ছোবল

সালসাবিলা নকি
পর্ব এক ||
বিশাল বড় বড় একেকটা ঢেউ আছড়ে পড়ছে নদীর পাড়ে। পরমুহূর্তেই পাড়ের কিছু অংশ ভেঙে পড়ছে। তারপর ‘ঝুপ’ শব্দ তুলে সে অংশটা তলিয়ে যাচ্ছে পানির গভীরে। হাত দশেক দূরে বসে এ দৃশ্যটা গভীর মনোযোগ দিয়ে দেখছে আব্দুল্লাহ। আপাতঃদৃষ্টিতে তাকে দেখে এটাই মনে হবে। কারণ তার চোখ দুটো স্থির হয়ে আছে নদীর পাড়ের ভাঙনরত অংশে। কিন্তু তার কিশোর মস্তিষ্কে অজস্র ভাবনা লাগামহীন ছুটে বেড়াচ্ছে। আট-নয় বছরের একটা ছেলের মাথায় ডাংগুলি, মার্বেল অথবা হা-ডু-ডু খেলার পরিবর্তে কী গুরুগম্ভীর ভাবনা চলে সেটা বোঝার সাধ্য কারো নেই। যদি না সে কারো কাছে মনের কথা প্রকাশ করে। কিন্তু কাকেই বা বলবে সে! তার বন্ধুরা কেউ নেই এখন। মামুন, বাবু, কিবরিয়া, শাহাদত, মোমেন সবাই চলে গেছে। নিজেদের ভিটে-মাটি ছেড়ে। ভিটে-মাটি অবশ্য নেই এখন। সেখানে অথৈ জল। সামনে তাকিয়ে আবদুল্লাহ বোঝার চেষ্টা করে ঠিক কোন জায়গায় ছিল বাবুদের বাড়ি। একই ভিটেতে থাকতো মামুনরাও। চাচাতো ভাই ওরা দুজন। এর কয়েক ক্রোশ দূরে কিবরিয়াদের ছোট ভিটেটা। সামনে একরত্তি উঠোন। তাতে একটা বিশাল আম গাছ। সেই গাছে দড়ি বেঁধে দোলনা বানিয়ে চড়তো ওরা। পেছন থেকে ধাক্কা দিলে সোজা পুকুরের মাঝখানে চলে যেত। এখন সেই আম গাছটা নেই। পুকুরটাও নেই। নেই কিবরিয়াদের সেই ছোট মাটির ঘরটা। সবকিছু এখন সমান, থৈ থৈ পানি। সেদিকে তাকিয়ে আব্দুল্লাহর চোখ জ্বালা করে।
“ঐ আব্দুল্লাহ! কী রে তুই এড়ে বঁই ক্যা থাইক্কুস? আঁ-ভাবি তুরে তুয়াদ্দে ক্যান গরি। আযিন্নে অই যার। তুই আইযু গরত ন যস দে কিল্লাই? এহন যা। ভাবি ছিবে লই বঁই থাইক্কি। দেরি গরিলে পিডর ছাম তুলি ফেলাইব।”
ইসমাইল চাচার হাঁকডাকে ধ্যান ভাঙে আব্দুল্লাহর। অনিচ্ছাসত্ত্বেও বাড়ির দিকে পা বাড়ায় সে। তার যাওয়ার পথের দিকে চেয়ে থাকে ইসমাইল। দূরন্ত ছেলেটা কেমন পা টেনে টেনে হাঁটছে। এই তো সেদিনের কথা যখন আব্দুল্লাহ দলবল নিয়ে পাড়া চষে বেড়াতো। এর গাছের কুল, ওর গাছের কাঁঠাল, পেঁপে, নারকেল পেড়ে সাবাড় করে দিত। গাছের মালিকরা ধরে হালকা বকাঝকা করতো। কিন্তু ওদেরই তো ছেলে। লঘু শাস্তি দিয়ে ছেড়ে দিত। দু’চারটা দষ্যি ছেলে পাড়ায় না থাকলে হয় না। অথচ আজ কেউ নেই। নদী ভাঙনের কবলে পরে যে যেখানে পারে চলে গেছে। বন্ধুদের হারিয়ে আব্দুল্লাহও কেমন নিশ্চুপ হয়ে গেছে। কদিন পর হয়তো আব্দুল্লাহর পরিবারও চলে যাবে। ভাবতেই বুকের ভেতরটা কেমন করে উঠে ইসমাইলের।

পোয়াতি গাভীটাকে খোঁয়াড়ে বেঁধে নিজ হাতে ভূষি খাইয়ে দিচ্ছে শাহনূর। ফাঁকে ফাঁকে চোখ রাখছে উঠোন পেরিয়ে মূল দরজায়। আব্দুল্লাহ এখনো ফেরেনি। বারবার করে বলে দিয়েছে সন্ধ্যার আগে ঘরে ফিরতে। আর কিছুক্ষণের মধ্যেই অন্ধকার নামবে। ছেলেটার আসার কোন নাম নেই। গরুকে ভূষি খাইয়ে হাত ধুয়ে নিল শাহনূর। এরই মধ্যে আঁধার নেমে গেছে। দ্রুত হাতে কিছু শুকনো ডালপালা নিয়ে আগুন জ্বেলে দিল সে। ধোঁয়ার কারণে যাতে মশা না আসে। গরুটা মশার কামড় থেকে মুক্ত থাকুক। মসজিদ থেকে মাগরিবের আযান ভেসে আসছে। মাথার ঘোমটা আরেকটু টেনে দিল সে। তারপর খোঁয়ার থেকে বেরিয়ে দ্রুত ঘরের দিকে পা বাড়ালো। আব্দুল্লাহর দাদা ঘরেই আছেন। শরীরটা দূর্বল লাগছিল বলে সারাদিন ঘর থেকে বের হননি। তাকেই বলতে হবে আব্দুল্লাহকে খুঁজে আনতে।
ওসমান সাহেব মসজিদে যাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছেন। এমন সময় শাহনূর এসে বলল,
“আব্বা আব্দুল্লাহ তো এহনও ঘরত নো আঁইয়ে। অনে এক্কানা ছন না ইতে হড়ে যাইয়েরে বঁই থাইক্কে।”
ওসমান সাহেব অবাক হয়ে বললেন,
“ইতে তো বোত আগে আইস্যে। এহন আঁরা দুনজন এক্কুয়ারে নামায পইত্তাম যাইদ্দে এনা।”
কথাটা শুনে শাহনূর যারপরনাই অবাক হলো। ঘোমটার আড়াল থেকে মাথাটা এদিক ওদিক ঘুরিয়ে দেখল ঘরের এক কোণায় দাঁড়িয়ে আছে আব্দুল্লাহ। পাঞ্জাবি টুপি পড়ে মসজিদে যাওয়ার জন্য পুরোদস্তুর তৈরি সে। আর কিছু না বলে সেখান থেকে চলে গেল শাহনূর। মনে মনে ভাবছে সে, সারাক্ষণই তো তার নজর দরজার দিকে ছিল। আব্দুল্লাহ কখন, কোনদিকে এলো! তার শ্বশুর নিশ্চয়ই এখন বলবে, কেমন মা! ছেলের আসা যাওয়ার দিকে কোন খেয়াল রাখে না। নিজের ওপর খুব রাগ হচ্ছে শাহনূরের। এমন অন্যমনষ্ক সে হলো কী করে!
