এ-ই তো আমি
মুরশিদুল আলম চৌধুরী
আমাকে দেখার আকুতি তোমার ছিল না, নেইও।
কেননা, নিঃসীম গাঢ় অন্ধকারে চোখ বুজলে-
তোমার সাদাকালো চিন্তার ভাঁজে ভাঁজে আমি উড়ি।
অথচ, তোমাকে স্পর্শ করি না; তাই না মনস্বিতা?
চৈত্রের ভরা জোছনার নিশিথে কখনও
আধমরা খড়ের গাদায় গা এলিয়ে দিও।
আমি এক মুহূর্তও তোমার পাশে বসব না।
হয়তো বা কাওয়ালির সুর ভেসে আসবে,
হয়তো বা চড়ক পূজার গাজনের সুর,
তোমার কণ্ঠের আরাধনাও মিশে যাবে ওখানে
আমার কণ্ঠও কি বিলীন হবে না তোমার সঙ্গে?
হয়তো এক দুপুরে অনন্ত শূন্যতায় দৃষ্টি পেতেছিলে,
রোদের ফিসফিসানি কিংবা নীরবতার বিষণ্ন সুর
আমার নিঃশ্বাসের কাছাকাছি এনেছিল তোমাকে।
কতবার কি তোমার দৃষ্টি অপলক হয়ে আসেনি?
কতবার কি ওই শূন্যতায় আমি ভাসিনি –
একটি গোলাপ নিয়ে, নতজানু হয়ে?
মনস্বিতা, গোধূলির লালটা কি অপলক দেখেছ?
অবিচ্ছেদ্য লাল নয়, হালকা সফেদ হয়ে
আমিও ভেসে আসি তোমার চোখে।
এরপর, ধীরে ধীরে উবে যায় আলো।
এরপর, আলোআঁধারীর বিষণ্নতা ঘিরে ধরে তোমাকে।
এরপর, অন্ধকার, গাঢ় অন্ধকার, বীভৎস অন্ধকার!
তারাদের দীর্ঘ লয়ের ভাটিগানে নিষিদ্ধ লোবানের গন্ধ।
তুমি খুলে দাও অন্তর্দৃষ্টির কপাটগুলো।
তোমার বন্ধ চোখের পাতায় আটকে যায় অশ্রু।
আমি তোমার চোখে আলতো তর্জনী বুলিয়ে দিই-
চোখ খোলো মনস্বিতা, এ-ই তো আমি!
কবি ও সাংবাদিক