বিশ্বকবির জন্মবার্ষিকী আজ

বিটি ডেস্কঃ বিশ্ববরেণ্য কবি, গীতিকার, কথাশিল্পী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৪তম জন্মবার্ষিকী আজ। কলকাতার জোড়াসাঁকোর বিখ্যাত ঠাকুর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। বিচরণ করেছেন বাংলা সাহিত্যের সব শাখাতেই। যুক্ত থেকেছেন বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক আন্দোলনে। তার জন্মবার্ষিকীতে আজ দেশজুড়ে গ্রহণ করা হয়েছে নানা কর্মসূচি। এ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া পৃথক বাণীতে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ আবদুল হামিদ তার বাণীতে রবীন্দ্র চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে কল্যাণকর সমাজ বিনির্মাণে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি রবীন্দ্র চেতনার আলোকে ন্যায়ভিত্তিক ও শান্তিময় সমাজ প্রতিষ্ঠা পাবে। মানুষের মধ্যে সম্প্রীতির বন্ধন আরো দৃঢ় হবে।’
তিনি রবীন্দ্র জন্মবার্ষিকীর জাতীয় অনুষ্ঠানমালার সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেছেন, বিশ্বব্যাপী দ্বন্দ্ব, সঙ্ঘাত ও বৈষম্যের বিলোপ সাধন এবং ধর্ম-বর্ণ-ভাষার বৈচিত্র্যে সমুন্নত রাখতে রবীন্দ্রনাথের জীবন ও দর্শন এক উজ্জ্বল আলোকবর্তিকা।
তিনি আশা করেন, আমাদের মননে বিশ্বকবির ব্যঞ্জনাময় উপস্থিতি শোষণ, বঞ্চনা, সাম্প্রদায়িকতা ও অমানবিকতা প্রতিরোধে বাঙালির অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখবে।
বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া তার বাণীতে বলেছেন, রবীন্দ্রনাথের সাহিত্যকর্মে শান্তি,মানবতা, মমত্ববোধ ও পরমতসহিষ্ণুতার বাণী যুগে যুগে মানুষকে প্রেরণা জুগিয়ে যাচ্ছে। তিনি কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকীতে সব কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।
কলকাতায় জন্ম হলেও পৈতৃক জমিদারি দেখভালের জন্য তিনি তদানীন্তন পূর্ব বাংলায় এসেছেন বহুবার। কুষ্টিয়ার শিলাইদহ, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর ও নওগাঁর পতিসরের জমিদার বাড়ি আজো তার স্মৃতিচিহ্ন বহন করছে। তার রচিত ছোটগল্পে আবহমান গ্রামবাংলা শৈল্পিক রূপ পেয়েছে।
রবীন্দ্রনাথ ছিলেন স্বদেশী আন্দোলনের পুরোধা ব্যক্তিত্ব। ১৯১৩ সালে জয় করেছিলেন সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার। ১৯১৫ সালে তিনি ব্রিটিশ সরকারের নাইট উপাধি লাভ করেন। ১৯১৯ সালের ১৩ এপ্রিল জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ওই উপাধি ত্যাগ করেন।
১৮৭৪ সালে তার লেখা প্রথম প্রকাশিত হয়। ১৮৭৮ সালে রবীন্দ্রনাথ ইংল্যান্ড যান। উদ্দেশ্য ব্যারিস্টারি পড়া। তবে সেটি আর হয়ে ওঠেনি। দেড় বছর সেখানে অবস্থান শেষে দেশে ফিরে রচনা করেন গীতিনাট্য বাল্মীকি প্রতিভা। ১৮৮২ সালে তিনি সন্ধ্যাসঙ্গীত ও ১৮৮৩ সালে প্রভাতসঙ্গীত রচনা করেন। ১৮৮৩ সালের ৯ ডিসেম্বর রবীন্দ্রনাথ বিয়ে করেন মৃণালিনী দেবী চৌধুরাণীকে। তার গ্রন্থের মধ্যে শেষের কবিতা বাঙালির বহুলপঠিত উপন্যাস। বিষয়বৈচিত্র্যে ও পরিধির ব্যাপকতায় পূর্ণ তার সাহিত্যকর্ম বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত ও পঠিত হচ্ছে। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে কুষ্টিয়ার শিলাইদহ, নওগাঁর পতিসর, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর ও চট্টগ্রামে সরকারি-বেসরকারি নানা আয়োজনে পালিত হবে তার জন্মজয়ন্তী। বাংলা একাডেমি, শিল্পকলা একাডেমিসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং বেসরকারি স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল আয়োজন করবে বিশেষ অনুষ্ঠানমালার।

Spread the love

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *