নাড়ির টানে আমিও
মোঃ জয়নাল আবেদীন
সবাই নাকি নাড়ির টানে বাড়ি ফেরে-
আর আমি–
আমার নাড়িই’বা কী আর বাড়িই’বা কী?
হয়তো কোনো বাড়িতে কাজ করত মা,
ভাত-কাপড়ে কিংবা সামান্য মজুরীতে।
গরীবলোকের বউ ছিল বলে
বেশীদিন গতরে সুখ সয়নি,
শরীরের যে কয়টি অঙ্গ ছিল তার
সবটাই নীল বিষের দংশনে
জর্জরিত হতে হতে…
আমার মতো ভারী বোঝাও বইতে হলো তাকে।
বুভুক্ষু-ক্ষুধার্ত পেট বুঝত না এত কিছু।
দু’মুঠো ভাতের স্বাদ তাকে জীবন ও যৌবনের ব্যবধানটাই গুলিয়ে দিয়েছিল।
সভ্যতার শ্বেত-চন্দনে ভদ্র মানুষগুলোর
যে অদ্ভুত রকম খায়েস থাকে –
দু’ফোটা কুয়াসার খায়েসী জলে
ঘর বেধেঁছিলাম কোনো অবলার জঠরে;
তা কেবল বধির রাতের একাকী ঝরে পড়া শুকনো পাতারাই জানে।
তারই একটি হয়ে ঝরেছিলাম আমি
কাক-কুকুরের পাশেই ডাস্টবিনে।
তাই আর নাড়ি পোতা হয়নি,
ক্ষুধিত কোনো কাক-কুকুরের পেটে
আজও সে ঘুরে বেড়ায় বেওয়ারিশ হয়ে।
ঘরই যার অস্তিত্ব বিহীন
তার আবার নাড়ির টান!
মানবিকতা কে স্পর্শ করেছে, কবির কাব্যিকতা।