মুহাম্মদ মিজান বিন তাহের: বাঁশখালী পৌরসভার জলদী মিয়ার বাজারের পানি চলাচলের ছরায় ময়লা আবর্জনায় ফেলে ভরাট করা হয়েছে। পৌরসভার হতে দীর্ঘদিন পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন না থাকায় দুর্গন্ধে ক্রেতা বিক্রেতাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। জনগনের সুবিধার্তে ১টি টিউবওয়েল ও ২টি বাথরুম থাকলেও ব্যবহার অনুপযোগি হয়ে পড়েছে।
ময়লা নিষ্কাশনে অব্যবস্থাপনার ফলে যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনায় পরিবেশ দূষিত হয়ে পড়ছে। পৌর শহরের মিয়ার বাজারের ব্যবসায়ীরা নিত্যদিনের ময়লা-আবর্জনা যেখানে-সেখানে ফেলায় বাজার ও আশপাশের পরিবশে নোংরা হচ্ছে। এ সব ময়লা অপসারণের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় গন্ধে অতিষ্ঠ পৌরবাসী।
স্থানীয়রা জানান, ১ শ্রেনীর পৌরসভায় জনবল কাঠামোসহ নানা সংকটে শহর পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। পৌর শহরের প্রতিদিনের ময়লা অপসারণের কার্যকর কোনো ব্যবস্থা গড়ে না ওঠায় দুর্গন্ধে বাতাস দূষিত হয়ে পড়ছে। এতে দুর্গন্ধে বাজারের মানুষ, শিক্ষার্থী, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ অফিস-আদালতগামী মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।গত বছর এই মিয়ারবাজারে সরকারিভাবে ১৮ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা ইজারার জন্য টেন্ডার হলেও সংস্কার ও পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ উদাসীন। একইভাবে পৌরসভার গেইটের দক্ষিণ পার্শ্বে, বালিকা বিদ্যালয়ের গেইটের উত্তর পার্শ্বে ও থানা গেইটের উত্তর পার্শ্বে রাস্তার উপর অবৈধভাবে গড়ে তোলা হয়েছে ডাসবিন।ময়লা আবর্জনা পঁচে গলে দুর্গন্ধে এই সড়কে চলাচলরত যাত্রী ও পথচারীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। যুগ যুগ ধরে ঐতিহ্যবাহী এই বাজারটিতে বিভিন্ন দুষ্প্রাপ্য মানসম্মত মালামাল পাইকারী বিক্রেতারা দূর দূরান্ত থেকে আগত ক্রেতাদেরকে মালামাল বিক্রয় করে আসলেও সেই সুনাম হারাতে বসেছে। বাজারটিতে এক সময় সরল, গন্ডামারা, কাথারিয়া, পুঁইছড়ি ও ছনুয়ার বিভিন্ন ব্যবসায়িরা মালামাল বিক্রয়ের জন্য হাজির হলেও বর্তমানে সেই দৃশ্য নেই। মাছ-মাংসের বাজারের অংশে বাজারের ময়লা আবর্জনার বিশাল স্তুপ। দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পরিবেশ বিপন্ন হয়ে পড়েছে।বিগত ৫ বছর যাবৎ এই ছড়াটি সংস্কারের কোন উদ্যোগ গ্রহন না করায় মাছ বাজারের পাশ দিয়ে নমঃ পাড়া ও তেলি পাড়ায় শতাধিক পরিবারের মানুষ চলাচলে দুর্গন্ধে অতিষ্ট হয়ে পড়েছে।
পৌর এলাকার মোঃ হামিদ, ব্যবসায়ী আমিন, মোরশেদ,মোশারফ,বেলাল,হাসান, ও মহিউদ্দীন জানান, ময়লা ফেলার ডাম্পিং গ্রাউন্ড (ময়লা ফেলার ভাগাড়) থাকলেও তা ব্যবহার না করে যত্রতত্র ময়লা ফেলার কারণে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। পৌরসভার জলদী মিয়ার বাজার,ওলিমিয়ার দোকান উত্তরে চড়াই, উপজেলা আদালতের পূর্বে মাছ বাজার সংলগ্ন জমিতে,বাঁশখালী সরকারী বালিকা বিদ্যালয়ের পার্শ্বে ছড়াই, সম্মুখে ও