অনবদ্য কিছু ভুল
মুরশিদুল আলম চৌধুরী
কলকাতা আসব।
কী আনব তোমার জন্য, মনস্বিতা?
আকাশ থেকে কিছু তারা পেড়ে রেখেছিলাম
নিত্যব্যবহারের জন্য- ওসব আনব না।
বিছানার পৈতানে কিছু জোছনা জমে আছে
ওসব আনব? না, না, আনব না।
পাছে, আমাকে খুব সস্তা ভাববে।
অসাধারণ কিছু কষ্ট নিয়ে আসব।
আঁধারের পরত থেকে টেনে টেনে আনা কিছু কষ্ট।
অনেক কষ্ট করে কষ্টগুলো জড়ো করেছি,
তোমার দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য।
মনস্বিতা, ভোরের নৈঃশব্দে একাকী হেঁটেছ কখনও?
হাঁটলে দেখতে, দৃষ্টির সীমানার শেষপ্রান্তে
একটি বাল্ব অহেতুক আলো ছড়াচ্ছে।
অবহেলা আর অযত্নের কষ্টে কেমন প্রফুল্ল!
অন্ধকার আর আলোর মাঝখানে
যাচিত অবহেলার প্রতিচ্ছবি ওটা- আমার মতো।
কখনও ঢাকা এলে আমার বাসায় এসো-
বালুর মাঠের ওপারের বাল্বটা তোমাকে দেখাব।
কত যত্নে কষ্টগুলো সাজিয়ে রেখেছে সে।
তখন বুঝবে, কষ্ট কত মূল্যবান!
মনস্বিতা, একটা কথা ভুলেই গিয়েছিলাম-
জীবনের পুরো সময় ধরে সংগ্রহ করা কিছু ভুল
প্যাকেটবন্দি করে রেখেছি তোমার জন্য।
লাগেজে জায়গা হলে ওগুলো নিয়ে আসব।
শুদ্ধতার গন্ধ শুঁকতে শুঁকতে আমি যখন নিশ্চল,
বিশুদ্ধ বাতাসে অবশ হয়ে আসছিল আমার হাত,
তখন ভুলগুলো বেশ যত্নে জমা করেছিলাম!
জীবনে প্রাণ এনে দেওয়া অনবদ্য কিছু ভুল।
কিছু শুদ্ধ ও কিছু ভুল তোমাকে একসঙ্গে দেখাব।
তোমার কণ্ঠ থেকে বিস্ফারিত পবিত্র সুরের মতো
তোমার কণ্ঠ আলোকিত করা কিছু মুক্তোদানার মতো
পবিত্র ভুলগুলোই তুমি বেছে নেবে, জানি।
জানো কিনা, গলার শোভা বাড়ানো প্রতিটি মুক্তোদানা
ঝিনুকের একেকটি টিউমার ছাড়া আর কিছু নয়।
কত ভুল দিয়ে আমরা শুদ্ধতার বাক্য বানাই!
তোমার আর কী প্রয়োজন, জানিয়ে চিঠি দিও।