এদিকে শাহনূর চলে যাওয়ার পর দাদা-নাতি একচোট হেসে নিল। অন্ধকার যখন নামতে শুরু করেছে তখনই ঘরের পেছনের কাঁঠাল গাছ বেয়ে আব্দুল্লাহ পাঁচিলের ওপর উঠেছিল। কিন্তু অত উঁচু থেকে নামতে ভয় পাচ্ছিল সে। তার দাদাভাই তখন মসজিদের উদ্দেশ্যে বের হবেন। তখনই আব্দুল্লাহ নিচু গলায় দাদাকে ডাকে। তারপর নাতিকে কোলে করে সেখান থেকে নামিয়ে চুপিচুপি ঘরের ভেতর নিয়ে গেছেন ওসমান সাহেব। সাথে সাথে পাঞ্জাবি টুপি পড়িয়ে দিয়েছেন। এরপর পরই শাহনূর ঘরে ঢুকেছিল। মায়ের কাছে ধরা পড়তে পড়তে বেঁচে গেছে আব্দুল্লাহ।
“দাদা আযিয়ে তো অনে আরে মাইরেরতুন বাছাইয়ন। ধরা হাইলে আম্মা আরে বেশি মাইত্তু।” হাসি থামিয়ে বলল আব্দুল্লাহ।
ওসমান সাহেব চাপা গলায় বললেন, “আঁধার অই গেইয়ে এতাল্লাই ইবে বুঝিন ন ফারে। কিন্তু তুই আর হনদিন এইল্লা দেরি গরি ঘরত ন আঁবি। আঁই আর এই হাম ন গইজ্জুম। এহন তাড়াতাড়ি চল, নামাযের অত্ত যাইবই।”
তারপর দাদা-নাতি মসজিদের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হল। মসজিদ তাদের বাড়ি থেকে দূরে নয়। চিকন মাটির রাস্তা পেরিয়ে কিছুদূর এগুলোই মসজিদ। ইমাম সাহেব বলে দিয়েছেন মাগরিবের নামায শেষে সবাই যেন থাকে। জরুরি কথা আছে। তাই নামায শেষে মুসল্লিরা সবাই অপেক্ষা করছে।
মসজিদটা বেশ বড়। ডানপাশে কবরস্থান। পাড়ার মানুষদের দাফন এখানেই হয়। মসজিদের পেছনে বেশ কিছু জায়গা নিয়ে চাষবাস করেছেন মুয়াজ্জিন। কাঁচামরিচ, শাকসবজি আর টমেটো। ফলন হলে সেগুলো গরীব মুসল্লিদের দিয়ে দেন। আর মসজিদের সামনে বিশাল খোলা জায়গা। তার মাঝখানেই পাকা ঘাট নিয়ে একটা ছোট পুকুর। মুসল্লিরা অযু-কালাম এই পুকুরেই করে।
ঈমাম সাহেব কেশে গলাটা পরিষ্কার করে নিলেন। তারপর উপস্থিত মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য শুরু করলেন, “আসসালামু আলাইকুম আঁর মুসল্লি ভাই অক্কল। অনরারে এ সমত থাইকতে হয়্যিদি দরকারি এক্কান পরামর্শের লায়। দইজ্যা তো ভাইঙতে ভাইঙতে এব্বেরে মসজিদর হাসাত আঁই গেইয়্যে। অনরা দেইক্যুন নে হবরস্থান অদ্ধক পানিত গেইয়ই? আযিয়া মাগরিবের সমত আবারও ভাইঙ্গে। যেহন সমত পুরা হবরস্থান যাইবই। এয়ার পরপরই আঁরার মসজিদ। এহন অনরা হনছাই কী গইজ্জুম? কেনে আঁরার মসজিদ গানেরে বাছাইয়ুম।”
মুসল্লিরা চুপ হয়ে আছে ইমাম সাহেবের কথা শুনে। শঙ্খ নদী যেভাবে রাক্ষুসী মূর্তি ধারণ করেছে তাতে গ্রামবাসীর ভয়ের অন্ত নেই। গত দু’বছরে প্রায় পঞ্চাশ, ষাটটা ঘর তলিয়ে গেছে নদীগর্ভে। মানুষজন নিজেদের পিতৃপুরুষের ভিটেবাড়ি ছেড়ে যে যেখানে পেরেছে সরে গেছে। এপার ভাঙলেও নদীর ওপারে চর জেগেছে। কিন্তু সেখানে গিয়ে জায়গা দখল করার সময়, শক্তি, সামর্থ কিছুই নেই গ্রামবাসীর। নদী পার হয়ে ওপারে যাওয়া, জায়গা দখল করা, চাষবাস করা, নতুন করে ভিটেবাড়ি তোলার চেয়ে এপারেই কোথাও মাথা গোঁজার একটুখানি ঠাঁই পেলেই মানুষগুলো খুশি। যাদের ঘরবাড়ি গেছে তারা নতুন কোন জায়গায় থিতু হয়েছে। কিন্তু যারা এখনও আছে, তারা প্রতি মুহূর্ত পার করছে আশঙ্ক্ষায়। কখন শঙ্খ নদীর ভয়াল ছোবলে সবকিছু হারিয়ে তারা নিঃস্ব হয়ে যায়!
