স্থায়ী প্রতিবেদক, বাঁশখালী টাইমস: বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের কার্যকর চিকিৎসা নিয়ে যেখানে পুরো বিশ্ব নাকাল, বিজ্ঞানীরা হন্য হয়ে খুঁজে বেড়াচ্ছেন উপযুক্ত ঔষধ ও ভ্যাকসিন ঠিক এমন সময় আশার বাণী শুনালেন চট্টগ্রামের স্বনামধন্য হোমিওপ্যাথ, হোমিও গবেষক ডা. অজয় কুমার চৌধুরী।
নাগরিক নিউজের সাথে আকান্ত আলাপচারিতায় তিনি তুলে ধরেছেন চলমান মহামারি প্রতিরোধে হোমিওপ্যাথির কার্যক্ষমতা ও প্রয়োগ বিধি সম্পর্কে। তিনি বলেন- ‘করোনা সেরে উঠার মত ঔষধ হোমিওপ্যাথিতে আগে থেকেই ছিল। আমাদের চিকিৎসা পদ্ধতিটা মূলত লক্ষণ বেসিস। রোগীদের লক্ষণ এনালাইসিস করে আমরা ঔষধ নির্বাচন করে থাকি। সে হিসেবে আর্সেনিক এলবাম নামের ঔষধটি করোনা রোগীদের লক্ষণে প্রায় মিলে যায়। যার ফলে করোনা উপসর্গের রোগীরা এই ঔষধে ভালো ফল পাচ্ছেন। দেওয়ান হাটের এক রোগী তিনি করোনা পজিটিভ ছিলেন, আমি তাকে লক্ষণ বিবেচনায় ঔষধ প্রয়োগ করলাম। আশার কথা, তিনি সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
এই ঔষধ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন- ‘আর্সেনিক এলবামের কার্যকারিতা প্রথমে ইতালিতে আবিষ্কার হয়, এরপর আসে ভারতে৷ ভারতে ৩ দিন প্রয়োগের পর ৩ দিন গ্যাপ দিয়ে দিয়ে প্রয়োগ করা হচ্ছে। তবে আমার কৌশল হচ্ছে- দিনে দুইবার করে একটানা এক সপ্তাহ। কারণ ভারতের মানুষ বেশিরভাগ ভেজিটেরিয়ান, তবে এদেশে মাছ-মাংস বেশি খাওয়ায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম৷ এই পদ্ধতিতে আমি ভালো ফল পাচ্ছি।
করোনা চিকিৎসায় পুরোপুরি হোমিও নির্ভর হওয়া যাবে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন- ‘অবশ্যই যাবে তবে যাদের অক্সিজেন লেভেল কম, বয়স্ক ও সংকটাপন্ন রোগী তাদেরকে যথাসময়ে অক্সিজেন সরবরাহ করতে হবে। পাশাপাশি লক্ষণ অনুযায়ী বিভিন্ন মাত্রার হোমিও ঔষধ প্রয়োগ করা যাবে।
প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও চেম্বারে রোগীদের সেবা দিচ্ছেন কোন প্রতিবন্ধকতা আসছে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান- ‘কাজ করতে গেলে প্রতিবন্ধকতা আসবেই। আমার বাবা, ঠাকুর দাদা, আমার স্ত্রীও ডাক্তার। আমার মেয়েও মেডিকেলে ডাক্তারি পড়ছেন, সবমিলে পরিবারে ১৮ জন ডাক্তার। এই দুর্যোগে ঝুঁকি আমলে নিয়েই মানুষকে সেবা দেয়ার উদ্দেশ্যে চেম্বার খোলা রেখেছি।
করোনার গতিবিধি সম্পর্কে তিনি বলেন- ‘এই ভাইরাস খুব সহজেই নিঃশেষ হয়ে যাবেনা। তবে আমাদের মধ্যে যে সচেতনতার অভ্যাস গড়ে উঠেছে এটা ধরে রাখতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি ও পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে আপোষ করা যাবে না। পরিমিত ও পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করতে হবে। সর্বোপরি এই রোগ হতে সুরক্ষা ও পরিত্রাণ পেতে সচেতনতার বিকল্প নেই।
উল্লেখ্য, ডা. অজয় কুমার চৌধুরী ৪০ বছর ধরে হোমিও গবেষণা ও চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন। চিকিৎসা সেবায় তাঁর অবদান ও কীর্তির স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ২০১২ সালে মাদার তেরেসা রিসার্চ কাউন্সিল কর্তৃক ‘মাদার তেরেসা গোল্ড মেডেল ২০১২’ পদকে ভূষিত হন।