বাঁশখালী টাইমস: ভারতে যেসব বিবেকবান মানুষ প্রতিবাদে নেমেছে তাদের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করা উচিত এদেশের ক্ষমতাসীনরা দিল্লির আজ্ঞাবহ এবং চরিত্রগতভাবে ফ্যাসিষ্ট বিরোধী রাজনৈতিক দল সমূহের নির্লিপ্ততায় বাংলাদেশের নব্বই শতাংশ মুসলিম জনগোষ্ঠী হতাশ ও ব্যথিত হয়েছে।
সুশীলদের (?) বিবেচনায় মুসলমানকে হত্যা করলে সেটি অপরাধ নয়, সহিংস সাম্প্রদায়িকতাও নয়
ভারতের মুসলমানদের হত্যা দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছে নরেন্দ্র মোদীর গো-রক্ষা কমিটির গুন্ডা বাহিনী
হিন্দুত্ববাদী শাসক শ্রেনীর অব্যাহত সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রেক্ষাপটে ইসলাম ফোবিয়ায় আক্রান্ত পশ্চিমা
রাষ্ট্রসমূহের দ্বিমূখি ভূমিকার নিন্দা জানানো হয়।
বিশেষ প্রতিনিধি (ঢাকা)
বাংলাদেশের প্রতিবেশী হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্র ভারতে গো-রক্ষা কর্মসূচির নামে সংখ্যা লগু মুসলমান এবং দলিতদের ভয়ঙ্কর নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মাহমুদুর রহমান বলেন, কথিত হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্র ভারতে সংখ্যা লগু মুসলিম জনগোষ্ঠী এবং নি¤œবর্ণের দলিত শ্রেনী বরাবরই অপমান, বঞ্চনা, নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞের শিকার হয়েছেন। ২০০২ সালে ইতিহাসের অন্যতম নৃশংস গুজরাট দাঙ্গায় হাজার হাজার মুসলমান নারী, পুরুষ, শিশু হত্যায় নেতৃত্বদানকারী তৎকালীন মূখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২০১৪ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে বিশেষত: মুসলমানদের জান ও মালের কোন নিরাপত্তা সে দেশে নাই। সাম্প্রতিক সময়ে হিন্দুত্ববাদের জোয়ারে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে যোগী আদিত্যনাথের মত চরম মুসলিম বিদ্বেষী আর এস এস (রাষ্ট্রীয় সেবক সঙ্গ) নেতারা মূখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হয়ে মুসলমান নিধনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। ওয়াশিংটনে গো-মাংস আহারকারী মার্কিণ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে বারংবার উঞ্চ আলিঙ্গন করে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী মোদী স্বদেশে প্রত্যাবর্তনের পর মুসলমানদের উপর সাম্প্রদায়িত সহিংস আক্রমনের ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। খোদ ভারতেই হিন্দুত্ববাদের চন্ডরুপের বিরুদ্ধে বিবেকবান মানুষেরা সোচ্চার হয়ে উঠেছেন। তিনি বলেন বিভিন্ন শ্লোগান দিয়ে মার্কিনীদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ভারতীয় নাগরিকবৃন্দ সেবক সঙ্ঘের হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে পথে নেমেছেন। এই বিবেকবান ভারতীয়দের প্রতি তিনি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, তাদের প্রতিবাদ কর্মসূচির প্রতি সকলের একাত্মতা ঘোষণা করা উচিত।
