শিঁকড়ের জমজমাট ঈদ পূনর্মিলনি ও প্রীতি ফুটবল ম্যাচ

ঈদের ২য় দিন সকাল থেকে বিদ্যালয় মাঠে প্রীতি ফুটবল আয়োজনের খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় সবার মাঝে কৌতুহল ছড়িয়ে পড়ে। সে কৌতুহল পূরনে নির্ধারিত সময়ের আগে মাঠ দর্শকপূর্ন হয়ে যায়। প্যানেল চেয়ারম্যান জামাল যখন জার্সিটা নিজের গায়ে পড়ছিল তখন সবার মাঝে প্রশ্ন কী হতে যাচ্ছে?? যার খেলা পরিচালনা করার কথা সে নিজেই খেলোয়াড়! দেখা যাক কি হয়।
সুশৃংখল সারিবদ্ধভাবে মাঠে নেমে রেফারির হুইশেলে খেলা শুরু হলে সবাই সেই স্কুল জীবনে ক্লাস ফাঁকি দিয়ে খেলার সময়ে ফিরে যায়। কারণ আজকের খেলার সবাই বৈলছড়ী নজমুন্নেছা উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০০৭ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী ব্যাচ। ঐ সময় আর এখনের মাঝে বয়স, মেদ-ভূড়ির পার্থক্য কিন্তু মাঠে যেন তার কোন লক্ষণই নেই। সবার শর্ট পাস, লং পাসে পরিচ্ছন্ন ফুটবল ম্যাচ দর্শকরা মুগ্ধ হয়ে চেয়ে থাকে। ম্যাচের শুরুতে ওয়াজিদের দুর্দান্ত গোলে বিজ্ঞান-মানবিক বিভাগ এগিয়ে গেলে প্রত্যাশার চুড়ায় থাকা বাণিজ্য বিভাগের লোকমানের মনে ধাক্কা লাগে।আক্রমনের গতি বাড়িয়ে দিলে সাইফুল, ফরহাদ, আনোয়ার সফলতার সাথে মোকাবেলা করে তাও যে কয়েকটা বল মিস হচ্ছিল তা বিজ্ঞান বিভাগের গোল রক্ষক পংকজ তার সুনিপুণ হাত বন্দি করছিল। তার মাঝে মাঝে বিজ্ঞান-মানবিকের বিভাগের মিনহাজ, ডা:সওগাত, নাজিমরা যখন বাণিজ্য বিভাগের গোলপোস্টে আক্রমন করছিল তখন আজিজ তার স্বভাব চরিত ভাবেই মোকাবেলা করছিল। আরেফিনের ড্রিবলিং, ডা : আসিফের দুর্দান্ত হ্যাড, রাকিবের পাস, ফাহিম সোলতানের বল নিয়ে বিপক্ষ দলের ডিফেন্সে ঢুকে যাওয়া সব কিছুর ক্ষুরধার একটু ও কমেনি। ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে লোকমানের দূর্দান্ত শটে ম্যাচে সমতা ফিরে আসলে বাণিজ্য বিভাগের রানা, ফখরুদ্দীন, রুবেল, সুমন, ওয়াজিদ, বিজয়, গিয়াস, রিয়াজ, মিজান, নয়নদের স্বস্তি ফিরব আসে। ঐদিকে দ্বাদশ খেলোয়াড় হিসেবে থাকা কাশেমও বাদ যেতে চায়না এ আয়োজন থেকে তাই নিজেই মাঠে নেমে পড়ে। নির্ধারিত সময়ে অমিমাংসিত ম্যাচ কি হবে???
সবার প্রশ্নের উত্তর দিতে ট্রাইবেকারের সিদ্ধান্ত দেয় ম্যানেজারের দায়িত্বে থাকা আজিমও আরিফ। অবশেষে ট্রাইবেকার যখন ১০ম প্রচেষ্টায় গড়ায় দর্শক রা অধীর আগ্রহের খেলার ফলাফলের প্রত্যাশায় অস্থির ঠিক তখনই মাসুদের দুর্দান্ত গোলে ট্রাইবেকারে বানিজ্য বিভাগের জয় নিশ্চিত হয়। অপর টিম পরাজয়ের জন্য মন খারাপ করলেও একটু পরে জয়ী দলের সাথে আনন্দে মেতে উঠে।
বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান শিক্ষক সঞ্জিব বড়ুয়া সবাইকে ট্রফি তুলে দিলে ট্রফি নিয়ে দুদলের উল্লাসে মেতে উঠে সবাই।কেউ কেউ সে মুহুর্ত্বকে সেলফি বন্দি করতেও ভুলে না। সবশেষে জামালের বাড়ীতে ভূড়িভোজ আয়োজনকে আরো প্রাণবন্ত করে তোলে। ফেরার সময় সবার মনে একটাই আকুতি, বন্ধু সময়গুলো এভাবেই কাটলে ক্ষতি কি????

লেখক:
ডা: সওগাত উল ফেরদাউস
এমবিবিএস
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

Spread the love

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *