম। মৌসুমের শুরুতে গাছের সঠিক পরিচর্যার কারণে ফলন ভালো হয়েছে। বৃষ্টিপাত কম হওয়ার কারণে স্বাদ বেড়েছে বলে জানান তিনি।
এই এগ্রো ফার্মের স্বপ্নদ্রষ্টা বিশিষ্ট সমাজসেবক প্রয়াত এম. আনোয়ারুল আজিমের সহোদর কিংবদন্তী ব্যাংকার মোহাম্মদ আলীর অনুপ্রেরণায় পরিবারের অন্য সদস্যদের পরিচলনায় নতুন আঙ্গিকে গুলবাগ এগ্রো লিমিটেড নামে একটি বহুমুখী প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। এই বাগানে ৩৫ বছর বয়সোর্ধ্ব প্রায় ৩০০ টি লিচু গাছ রয়েছে। তরুণ এই উদ্যোক্তা বলেন, ২০২২ সালে এই বাগানে আরো ২০০০ টি উন্নত লিচু গাছের চারা রোপন করা হয়েছে। গুলবাগ এগ্রো লিমিটেড আগামী ২/৩ বছরের মধ্যে স্থানীয় বাজারের বিভিন্ন মৌসুমী ফলের চাহিদার একটি বড় অংশের যোগান দিতে সক্ষম হবে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন গুলবাগ এগ্রো লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাউসার আজিম ও অন্যতম পরিচালক শাহরিয়ার আনোয়ার। তাঁরা জানান, আমাদের এই এগ্রো ফার্মে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন জাতের অন্তত ৫০০০ আম গাছ, ২০০০ মালটা গাছ, বিপুল সংখ্যক উন্নত জাতের বড়ই গাছের চারা রোপণ করা হয়েছে। তাছাড়া এবছর মৎসপ্রকল্প সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এই এগ্রো ফার্মে স্থানীয়সহ দক্ষতাসম্পন্নদের যেমন কর্মসংস্থান হচ্ছে তেমনি স্থানীয় বাজারসহ চট্টগ্রামের বাজারে বিশাল একটা কৃষিজাত পণ্যের চাহিদার যোগান দেয়া সম্ভব হচ্ছে।
সংযোগ সড়কের সংস্কার, বিদ্যুৎসংযোগ স্থাপন এবং হাতির উপদ্রব প্রতিরোধ করা গেলে শিগগির এটি অর্থনৈতিক সম্ভাবনার নতুন দুয়ার খুলে দেবে, একই সাথে বাঁশখালীর পর্যটনশিল্পে যোগ করবে এক নতুনমাত্রা।