মুক্তিযোদ্ধা ভবন এলাকায় অস্থায়ীভাবে ময়লার স্তূপ করে রাখছেন বাসা বাড়ির মালিকেরা। বৃষ্টির পানিতে এ সব ময়লার স্তূপ যত্রতত্র ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে মশা-মাছি সৃষ্টি হচ্ছে। অপরদিকে বাঁশখালী সরকারী বালিকা বিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী ছড়া এলাকায় ময়লার স্তূপ করে রাখার কারণে পুরো পৌর শহরে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে। দুর্গন্ধের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না ব্যবসায়ী ও পথচারীরা।
সামনের বর্ষায় অতিরিক্ত বৃষ্টি পাত হলে মিয়ারবাজার এলাকাটি পুরো ময়লা অর্বজনায় ডুবে যাবে।
মিয়ারবাজারের ইজারাদার আনছুর আলী জানান,গরুর বর্জ্য পেলে নমপড়া ও তেলী পাড়ার ছড়াই দূর্গন্ধ ছড়াচ্ছে, যার ফলে সাধারন ক্রেতারা দিন দিন বাজার অমূখী হয়ে পড়েছে।এসব ময়লা অবর্জনার কারনে আমরা ও ক্ষতি গ্রস্ত হচ্ছি। প্রতিদিন ময়লা অবর্জনা পরিষ্কার কথা বলে,কিন্তু বাস্তবে তা কার্যকর কোন প্রদক্ষেপ নেন নি পৌর কতৃপক্ষ।
অথচ পৌরসভায় প্রায় ৫০ জন মাষ্টার রোলে বেতন উত্তোলন করে,এরা কোন কাজই করে না,যদি এরা ১০ জনেই নিয়মিত কাজ করে উক্ত বাজার গুলো নখের পিঠের মত হয়ে যাবে।
মিয়ারবাজার ব্যবসায়ী সমিতির অর্থ সম্পাদক আতিকুল আলম বলেন, ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধের কারণে এই বাজারে ব্যবসায়ী এবং সাধারন জনগন অতিষ্ঠ। হোটেল ও রেস্তোরাঁগুলোতে চা, নাশতা খাওয়ার পরিবেশ নেই।আমরা ভাল করে ব্যবসা বানিজ্য ও করতে পারছি না, রাস্তা-ঘাটে যত্রতত্র ময়লা ও আবর্জনা ফেলায় পরিবেশ দূষিত হচ্ছে, পৌর শহর থেকে দূরে নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা-আবর্জনা মজুদ ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা জরুরি।
বাঁশখালী পৌরসভার (ভারপ্রাপ্ত) পরিছন্নতা পরিদর্শক শাহ আলম জানান, বাসা-বাড়ির ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার রাখতে শ্রমিক ও সুইপার রয়েছে মোট ৭ জন। এ ছাড়া ময়লা-আবর্জনা নির্দিষ্ট স্থানে নিতে ১টি ট্রাক রয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের চাহিদার চেয়ে লোকবল কম রয়েছে।তাই ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করতে একটু হিমশিম খেতে হচ্ছে।
বাঁশখালী পৌরসভার প্যানেল মেয়র দেলোয়ার হোসাইন জানান,
লোকবল কম,অন্যদিকে ট্রাকটি নস্ট থাকায় ২ দিন যাবৎ কোন কার্যক্রম চলছে,অল্প কিছু দিনের মধ্যে নতুন আরেকটি ট্রাক আমরা ইতিমধ্যে হাতে পাব।ময়লা-আবর্জনা নির্দিষ্ট স্থানে রাখার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তবে বৃষ্টির কারণে কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে।খুব শীগ্রই এসব ময়লা অর্বজনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য কার্যকর করতে উদ্যোগ নেয়া হবে।
এ ব্যাপারে বাঁশখালী পৌরসভার মেয়র শেখ সেলিমুল হক চৌধুরীর সাথে বেশ কয়েকবার মুটোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে ও তিনি মোবাইল ফোন রিসিভ করে সংবাদ কর্মী পরিচয় দেওয়ার সাথে মোবাইল ফোন কেটে দেন।