BanshkhaliTimes

‘ভাইয়ের হাতে ভাই খুন’ মানবতার বিপর্যয়!

BanshkhaliTimes

ভাইয়ে ভাইয়ে খুন – মানবতার বিপর্যয়!

মানবজাতি বিশ্বভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ – আবদ্ধ পারষ্পরিক আত্মার বন্ধনেও। আছে আবার মুসলিম ভ্রাতৃত্ব সহ জাতিগত ভ্রাতৃত্ব। কিন্তু কোথায় আজ সেই ভ্রাতৃত্ব?

বলছি সেই ভ্রাতৃত্বের কথা যেথায় ছিল না কোন প্রতিহিংসা, ছিল না কোন বিদ্বেষ – ছিল শুধু শান্তির সুশীতল হাওয়া,ছিল ভালবাসা সম্প্রতি সহমর্মিতা।

কেন আজ জ্বলছে চারদিক প্রতিহিংসার আগুন, কেন শুনি প্রতিনিয়ত অসহায় নারী শিশুর আর্তনাদ,কেন শুনি অবিরত অস্ত্রের জণ্ঞজনানি- গোলাবারুদের বিকট শব্দ?

কেন আজ চলছে ভাইয়ে ভাইয়ে রক্ত নিয়ে হুলি খেলা, কেন ভাইয়ের হাত ভাইয়ের রক্তে রঞ্জিত

সকলেরই জ্ঞাতব্যঃ প্রতিটি ধর্ম ভ্রাতৃত্বের বুনিয়াদে প্রতিষ্ঠিত।রয়েছে সকল ধর্মে ভ্রাতৃত্বের ওপর বিশেষ গুরুত্ব। ইসলাম বলেছে “মুসলিম জাতি ভাই ভাই, এক ভাইয়ের ব্যথায় অন্যজনের ব্যথিত হওয়ায় ভ্রাতৃত্বের লক্ষ্মণ”। হিন্দু ধর্মেও বলা আছে “ভাইয়ের রক্ত পবিত্র “। বৌদ্ধ ধর্মে “রক্তপাত হারাম, জীব হত্যা মহাপাপ “। আমরা তো সেই ধর্মের অনুসারী কিন্তু ধর্মের নীতিবাণী কি মেনে চলি?

তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে সকলেরই জানা

সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দু – গ্রুপের দাঙ্গা হাঙ্গামা বরর্বতার যুগে আইয়ামে জাহেলিয়াকেও হার মানিয়েছেন। মনুষ্যত্বের সীমানা পেরিয়ে কত হিংস্র পশু হলে আগুনে দগ্ধ করে হত্যা করা যায়। কত পাশবিক হলে ছেলের হাতে মা খুন হয়। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, মানবজাতি আজ কত নির্লজ্ব হলে বাঁশখালী বাহারছড়া ইউনিয়নে প্রচলিত সমাজ নামক দ্বৈতের হাতে দু – জন কোরআন হাফেজর নির্মম মৃত্যু হয়।মনে হয়, অন্ধকার যুগেও তো কাউকে এ্যম্বুলেন্স থেকে নামিয়ে হত্যা করেনি।

ধিক- শত ধিক সেই সব খুনীদের যারা আজ জামাই আদরে নির্ভয়ে ঘুরে বেড়ায়, শুনি আবার তাদের মুখে মানবতার জ্বয়ধ্বনি, জামিন পায় উচ্চ আদালতেও।

হায়! সভ্যতা কোথায়, বর্বরতার যুগে মানবতার আজ রসাতলে।

সকলের কাছে উন্মুক্ত প্রশ্ন

প্রচলিত সমাজ কি আজ আমার মরণফাঁদ?

সমাজ মানেই কি লাঠি হাতে নিয়ে বিপক্ষেকে ঘায়েল করা?

অস্ত্র সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে নিজের ভাইয়ের ওপর হিংস্রের ন্যায় ঝাপিয়ে পড়া?

তুচ্ছ বিষয় নিয়ে অহেতুক মারামারি, তিলকে তাল করে দু গ্রুপের রণযাত্রা?

সম্প্রতি বাঁশখালী বাহারছড়ায় কেন এত অস্থিরতা, খুন রাহজানি, পাশবিকতা?

নাই কি তার কোন স্থায়ী সমাধান। হে বিবেক জেগে ওঠো তুমি!

সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয়ের কারণে সৃষ্ট বিপর্যয় ও সমাজে বিরাজমান দাঙ্গা -হাঙ্গামা নিরসন ও সমাধানের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তপক্ষের কার্যকরী পদক্ষেপ ও আইনানুগ ব্যবস্থার প্রয়োজন নয় কি?

 

নিজেকে সমাজের কর্ণধার মনে করে লাভ কি? যদি আপনার ইন্দনে সমাজে আগুন লাগে।

যদি আপনার উপস্থিতিতে সমাজে খুন হয়। সমাজ আপনার কাছে কী চায় আর আপনি সমাজকে কি উপহার দেন।

বাঁশখালীতে সমাজে সমাজে বিরাজমান অস্থিরতা, মারামারি দাঙ্গা – হাঙ্গামা বন্ধে বাঁশখালীর পুলিশ প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষে এগিয়ে আসতে ও কার্যকর স্থায়ী সমাধান গ্রহণ করতে সচেতন জনগন আপনাদের সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করছে।

পরিশেষে, জয় হোক মানবতার – জেগে ওঠুক ভ্রাতৃত্ব। এই স্লোগানকে সামনে রখে সুন্দর শান্তিময় আলোকিত সমাজ বিনির্মাণে এগিয়ে আসি।

নিজ নিজ সামাজিক অবস্থান ও দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে সমাজের কুসংস্কার দূর করতে জনসচেতনতা তৈরী ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করি।

কেননা আমি জাগলেই, জাগবে সমাজ।

লেখক: মাহমুদুল হাসান
শিক্ষার্থী, অর্থনীতি বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

Spread the love

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *