প্রিয়তমা আমার
মুরশিদুল আলম চৌধুরী
(এক রাখাইন নারীকে নিবেদিত)
ইদানীং সূর্যের রঙে লাল হয়ে ওঠে না পৃথিবী;
প্রভাতে রঙ ছিটিয়ে দেয় আমার প্রেমিকার রক্ত-
নতুন আলোর চেয়ে দীপ্যমান রক্ত,
সদ্যবিক্ষত হৃদয় থেকে ফিনকি দেওয়া রক্ত।
প্রিয়তমা,
তুমি মাটির বংশধর হও বা না হও,
তোমার তকমা আয়েশা-ফাতিমা বা অন্যকিছু,
তুমি আমার ভাষায় স্বপ্ন দেখ বা না দেখ,
তোমার জন্য কারও কাছে ফরিয়াদ করব না।
প্রার্থনায় প্রার্থনায় আমি এখন ক্লান্ত।
আমি লজ্জিত প্রিয়া,
জলপাই রঙে তোমার সকাল যখন বীভৎস হয়,
আমি রাত্রিকে প্রলম্বিত করতে পারিনি;
আকাশ যখন স্ফুলিঙ্গের সঙ্গে নিষ্ঠুর আলিঙ্গনে মত্ত,
আমি তখন মেঘমালা অবতীর্ণ করতে পারিনি;
অভিমানে, ক্রোধে স্রষ্টাকে শুধু একবার বলেছি-
একটু বৃষ্টি দাও, আমি ভিজে ভিজে
তোমার উষ্ণ কাবায় চুম্বন করতে চাই,
আমি তোমার কঠিন আরশ স্পর্শ করতে চাই,
কাউকে শোনাতে পারিনি আমার বিলাপ।
প্রেয়সী আমার,
আমি দেখেছি, তোমার স্তন থেকে রক্ত ঝরছে,
রক্ত লেপটে আছে আমাদের শিশুসন্তানের মুখে;
তোমার বস্ত্রহরণের লজ্জা দেখেছে আকাশ,
মাটিতে নিক্ষিপ্ত থেকেছে আমার দৃষ্টি;
সন্তানের কান্নার কাছে হেরে গেছে নীলকণ্ঠ,
পাখিটিকে কত বলেছি, আরও উচ্চকণ্ঠ হও,
তোমার শব্দে ম্লান হয়ে যাক শিশুর ফরিয়াদ।
কেউ শোনেনি এ অসহায়ের বিলাপ।
তবে, তোমার শেষ নিঃশ্বাস আমি ভুলিনি, ভুলব না।