ইমাম সাহেবের কথা শুনে তাই সহসা কেউ কিছু বলতে পারে না। মনের ভেতর ঠিকই তোলপাড় চলছে। এদের মধ্যে ইসমাইল একটু চঞ্চল আর মেজাজী স্বভাবের। সে বলে উঠল, “আঁরার গরনের কী আছে ইমাম সাব? নদী ভাঙনের আছে ভাঙিব। আঁরা তো আর নদীর আঁত ঠ্যাং বাঁধি রাহিন্নফাইজ্জুম।”
তখন কেউ একজন বলে উঠে, “তো-ই কি ছাই ছাই টঁসা ছাইতাম? ক্যান গরি আঁরার বাফদিন্না বাড়িঘর, মসজিদ বেগ্গিন ফানিত তলে যারগই ইয়ান ছাই থাইকতাম?”
ইসমাইল কথাটা শুনে রেগে গিয়ে কিছু বলতে চায় তখনই তার হাত ধরে ফেলে ওসমান সাহেব। ইশারা করে চুপ থাকার জন্য। তারপর নিজেই বলে,
“নদীভাঙন ঠিয়াইবেল্লাই সরহারর হাছে দরখাস্ত দিয়ে ফাললার? আঁরা বেগ্গুনে সাইন গজ্জিলাম দে ন? হাম ইয়ানর কী হবর?”
তখন কথা বললেন মাহবুব মাস্টার, “চাচা দরহাস্ত জমা দিই আইস্যি আঁই। কিন্তু ইন বোঁত সময় লাগিবু। হয়েক জাগা ঘুরি ঘুরি যাইব ফানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ত। এয়ার ফরে সরহার হনো ব্যবস্থা লইলে লইবু।”
ইসমাইল চুপ করে থাকলেও অন্য একজন তাচ্ছিল্য করে বলে উঠে, “কী ব্যবস্থা লইবু আর। ফাত্তর হদিন আনিয়েরে ফেলাই দিবু। আগেও দেক্কিদি ননে? ত-ত ভাঙের।”
এমন আরও অনেক আলোচনা হয়। কিন্তু কোনটাই ফলপ্রসূ নয়। অবশেষে ইমাম সাহেব সকলের সম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নিলেন, আপাতত মসজিদ অন্যত্র স্থানান্তর করতে হবে। এই মুহূর্তে সবাই যেখানে দাঁড়িয়ে আছেন সপ্তাহ খানেকের মধ্যে এই জায়গাটা হয়তো পানির নিচে থাকবে। কিন্তু নামায পড়া তো আর বন্ধ করা যাবে না। তাই ঠিক হলো রশিদ মিঞার বাড়ির পাশে তার খালি জমিটাতে অস্থায়ী মসজিদ তৈরি করা হবে। সে জায়গাটা নদী পাড় থেকে বেশ দূরেই আছে। রশিদ মিঞা খুশিই হলো মনে মনে। তার জায়গাটা মসজিদের জন্য ব্যবহার হচ্ছে, এর বিনিময়ে আল্লাহ খুশি হয়ে তার জন্য জান্নাত নির্ধারণ করে দিবেন, এই বিশ্বাসটা তার মনের মধ্যে গেঁথে আছে।
ওসমান সাহেবের পুরনো দিনের অভ্যাস, রাতে খাওয়া-দাওয়ার পর পরিবারের সবার সাথে বসে কিছু সময় কথাবার্তা বলা। শাহনূর কল্কেতে তামাক সাজিয়ে শ্বশুরের সামনে রেখেছে। তারপর এঁটো বাসনপত্র নিয়ে কলপাড়ে চলে গেছে। ঘরের ভেতর একেবারে শেষপ্রান্তে টিউবয়েল বসিয়েছে তার শ্বশুর। এই পাড়ায় শুধু তাদের ঘরের মধ্যে টিউবয়য়েল আছে। অন্য বাড়িতে টিউবয়য়েল বাইরে অথবা পুকুরপাড়ে গিয়ে কাজ করতে হয় বৌ-ঝিদের। ঘরের বউ বাইরে গিয়ে বাসনকোসন মাজবে এটা ওসমান সাহেবের পছন্দ নয়।
খাদিজা বেগম পানের বাটা থেকে একটা পান নিয়ে মুখে পুড়লেন। আয়েশ করে পানখানা চিবিয়ে রস বের করে গিলে ফেললেন। পানের অবশিষ্টাংশ মুখের একপাশে রেখে ওসমান সাহেবকে জিজ্ঞেস করলেন, “ইমাম সাব কী হইয়্যেদে অনরারে?”
