জাতীয় সংসদে আগামী ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেট মন্ত্রিসভায় অনুমোদন হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে মন্ত্রিসভার বিশেষ বৈঠকে প্রস্তাবিত এই বাজেট অনুমোদন দেয়া হয়। কিছুক্ষণের মধ্যে বাজেট পেশ শুরু করবেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। নিজের রেকর্ড ভেঙ্গে টানা দশমবার ও নিজের ১২তম বাজেট উপস্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী। এর মাধ্যমে ভোটারদের জন্য, জনগণের জন্য সুখবর দেবেন তিনি। তার এ বাজেট দেশের ইতিহাসে ৪৭তম বাজেট ও রেকর্ড বাজেট।
বাংলাদেশের ৪৬ বছরের অর্জনের মাথায় দেশকে আরও একধাপ এগিয়ে নিতে ‘সমৃদ্ধ আগামী:অগ্রযাত্রার বাংলাদেশ’ প্রতিপাদ্য নিয়ে এই বাজেট পেশ হচ্ছে।এবারের বাজেটের আকার ধরা হয়েছে প্রায় পৌনে ৫ লাখ কোটি টাকা। এই অংকের বাজেট মোট দেশজ উৎপাদন-জিডিপির ২০ শতাংশের কিছু বেশি। বাজেটে ১ লাখ ৭৩ হাজার কোটি টাকার মূল এডিপিসহ মোট উন্নয়ন খরচ ধরা হয়েছে ১ লাখ ৮০ হাজার ৮৬৯ কোটি টাকা। বাকি ২ লাখ ৮৭ হাজার ১৩১ কোটি যাবে বেতন ভাতা সুদ পরিশোধসহ অন্যান্য অনুন্নয়ন খাতে।
অর্থমন্ত্রী আগেই জানিয়েছেন, এই বাজেটে নতুন করারোপ করা হবে না। ফলে জিনিসপত্রের দাম বাড়ার আশঙ্কা নেই। আমার দেয়া বাজেটের পরপরই গত ১০ বছরে কখনও জিনিসপত্রের দাম বাড়েনি। এবারও বাড়বে না। দেশবাসীর জন্যে এটি এবারের সুসংবাদ।তিনি বলেন, বরং করমুক্ত আয়ের সীমা আড়াই লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে তিন লাখ টাকা করার প্রস্তাব আসতে পারে। বর্তমানে আয় অনুযায়ী শূন্য, ১০, ১৫, ২০, ২৫ ও ৩০ শতাংশ হারে আয়কর দিতে হয়। এবার ৫ কিংবা সাড়ে ৭ শতাংশ হারের আরেকটি নতুন কর স্তর রাখা হতে পারে।এবারের বাজেটে ভ্যাটকে ৯ স্তর থেকে ৬ স্তরে নামিয়ে আনা হচ্ছে। সর্বোচ্চ হার হবে ১৫ শতাংশ। বর্তমানে ভ্যাটের হার নির্ধারণ করা আছে ১.৫, ২.৫, ৩, ৪, ৪.৫, ৫, ৬, ১০ ও ১৫ শতাংশ স্থরে।আগামী বছর পাঁচ স্তর থেকে তিন স্তরে নামিয়ে আনা হবে। সিগারেট ও মোবাইল কোম্পানির জন্য করপোরেট ট্যাক্স ৪৫ শতাংশ অপরিবর্তিত থাকবে। এছাড়া ব্যাংকসহ লিস্টেড-আনলিস্টেড সব কোম্পানির ক্ষেত্রে করপোরেট ট্যাক্সের সর্বোচ্চ হার হবে ৩৭.৫ শতাংশ।৮৪ বছর পেরিয়ে আসা মুহিতের হাতে গত নয় বছরে বাংলাদেশের বাজেটের আকার বেড়েছে প্রায় চারগুণ। ২০০৯-১০ অর্থবছরে যেখানে বাজেটের আকার ছিল ১ লাখ ১০ হাজার ৫২৪ কোটি টাকা, নতুন বাজেটে তা ৪ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার মত হতে যাচ্ছে।মুহিত যে পরিকল্পনা সাজিয়েছেন, সেই হারে সরকারি ব্যয় বাড়ানোর জন্য আগামী অর্থবছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআরকে ২ লাখ ৯৬ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য দেওয়া হতে পারে।আর সেক্ষেত্রে এনবিআরকে চলতি অর্থবছরের লক্ষ্য থেকে ৭১ হাজার কোটি টাকা বেশি আদায় করতে হবে, যা চলতি অর্থবছরের সংশোধিত লক্ষ্য থেকে প্রায় ৩২ শতাংশ বেশি। এনবিআর কখনোই রাজস্ব আদায়ে এত প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারেনি।
: আরটিভি অনলাইন