আপনার ১ বছর থেকে তারও বেশি বয়সী মেয়েশিশু, বোন, ভাতিজি, ভাগ্নিকে কারো কোলে উঠতে দেবেন না। অপরিচিত তো বটে, পুরুষ আত্মীয়ের কোলেও বসতে দেবেন না। কোলে করে বাইরেও নিয়ে যেতে দেবেন না। আদর করলেও যেন আপনার সামনেই করে।
আর সন্তানকে পোশাক না পরিয়ে রাখবেন না, সে ছেলে-মেয়ে যা-ই হোক না কেন!
ধর্ষণ হতে ১ বছরের শিশুও বাদ যাচ্ছে না। এই ধর্ষণ থেকে বাঁচাতে হলে আপনাকে এসব পালন করতেই হবে।
আর ধর্ষণের শাস্তি কখনও ক্রসফায়ার হতে পারে না। বাংলাদেশের আইনে ধর্ষণের শাস্তি যা আছে তা-ই দিতে হবে, আগ বাড়িয়ে বা বেশি ন্যায়বিচার দেখাতে গিয়ে শাস্তির কম-বেশি করাটাও একটা অন্যায়।
ইসলামী শরিঅায় ধর্ষণের (ব্যাভিচার) শাস্তি হিসেবে অবিবাহিতের জন্য ১০০ টা বেতের আঘাত ও ১ বছর নির্বাসন, বিবাহিতের জন্য পাথর মেরে হত্যার বিধান রয়েছে। বাংলাদেশে যেহেতু সেই বিধান মানা হয় না তাহলে নিজস্ব আইনেই বিচার করতে হবে।
বিচারহীনতায় একটা দেশের অবস্থা কী হতে পারে তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ বর্তমান বাংলাদেশ।
নোট: নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ ধারায় ধর্ষণের শাস্তি সম্পর্কে বলা হয়েছে—
ধারা ৯(১): কোন পুরুষ কোন নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করলে তিনি যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করবেন। এবং এর অতিরিক্ত অর্থদণ্ডও তাকে দেয়া যেতে পারে।
ধারা ৯(২): ধর্ষণের ফলে বা ধর্ষণের পড়ে অন্য কোন কাজের ফলে ধর্ষিত নারী বা শিশুর মৃত্যু ঘটলে ধর্ষণকারী মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করবেন। এছাড়াও তাকে এক লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হবে।
ধারা ৯(৩): একাধিক ব্যক্তি দলবদ্ধভাবে কোন নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করলে এবং ধর্ষণের কারণে উক্ত নারী বা শিশুর মৃত্যু ঘটলে তাহলে ধর্ষকরা প্রত্যেকেই মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এছাড়াও তাদেরকে অন্যূন এক লাখ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হবে।
ধারা ৯(৪): যদি কোন ব্যক্তি কোন নারী বা শিশুকে
(ক) ধর্ষণ করে মৃত্যু ঘটানোর বা আহত করার চেষ্টা করেন তাহলে উক্ত ব্যক্তি যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং এর অতিরিক্ত অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হবেন।
(খ) যদি ধর্ষণের চেষ্টা করেন তাহলে উক্ত ব্যক্তি অনধিক দশ বছর কিন্তু অন্যূন পাঁচ বছর সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন এবং এর অতিরিক্ত অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হবেন।
ধারা ৯(৫): পুলিশ হেফাজতে থাকাকালীন কোন নারী ধর্ষিত হলে, যাদের হেফাজতে থাকাকালীন উক্ত ধর্ষণ সংঘটিত হয়েছে, সে ব্যক্তি বা ব্যক্তিগণ উক্ত নারীর হেফাজতের জন্য সরাসরি দায়ী হবেন। এবং তাদের প্রত্যেকে অনধিক দশ বছর কিন্তু অন্যূন পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এবং এর অতিরিক্ত অন্যূন দশ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল: নারী ও শিশু নির্যাতন-সংক্রান্ত সব অপরাধের বিচারকাজ পরিচালনার জন্য সরকার প্রত্যেক জেলা সদরে একটি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল নামক বিশেষ আদালত গঠন করেছে। ধর্ষণের বিচারও এই ট্রাইব্যুনালে হবে।
লেখক: আরকানুল ইসলাম, কিশোর ঔপন্যাসিক
নির্বাহী সম্পাদক- বাঁশখালী টাইমস