মুখ থেকে একরাশ ধোঁয়া ছেড়ে ওসমান সাহেব বললেন, “মসজিদ সরাই ফেলন ফরিবু। দইজ্যা এব্বেরে মসজিদর হাঁসাত আই গেইয়্যে। হন সমত ফানিত তলে যা-গই আল্লাহ জানে।”
খাদিজা বেগম অস্ফুট স্বরে বলে উঠেন, “ইয়া আল্লাহ! দইজ্যা এত হাছে আই গেইয়্যে দে!” কথাটা তার কিছুতেই বিশ্বাস হয় না। শঙ্খ নদী ভাঙছে অনেক বছর ধরে। তাই বলে একেবারে ঘরের দুয়ারে চলে এসেছে এটা বিশ্বাস করা খাদিজা বেগমের জন্য কষ্টেরই বটে। তিনি বউ মানুষ, নিজের ভিটের বাইরে আশেপাশে ঘোরাঘুরি করাটা তার সাজে না। বিয়ের প্রায় ত্রিশ বছর হচ্ছে কখনও সদর দরজার বাইরে মাথা গলিয়ে উঁকি-ঝুঁকি দেননি। খুব প্রয়োজন ছাড়া আশেপাশে দু’পা মাড়াননি। এটা তার শাশুড়ির শিক্ষা। এখনও মনে আছে এই বাড়িতে বউ হয়ে যেদিন এলেন, তার শাশুড়ি বলে দিয়েছিলেন, “ও বউ, উনো। বউ বউয়ের মত থাহিবা। পাড়া বেড়ানি হাইছ্যত এগিন আঁরা দেইন ন ফারি।” এই শিক্ষা তিনি মনে রেখেছেন। তারপর বড় ছেলের বউ শাহনূরকেও দিয়েছেন।
তাই তিনি বা শাহনূর কেউই নিজের বাড়ির কয়েক হাত দূরের খবর জানেন না। যখন খাদিজা বেগমের দুই মেয়ে রাহেলা আর ফাতিমা ছোট ছিল তাদের কাছ থেকে টুকটাক খবর পেতেন। বউরা ঘরের বাইরে যেতে পারে না। কিন্তু মেয়েরা প্রয়োজনে যেতে পারে। আর ছোট মেয়েদের ক্ষেত্রে বিধি নিষেধগুলো কিছুটা শিথিল। দু’বছরের ব্যবধানে রাহেলা আর ফাতিমার বিয়ে দিয়েছেন। বড় ছেলে মোহাম্মদ শফী শহরের মসজিদের ইমাম। সপ্তাহ খানেক পর পর দু’একদিনের জন্য বাড়ি আসে। আর দুই ছেলে মিজান ও মিনারকে পাঠিয়ে দিয়েছেন দূরের পটিয়া মাদ্রাসায়। আব্দুল্লাহ আগে পাড়া চষে বেড়াতো। তারপর ঘরে ফিরে দাদীর কাছে সারাদিনের গল্প করতো। ইদানিং সেও কেমন চুপচাপ হয়ে গেছে। তাই আশেপাশের কোন বউ-ঝিঁ এ বাড়িতে…
[আগামী পর্বে সমাপ্য]
