মুরশিদুল আলম চৌধুরীর কবিতা || মনস্বিতা

BanshkhaliTimes

মনস্বিতা

মুরশিদুল আলম চৌধুরী

বিন্যস্ত চিন্তাগুলো এখন এলোমেলো হয়ে যায়।
কেন জান, মনস্বিতা?
কারণ, আমি স্রেফ নক্ষত্রের খোঁজে
আকাশের দিকে তাকাই না এখন।
একটি তারা, তারার হাট কিংবা উল্কার ফাঁকে
আমি আমার নিষ্প্রভ পৃথিবীকেও খুঁজে ফিরি-
স্বপ্নলোকে রচিত মালাটা ছত্রখান করার পৃথিবী।
অথচ, তাকে চিনি না আমি; কে সে?

তোমার ছায়া দেখলে আমি যেমন আঁতকে উঠি,
তোমার চুল যেমন ভিজে যায় আমার আর্দ্র দৃষ্টিতে,
ও-রকম নিভু ভেজাআলোর সন্ধ্যা হাতড়ে বেড়াই আমি-
এখানে, ওখানে- সবখানে।

মনস্বিতা, বিব্রত কৈশোরকে নিশ্চয়ই উপলব্ধি করেছ।
আমি করেছি- আমাদের বায়তুল মোকাররমের সিঁড়িতে,
কিংবা তোমাদের কালীঘাট মন্দিরের দেয়ালে।
রাতের ভয়ার্ত স্বপ্ন যেমন সকালে হাসি জাগায়,
স্বপ্নাচ্ছন্ন বৈভব যেমন হাতড়ে বেড়ায় কিশোরী,
ঠিক ও-রকম হৃদয়কে দ্ব্যর্থবোধক করেছি আমি।

তোমাকে যদি কখনও দেখি,
রবীন্দ্রনাথের ‘খাঁচার পাখি’ শোনাতে বলব।
আমি চাইব, তোমার বিশুদ্ধ কণ্ঠে নিভে যাক আমার দৃষ্টি,
আমি চাইব, ফিনকি দিয়ে রক্তপাতের পর নিষ্কলুষ হয়ে যাক হৃদয়,
আমি চাইব, সফেদ বর্ণ নিক আমার স্বপ্ন, যতটা নেওয়া সম্ভব।
তুমি গাইবে- ‘একদা কী করিয়া মিলন হল দোঁহে…’
কসম, আমি পৃথিবী আর আমার দূরত্বকে ঘোচাতে চাইব না।
আমি রবীন্দ্রনাথের মতো গাইব-
‘দুজনে একা একা ঝাপটি মারে পাখা…’।

মনস্বিতা, এটা মোটেও কাছে আসার কাতরতার গল্প নয়;
দূরতম আলোর ‌দুলুনিতে হৃদয়কে ঘুম পাড়ানোর গল্প।

 

Save

Spread the love

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *