ঈদকে সামনে রেখে নগরীর বিপনী বিতান গুলোতে ক্রেতাদের ভিড় দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিভিন্ন বিপনী বিতান গুলোতে পন্যের দাম অতিমাত্রায় হাকডাক করে বলা এবং ক্রেতাদের চাহিদার অতিরিক্ত দামের কারণে সাধারণ দোকানের চেয়ে ব্রান্ডিং এবং একদামে বিক্রির দোকানে ভিড় লক্ষনীয়।
রমজানের রোজা নিয়ে অতি গরমের অতিষ্ঠ ক্রেতারা এক ছাতার নিচ থেকেই কেনাকাটা শেষ করতে বেশী আগ্রহী। এমন শপিং সেন্টার পছন্দ করতে গিয়ে নগরীর চকবাজারের কলেজ রোডে সুবিশাল শো-রুম নিয়ে প্রতিষ্ঠিত ‘বেবি ওয়ার্ল্ড’কে বেচে নিচ্ছে ক্রেতা সাধারণ। বিশেষায়িত এ দোকানে শুধুই মা ও শিশুর প্রয়োজনীয় সব উপকরণ পাওয়া যাবে।
সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ‘বেবি ওয়ার্ল্ড’-এ ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী কাপড়ের বিশাল সমাহার। দামও ক্রেতাদের সাধ্যের মধ্যে থাকায় দিনরাত ক্রেতাদের ভিড় লক্ষণীয়।
নগরীর চকবাজারের কলেজ রোডে সাইমুন হোটলের পাশে বে-এম্পোরিয়াম এর উপরে শিশু ও মায়েদের প্রয়োজনীয় সব কিছুর বিশাল সমাহার নিয়ে ‘বেবি ওয়ার্ল্ড’-এর শো-রুম ঘুরে দেখা যায় তরুন-তরুনী, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও সাধারণ ক্রেতাদের উপছে পড়া ভিড়।
‘বেবি ওয়ার্ল্ড’-এর কর্ণধার অধ্যাপক আনোয়ারুল করিম বলেন, ‘আমরা সবসময়ই বাংলাদেশের আবহাওয়ার কথা মাথায় রেখে কাপড় বেছে নিই। গরমে শিশুদের পোশাকটা যেন আরামদায়ক হয়। এই গরমে সোনামণিদের পোশাকে প্যার্টানের দিক থেকে রয়েছে লিল্যাকজিন সিস্টেম যেমন প্রয়োজনে পোশাকটি ছোট-বড় করা যাবে এবং ঢিলেঢালা হলে টাইট করে নিতে পারবেন। এক বছর থেকে শুরু করে দশ বছরের বাচ্চাদের পর্যন্ত পোশাক রয়েছে এখানে।
‘বেবি ওয়ার্ল্ড’-এ শিশুদের পোশাকের দাম পড়বে ৫০০ থেকে ২০০০ টাকা। ছেলেদের সব ধরনের পোশাক, ট্যানটপ, টি-শার্ট, শার্ট, পাঞ্জাবি, ফতুয়া, প্যান্ট ইত্যাদি। মেয়েদের সব ধরনের পোশাক যেমন ফ্রক, লেহেঙ্গা, সালোয়ার-কামিজ, স্কার্ট, টপস ইত্যাদি। এ সময় শিশুদের পোশাক হওয়া উচিত একদম পাতলা, হাতা কাটা ও ঢিলেঢালা। যাতে শিশুর শরীরে সহজেই বাতাস প্রবেশ করতে পারে। এসব বিষয় মাথায় রেখেই তৈরি করেছে শিশুদের বিভিন্ন রকম ফ্যাশনেবল পোশাক। তিনি বলেন, ‘সম্ভব হলে দিনে কয়েকবার পোশাক পরিবর্তন করে নিতে পারেন। খেলাধুলা, ঘুমানো কিংবা বাসায় পরার জন্য আলাদা পোশাক নির্বাচন করা যেতে পারে।’
অধ্যাপক আনোয়ারুল করিম আরো বলেন, বাংলাদেশ এখন মধ্য আয়ের দেশ। মানুষের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পাশাপাশি চাহিদা এবং রুচিও পরিবর্তন হয়েছে। অধিকাংশ ক্রেতা ব্রান্ডিং এবং একদামে বস্ত্র কিনতে আগ্রহি। তাছাড়া সারা মার্কেট ঘুরাঘুরি না করে এক জায়গা থেকে মা ও শিশু’র সবার বাজার করতে আমাদের এখানে চলে আসছে।
তিনি বলেন, আমাদের পণ্য গুলোর কোয়ালিটি নিয়ে ক্রেতারা সন্তুষ্ট। আমরা পণ্য ক্রয়ের ১ মাসের মধ্যে ফেরত বা বদলানো ব্যবস্থা রেখেছি। আবার দামের দিক দিয়ে কোথাও আমাদের চেয়ে কম রেটে পণ্য পাওয়া গেলেও আমরা ডেমারেজ দিতে প্রস্তুত। তিনি ক্রেতাদেরকে একই ছাতার ভিতর থেকে ঈদের সমস্ত কেনাকাটা করার জন্য ‘বেবি ওয়ার্ল্ড’-এ চলে আসার আহবান জানান।
এদিকে, ‘বেবি ওয়ার্ল্ড’ এর উদ্যোক্তারা চেয়েছিলেন মা ও শিশুদের জন্য একই ছাদের নিচে অনেক কিছু রাখতে, এমনটাই জানান মো: জমির উদ্দিন। উদ্যোক্তাদের আরও মনে হয়েছিল আমাদের দেশে এই জিনিসগুলোর মান নাকি মানসম্মত নয়। তাই বেশিরভাগ জিনিসই আসে বিদেশ থেকেই। দেশি জিনিস পাওয়া যায় না বললেই চলে।
এই কারণে দাম তো বেশি হবেই! শত সমালোচনা আর বিপত্তি থাকার পরও যখন পোশাক শিল্পে আমাদের দেশ এগিয়ে যাচ্ছে সেখানে মা ও শিশুদের জন্য পোশাক আসছে বিদেশ থেকে। কারণ কী?
মো: জমির উদ্দিন জানান, এশিয়ার কয়েকটি দেশ শিশুদের জন্য তৈরি পণ্যে বেশ দক্ষতা এনেছে। কেন যে আমরা পারছিনা, এটা চিন্তার বিষয় হতে পারে! যাই হোক পাওয়া যায় নব্য জন্ম নেওয়া শিশুদের প্রয়োজনীয় দ্রব্য, মাতৃত্বকালীন বিভিন্ন জিনিস, খেলনা আরও অনেক কিছু।
মো: জমির উদ্দিন যোগ করেন, যে যার সাধ্যমতো নবজাত শিশুর জন্য সবচাইতে ভালো পণ্য কিনতে চান। সুতরাং পণ্যের মানই শেষ কথা। বিশ্বায়নের কারণে চাহিদার ধরণ কিছুটা পরিবর্তিত হচ্ছে বলেও মনে করেন তিনি।
ডায়াপার ১৪০ থেকে ১,৭৯৫ টাকা। নিপল ৪৫ থেকে ৬৫০ টাকা। ফিডার ১৮০ থেকে ১ হাজার ৮শ’ টাকা। সদ্যজাত শিশুর জুতা ১১০ থেকে ৫২০ টাকায় মিলবে। এখানে ৫০০ থেকে ২ হাজার টাকার মধ্যে নবজাতক থেকে ১০ বছর বয়সীদের জন্য জামা কাপড় মিলবে।
খেলনা রয়েছে বিস্তর! রয়েছে বেবি ফুড, কসমেটিক, জুতা, ডায়পার, গিফট সামগ্রী শিশু ও মায়েদের প্রসাধনী এবং অলঙ্কার।
সৌজন্যে- সিটিজি টাইমস