গতকাল সকাল থেকে অনেক নাটকীয়তার পর সরকার এই সংবাদ সম্মেলন করার অনুমতি দেয়। ঢাকার সেগুন বাগিচায় অবস্থিত ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে সকাল ১১টায় সংবাদ সম্মেলনের জন্য সময় নির্ধারিত ছিল। কিন্তু সকালে ডিবি পুলিশ এসে মাহমুদুর রহমানের বাড়ি ঘেরাও করে। সঙ্গে পোশাকধারী পুলিশের আনাগোনাও ছিল। ডিবি পুলিশ মাহমুদুর রহমানের গুলশানের বাসার নিচে অবস্থান নেয় এবং তিনি যাবে বাসা থেকে বের না হতে পারেন সেই নির্দেশনা দেয়। এক পর্যায়ে মাহমুদুর রহমানের গাড়ির ড্রাইভারকে গাড়ি বের না করার জন্য হুকুম দেয় বিডির কর্তা ব্যক্তিরা। এই খবর পেয়ে মাহমুদুর রহমান দ্রুত চার তলার বাসা থেকে বের হয়ে নিচে নেমে আসেন। তিনি ডিবি পুলিশের কাছে জানতে চায় কেন তাঁকে বাড়ি থেকে বের হতে দেওয়া হবে না। তিনি এও জানতে চান খোদ ইন্ডিয়ায় বিভিন্ন রাজ্যে এনিয়ে প্রতিবাদ হচ্ছে। বাংলাদেশ কি ইন্ডিয়ার অঙ্গরাজ্যের চেয়েও বেশি তাবেদার হয়ে গেছে? তখন ডিবি পুলিশের উপস্থিত কর্তারা বলেন, তারা উপরের হুকুম পালন করতে এসেছেন। এতে সংবাদ সম্মেলন নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয় সকাল থেকেই। বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেল ও প্রিন্ট মিডিয়ার সংবাদ কর্মীরাও তখন ছুটে আসেন গুলশানে মাহমুদুর রহমানের বাড়ির সামনে।
এদিকে মাহমুদুর রহমানের অগণিত ভক্তরা উৎকন্ঠার মধ্যে সময় কাটাতে থাকে। তাঁর শুভানুধ্যায়ীরাও বাড়ির সামনে এসে খোজ খবর নিতে থাকে। ১১টার পর তাঁকে জানানো সংবাদ সম্মেলন করা যাবে। নিষেধাজ্ঞা উঠে গেছে। দ্রুত সংবাদ সম্মেলনের জন্য সময় নির্ধারন করা হয় বেলা ১টা। পূর্ব নির্ধারিত স্থানেই বেলা ১টায় সংবাদ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে মাহমুদুর রহমান বলেন, ভারতীয় সংখ্যালঘু মুসলমানদের উপর চলমান নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় একজন বিবেক সম্পন্ন মানুষ, মুসলমান ধর্মাবলম্বী এবং সংবাদ মাধ্যম ও মানবাধিকার কর্মী হিসেবে আমরা নি:শ্চুপ থাকতে পারি না। তিনি উল্লেখ করেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে, বাংলাদেশের কোন মহল থেকে এখন পর্যন্ত এখন পর্যন্ত হিন্দুত্ববাদী শাসক শ্রেনী কতৃক মুসলমান নিধনযজ্ঞের বিরুদ্ধে কোন প্রতিবাদ উচ্চারিত হয়নি। এদেশের ক্ষমতাসীনরা দিল্লির আজ্ঞাবহ এবং চরিত্রগতভাবে ফ্যাসিষ্ট। কাজেই তাদের কাছ থেকে ভারতীয় মুসলমানদের উপর পরিচালিত নির্যাতনের প্রতিবাদ আশা করাটাই অমূলক। কিন্তু, বিরোধী রাজনৈতিক দল সমূহের নির্লিপ্ততায় বাংলাদেশের নব্বই শতাংশ মুসলিম জনগোষ্ঠী হতাশ ও ব্যথিত হয়েছে। দিল্লির আশির্বাদে ক্ষমতায় আসীন হওয়ার প্রতিযোগিতা থেকেই রাজনীতিকরা এই দেওলিয়া আচরণ করছেন। ইসলামের নাম ব্যবহার করে যে সকল দল বাংলাদেশে রাজনীতি করেন অথবা নানারকম সংগঠনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তাদের ভুমিকাও দিল্লির সজ্জন সরকার থেকে পৃথক নয়। যে ব্যক্তি বা সংগঠন ইসলামের আদর্শের কথা বলেন, তাদের অবশ্যই বিশ্বের যে কোন স্থানে নিপীড়িত মুসলিম উম্মাহ‘র সমর্থনে দৃঢ় অবস্থান গ্রহন করতে হবে। তিনি বলেন, এক সময় এদেশে জুম্মা এবং ঈদের নামাজের দোয়ায় প্যালেস্টাইন ও কাশ্মিরের মুসলমানদের মুক্তির জন্য মাহন আল্লাহ তায়ালার দরবারে মুনাজাত করা হতো। এখন কোন কোন দোয়ায় ফিলিস্তিন ও মিয়ানমারের মুসলমানদের কথা উল্লেখ করা হলেও আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার লাভের জন্য সত্তর বছর ধরে লড়াইরত কাশ্মিরের সেই দোয়ায় উপেক্ষিত থেকে যান। দিল্লির আশির্বাদপুষ্ট দখলদার সরকারের পীড়ন নীতির ফলে বাংলাদেশের আলেম সমাজও ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছেন।
মাহমুদুর রহমান তাঁর লিখিত বক্তব্যে আরো বলেন, বাংলাদেশের সশীল (?) সমাজ স্যাকুলারিজমের ছদ্মাবরণে এই ইসলাম বিদ্বেষী গোষ্ঠী সম্প্রতি গ্রীক পৌরানিক দেবী থেমিসের মূর্তি সুপ্রিমকোর্ট চত্ত্বরে স্থাপনের জন্য রীতিমত যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। এদের এক নেত্রী যিনি মুসলমান পরিবারে জন্মগ্রহন করে হিন্দু ভ্রাহ্মণের স্ত্রী হয়েছেন, ওই নেত্রী দেবী থেমিসের স্থাপন না করলে উচ্চ আদালত প্রাঙ্গন থেকে মসজিদ উঠিয়ে দেয়ার দাবী জানিয়ে বিতর্কিত হয়েছেন। নব্বই শতাংশ মুসলমান নাগরিকের দেশে পৌত্তলিক মূর্তি স্থাপনের জন্য যে কথিত স্যাকুলার শ্রেনী আন্দোলন করেন, তারা পার্শ্ববর্তী দেশে সংখ্যালগুদের রাস্তায় পিটিয়ে হত্যা করলেও নীরব থাকেন। তাদের নীরবতার কারন হলো, যে বা যিনি নিহত হচ্ছেন তিনি একজন মুসলমান। সুশীলদের (?) বিবেচনায় মুসলমানকে হত্যা করলে সেটি অপরাধ নয়, সহিংস সাম্প্রদায়িকতাও নয়। কারন তাদের মতে মুসলমানকে পিটিয়ে মারলে বা মুসলমান আক্রান্ত হলে সেখানে মানবাধিকার খর্ব হয় না! এই কারনেই (আপনাদের কারো কারো হয়ত: মনে আছে) ২০১২ সালে আমি লিখেছিলাম মুসলমানের মানবাধিকার থাকতে নেই। তিনি বলেন, ভারতের মুসলমানদের হত্যা দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছে নরেন্দ্র মোদীর গো-রক্ষা কমিটির গুন্ডা বাহিনী। আবার বাংলাদেশের মুসলমানদের হত্যার দায়িত্ব নিয়েছেন ভারতীয় বিএসএফ। কারন ভারতীয় বিএসফ প্রতিনিয়ত আমাদের সীমান্তে বাংলাদেশীদের নির্মমভাবে গুলি করে মারছে। এমনকি পবিত্র ঈদের দিন দু‘জন কিশোরকে গুলি করে মারা হয়েছে। এখনো আমাদের চোখের সামনে সীমান্তের কাঁটাতারে ফেলানীর ঝুলন্ত লাশ ভেসে উঠে। মাহমুদুর রহমান বলেন, ভারতের হিন্দুত্ববাদী শাসক শ্রেনীর অব্যাহত সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রেক্ষাপটে ইসলাম ফোবিয়ায় আক্রান্ত পশ্চিমা রাষ্ট্রসমূহের দ্বিমূখি ভূমিকারও আমরা নিন্দা জানাই। ওয়াশিংটনে মোদ-ট্রাম্প আলোচনায় ভারতে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা প্রদানের বিষয় স্থান পায়নি। অবশ্য মার্কিণ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাঁর প্রবল মুসলিম বিদ্বেষ নিয়ে কোন রাখ-ঢাক করেন না। মার্কিণ প্রেসিডেন্ট পদের নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি মুসলমানদের বিরুদ্ধে যে প্রবল ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছিলেন সে গুলো একে একে এখন বাস্তবায়ন করছেন। সুতরাং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অন্তত: দ্বিমূখি আচরণের অভিযোগ তোলা যাবে না। মানবাধিকার নিয়েও তাঁর কোন মাথাব্যর্থা নেই। তিনিই একমাত্র মার্কিন প্রেসিডেন্ট যে কি না প্রকাশ্যে হিম্মত করে পুলিশ অথবা সেনা হেফাজতে নির্যাতনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। মার্কিণ দখলদার বাহিনী ভিয়েতনাম, ইরাক এবং আফগানিস্তানে বন্দীদের উপর নানারকম নির্যাতন চালিয়েছে। কথিত ইসলামী জঙ্গীদের বিরুদ্ধে গুয়ানতানামো বে’র সামরিক নিয়ন্ত্রিত কারাগারে মার্কিনী বাহিনী কতৃক নির্যাতনের নির্মম কাহিনী বিশ্ববাসী জানেন। তবে ট্রাম্পের আগে কোন মার্কিণ প্রেসিডেন্ট নির্যাতনের ব্যাপারটি স্বীকার করতে চাননি।
মাহমুদুর রহমান বলেন, মানবাধিকারের ব্যাপারে ইউরোপীয় দেশ গুলোই সচরাচর অধিকতর সোচ্চার থাকে। তবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার যদি মুসলমান হয়, তাহলে দৃষ্টি অন্যদিকে ঘুরিয়ে রাখতেও এরা সিদ্ধহস্ত। ১৯৯৫ সালে বসনিয়ার স্ত্রেত্রিনিকায় জাতিসংঘের ডাচ শান্তিরক্ষ্মী বাহিনী ‘নিরাপদ অবস্থানস্থলে’ (ঝধভব ধৎবধ) আশ্রয় নেয়া হাজার হাজার মুসলমান নারী নারী, পুরুষ শিশুকে খৃষ্টান সার্বীয় বাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছিল। রাডকো ম্লাদিদের খুনী সদস্যা ৮ হাজারের অধিক, বালক ও শিশুকে হত্যা করেছিল। যা শ্লোভকিয়া গণহত্যা নামে কুখ্যাত। এহেন ইউরোপীয় রাষ্ট্রসমূহ ভারতে সংখ্যালঘু মুসলমানদের হত্যা নিয়ে যে নিরব থাকবে সেটাই প্রত্যাশিত। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার ফ্যাসিষ্ট শাসনামলে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রাদায় ক্ষমতার প্রবল এবং অন্যতম অংশীদার। তা সত্বেও এদেশে কোথায়ও বিচ্ছিন্ন কোন সাম্প্রদায়িক ঘটনা ঘটলে পশ্চিমা রাজনীতিকরা নিন্দায় সরব হয়ে উঠেন। ভারতে প্রতিদিন প্রকাশ্যে রাস্তায় পিটিয়ে সংখ্যালঘু মুসলমান হত্যা করা হলেও ঢাকার অথবা দিল্লিতে কর্মরত পশ্চিমা কুটনীতিকদের একটি শব্দ উচ্চারণ করতেও শোনা যায় না। মাহমুদুর রহমান বলেন, এদেশে হিন্দু সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর স্থানীয় অভিভাবকের ভুমিকায় ভারতীয় হাইকমিশনের কর্তাব্যক্তিদের সর্বদাই অবতীর্ণ হতে দেখা যায়। বাংলাদেশে কোন হিন্দু নাগরিক স্থানীয় গোলযোগে নিহত অথবা আহত হলেও ভারতীয় হাইকমিশনের লোকজন অকুস্থলে ছুটে চলে যান। বাংলাদেশ সরকারের কাছে প্রশ্ন রেখে মাহমুদুর রহমান বলেন, ভারতে নিত্যকায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় নিহত কয়জন সংখ্যালঘু মুসলমানের পরিবারের সঙ্গে দিল্লির বাংলাদেশ হাইকমিশনের কর্মকর্তারা দেখা করেছেন? তাদের সমবেদনা জানিয়েছেন? ভারতীয় মুসলমানদের হত্যায় দায়িত্ব নিয়েছে প্রধানমন্ত্রী মোদীর দলের গো-রক্ষক বাহিনী। এদিকে বাংলাদেশে সীমান্ত অঞ্চলে এদেশের মুসলমান নাগরিকদের হত্যার দায়িত্ব নিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষ্মী বাহিনী, বিএসএফ। চমৎকারভাবে সীমান্তের দুই পরে মুসলমান জনসংখ্যা কমানো হচ্ছে। কিছুদিন আগে বাংলাদেশ সরকার এক পরিসংখ্যানে জানিয়েছে যে বাংলাদেশে নাকি হিন্দু জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এই সংবাদের বিষ্মিত হয়ে ভেবেছিলাম, তা যে কি করে সম্ভব? তিনি মুসলিম হত্যা বন্ধে প্রতিরোধের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ভারত এবং বাংলাদেশে মুসলমান নিধনের ঘটনায় অনুমিত হচ্ছে যে উভয় রাষ্ট্রের সরকার এই অঞ্চলে হয়তো হিন্দু মুসলমান জনসংখ্যার ভারসাম্য পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে যৌথভাবে করছে। আমি নিপীড়িত মুসলিম জনগোষ্ঠীকে জেগে উঠার এবং ঐক্যবদ্ধভাবে জালিম শাসকদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের আহ্বান জানাচ্ছি।
মাহমুদুর রহমান বলেন, ধারনা করে নিতে অসুবিধা নেই যে, আমার বক্তব্য বাংলাদেশের মিডিয়ায় প্রচারিত হবে না। স্বাধীন চতুর্থ স্থম্ভের আদর্শ এদেশ থেকে এক এগারোর অভ্যুত্থানের সাথেই বিদায় নিয়েছে। স্বাধীনভাবে মিডিয়া চালানোর জন্য আমরা কয়েকজন সাধ্যমত লড়াই করেছি। ফ্যাসিষ্ট রাষ্ট্র তার সর্বশক্তি দিয়ে আমাদেরকে আঘাত করেছে। বর্তমান মিডিয়া ইসলাম বিদ্বেষী ও সুবিধাবাদী মালিক সাংবাদিকদের দখলে। তবু মিডিয়াকে সামনে রেখেই আজকের প্রতিবাদী সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করেছি। এ দেশে সবাই দিল্লীর ভয়ে কাতর, আমরা কয়জন অন্তত: ভারতে নির্যাতিত মুসলমানদের পাশে নৈতিক সমর্থন নিয়ে দাড়ালাম। তিনি বলেন, হিন্দুত্ববাদী বৈরী রাষ্ট্রের অত্যাচারিত মুসলিম ভাইয়ে এটুকু অন্তত জানবেন যে, বাংলাদেশ থেকে বিবেক এবং উম্মাহ’র প্রতি ভালবাসা এখনো পুরোপুরি নির্বাসিত হয়নি। দলমত এবং জাতিধর্ম নির্বিশেষে সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মাহমুদুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের সকল নাগরিকদের ও মানবতা বিরোধী হিন্দুত্ববাদী ভারতীয় শাসক শ্রেনীর জুলুম ও আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে সাম্প্রদায়িক শাসক এবং তাদের এদেশীয় তাবেদারদের বিরুদ্ধে হোচ্চার হতে হবে। লিখিত বক্তব্যের শেষ প্রান্তে তিনি প্রত্যাশা ব্যক্ত করে বলেন, আমরা আশাবাদী যেহেতু ভারতেও নাগরিক সমাজ বলতে শুরু করেছে যে, ভারতের বৃহত্তর জনগোষ্ঠী সম্মিলিতভাবে পরাভূত করবে। সেই লড়াইয়ে আমরাও আমাদের সাথী দুই দেশের শুভবুদ্ধি সম্পন্ন লড়াকু জনতার ঐক্য ‘ইনশাল্লাহ’ দিল্লি এবং ঢাকার ফ্যাসিবাদকে পরাভূত করবে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, রাষ্ট্রচিন্তক ও দার্শনিক কবি ফরহাদ মজহার, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক রুহুল আমি গাজী, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কবি আবদুল হাই শিকদার, বাংলাদেশ জাতীয়তবাদী দল-এর বিজ্ঞান ও প্রযুুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার রিয়াজুল ইসলাম প্রমূখ।
সূত্র: rbn24.co.uk