বিশেষ প্রতিনিধি, বাঁশখালী টাইমসঃ দেশব্যাপী আলোচিত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দ্বারা পরিচালিত মোবাইল কোর্টকে হাইকোর্টকর্তৃক অবৈধ বলে রায় দেয়া হয়েছে। এ রায়ের নেপথ্যে রিট আবেদনকারীদের আইনজীবী হিসেবে ঐতিহাসিক বিজয় ছিনিয়ে নেন বাঁশখালীর কৃতি সন্তান ব্যারিস্টার হাসান এমএস আজিম দোলন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা ও বিচারকাজ পরিচালনার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে করা পৃথক তিনটি রিট আবেদনের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাসের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এ রায় ঘোষণা করেন।
এ রায়ের ফলে ২০০৯ সালের ভ্রাম্যমাণ আদালত আইনের মাধ্যমে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা যাবে না বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
রায়ে বলা হয়, আইনের ওই বিধানের মাধ্যমে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটদের বিচারিক ক্ষমতা দেয়া সংবিধানের লঙ্ঘন এবং তা বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় সম্মুখ আঘাত এবং ক্ষমতার পৃথককরণের নীতিবিরোধী। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটসহ বাংলাদেশ কর্মকমিশনের সব সদস্য (প্রশাসন) প্রশাসনিক নির্বাহী। প্রশাসনিক নির্বাহী হিসেবে তারা প্রজাতন্ত্রের সার্বভৌম বিচারিক ক্ষমতা চর্চা করতে পারেন না, কেননা মাসদার হোসেন মামলার রায়ে এ বিষয়ে পরিষ্কারভাবে বলা আছে। আরও বলা হয়, ৫, ৬(১), ৬(২), ৬(৪), ৭, ৮(১), ৯, ১০, ১১ ও ১৩ ‘কালারেবল প্রভিশন’। ধারাগুলো সরাসরি মাসদার হোসেন মামলার রায়ের চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
রায় ঘোষণার পর রিট আবেদনকারীদের আইনজীবী হাসান এমএস আজিম গণমাধ্যমকে বলেন, ২০০৯ সালের ভ্রাম্যমাণ আদালত আইনের ১১টি ধারা ও উপধারা অসাংবিধান ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে হলে এখন সংবিধান ও মাসদার হোসেন মামলার রায়ের আলোকে নতুন করে আইন করতে হবে। তিনি বলেন, রায়ে একই সঙ্গে রিট আবেদনকারী দুই ব্যক্তিকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের দেয়া সাজা ও জরিমানার আদেশ অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। জরিমানার ১০ লাখ টাকা ৯০ দিনের মধ্যে আবেদনকারী মজিবুর রহমানকে ফেরত দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বাঁশখালী টাইমসের সাথে অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে ব্যারিস্টার দোলন বলেন- সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক এ মামলার নিষ্পত্তিতে বিচারবিভাগের স্বাধীনতা ও স্বার্বভৌমত্ব রক্ষা হলো। দেশ ও মানুষের সেবায় আমি পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্ব পালন করে যেতে চাই।
উল্লেখ্য, ব্যারিস্টার দোলনের নিজ বাড়ি বাঁশখালীর চেচুরিয়া গ্রামে। তিনি প্রয়াত সমাজসেবী আনোয়ারুল আজিম ভোলার জৈষ্ঠ্য পুত্র।