আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনীর হাতে প্রায় অর্ধশত নারী ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন। শুক্রবার বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
এই তথ্য মতে, রাখাইন রাজ্যের উ শে কিয়া গ্রামের আট নারী গত সপ্তাহে সেনাবাহিনীর হাতে ধর্ষিত হওয়ার বিবরণ দিয়েছেন। তারা জানিয়েছেন, মিয়ানমারের সেনারা তাদের ঘরবাড়িতে তল্লাশি চালানোর সময়ে ব্যাপক লুটপাট চালিয়েছে এবং তাদেরকে বন্দুকের মুখে ধর্ষণ করেছে। চলতি মাসের প্রথমদিকে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে অবস্থিত মংডুর পুলিশ চৌকিতে হামলার পর সেনা মোতায়েন করে মিয়ানমার সরকার। অবশ্য এ সব হামলার জন্য রোহিঙ্গা মুসলমানদের অভিযুক্ত করেছিল মিয়ানমার সরকার।
বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, তারা কারাগারে থাকা তিন নারীর সঙ্গে এবং টেলিফোনে আরো পাঁচ নারীর সঙ্গে কথা বলেছে। এ-ছাড়া মানবাধিকার গ্রুপ ও স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছে। তবে স্বাধীন কোনো সূত্র থেকে ওই সব নারীদের দাবির সত্যতা নিশ্চিত করা যায়নি। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গত ১৯ অক্টোবর উ শে কিয়া গ্রামে ১৫০ জন সেনা অভিযান চালায়। গ্রেপ্তার ও নির্যাতনের আশঙ্কায় পুরুষরা গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যায়। তবে খালি বাড়ি পেলে সেনারা সেগুলো পুড়িয়ে দিতে পারে সে আশঙ্কায় নারীরা গ্রামে অবস্থান করছিল। ৪০ বছর বয়সী এক নারী বলেন, চার সেনা তাকে পর্যায়ক্রমে ধর্ষণ করেছে এবং নগদ টাকাকড়ি ও গহনা লুট করেছে। তার ১৫ বছরের মেয়েটিও সেনাদের অত্যাচারের হাত থেকে রেহাই পায়নি। ৩১ বছর বয়সী আরেক রোহিঙ্গা নারী বলেন, মিয়ানমার সেনারা তাকে উপুর্যপরি ধর্ষণ করেছে। সেনারা তাকে বলেছে, ‘তোদের সবাইকে মেরে ফেলব, তোদেরকে মিয়ানমারে থাকতে দেবো না।’ সোনা-গহনাসহ যা কিছু মূল্যবান মনে হয়েছে মিয়ানমার সেনারা তার সবই লুটপাট করেছে বলেও জানান তিনি। ৩২ বছর বয়সী আরেক নারী বলেন, ‘খাবার-দাবার, কাপড়-চোপড় সবই লুট হয়ে গেছে। এমনকি পরার মতো কোনো কাপড়ও নেই । আমি লজ্জিত ও আতঙ্কিত।’ গ্রামবাসীদের বেশিরভাগই এ-সব বক্তব্যকে সত্য বলে মনে করেন। মিয়ানমার প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র জ হতে অবশ্য গ্রামীবাসীদের এ-সব বক্তব্যকে ‘বানোয়াট’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। রাখাইন রাজ্যের প্রধান পুলিশ কর্মকর্তা কর্নেল সেইন লইনও একই সুরে কথা বলেছেন। তার দাবি ‘এটা মুসলমান গ্রুপগুলোর অপপ্রচার মাত্র।’