মিজান বিন তাহের, বাঁশখালী টাইমস: মসজিদে আরবী খুৎবা-পূর্ব বাংলা আলোচনাকালে সুদ-মদ ও জুয়া বিরোধী কথা বলায় চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার সরল ইউনিয়নের পশ্চিম মিনজিরতলা ঘোনাপাড়া এলাকার বায়তুন নুর জামে মসজিদের ইমামকে প্রকাশ্যে পিটিয়েছে স্থানীয় এক সুদখোর ও বখাটে যুবক।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিগত কিছু দিন পূর্বে জুমার নামাজ সুদ, জুয়া, মদ,নপিতা মাতার গুরুত্ব, বড়দের শ্রদ্ধা সম্মান ও ছোটদের স্নেহসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা ও বয়ান হয়। পরবর্তীতে এ নিয়ে ওই বখাটে সুদখোর যুবকের সাথে ইমামের তর্কাতর্কি হয়। এক পর্যায়ে ইমামকে হত্যা ও মারধর করার হুমকি প্রদান করে । এ ঘটনায় উক্ত ইমাম নিজের জীবনের নিরাপত্তার চিন্তা করে বাঁশখালী থানায় সাধারণ ডায়েরি করে। এতে ওই যুবক আরো ক্ষিপ্ত হয়ে যায়।
ওই মসজিদের উঠানে পবিত্র জুমার নামাজ বয়ান শেষে একটু তর্কাতর্কি হয়। পরবর্তীতে এরই পরিপ্রেক্ষিতে সন্ধ্যায় মাগরিবের নামাজের পর মসজিদ থেকে বের হয়ে পশ্চিম দিকে বেড়িবাঁধ এলাকায় দোকানের দিকে রওয়ানা হয়। কিছু দূর যাওয়ার পর তাকে পথরোধ করে হামলা চালায় স্থানীয় নজরুল ইসলামের ছেলে জসিম উদ্দিন । এ সময় স্থানীয়রা দ্রুত গতিতে এগিয়ে আসলে হামলাকারী জসিম পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে তার চোখ ও কপাল ফেঁটে রক্তাক্ত অবস্থায় বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হলে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
হামলার শিকার ইমামের নাম মাওলানা আবুল কাশেম । তিনি দীর্ঘ দিন যাবৎ পশ্চিম মিনজিরতলা ঘোনাপাড়া এলাকার বায়তুন নুর জামে মসজিদের ইমাম ও খতিবের দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
ভুক্তভোগী ইমাম ও খতিব আবুল কাশেম স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, শুক্রবার পবিত্র জুমায় আরবী খুৎবার আগে বাংলায় আলোচনাকালে সুদ, মদ ও জুয়া বিরোধী বক্তব্য প্রদান করি। একইভাবে সুদ, হারাম, হালাল ও বেনামাজীদের বিষয়ও আলোচনায় আসে। কিন্তু এসব বক্তব্য করায় তার উপর সে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। তিনি আরো জানান, মাগরিবের নামাজ শেষ করে মসজিদ থেকে বের হলে অতর্কিতভাবে মসজিদ থেকে কিছু দূর পযর্ন্ত গেলে আমাকে বেদম প্রহার শুরু করে। এ সময় প্রত্যক্ষদর্শী লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে।
উক্ত বায়তুন নুর জামে মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা মৃত আহমদ ছফার পুত্র মোঃ ইব্রাহীম ও স্থানীয় এলাকাবাসীদের সাথে সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কথা বলে জানা যায়, ইমাম সাহেবের সাথে তার কথা কাটাকাটি হয়। এ নিয়ে থানায় জিডি হয়েছে, যার কারণে সে ক্ষিপ্ত হয়ে ইমাম সাহেবকে হামলা করেছে।
বাঁশখালী উলামা পরিষদ’র সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা কাজী মনছুরুল হক বলেন, উলামা পরিষদ’র পক্ষ থেকে আমরা নির্যাতিত ঐ আলেমের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করি এবং তাদেরকে প্রাথমিক সহযোগিতা ও চিকিৎসা এবং আইনগত অন্যান্য প্রয়োজনীয় বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দিই। এই ঘটনাটি শুনে আমরা খুবই মর্মাহত। একজন হক্কানি আলেমের গায়ে হাত তোলা কখনও আলেম সমাজ মেনে নিবে না। কোনো মসজিদ, মাদরাসা বা আলেম, উলামাদের উপর কোনো অন্যায়-অবিচার হয়, তাহলে অতীতের মত ভবিষ্যতেও আমরা এগিয়ে আসবো এবং আমাদের সাধ্যমতে আমরা সার্বিকভাবে সহযোগিতা করতে দৃঢ় প্রস্তুতি নিয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবো ইনশাআল্লাহ্।
বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ কামাল উদ্দিন জানান, এ সংক্রান্ত কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি, অভিযোগ হাতে পেলে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।