BanshkhaliTimes

‘বাবার অবদান লিখে শেষ করা যায় না’

BanshkhaliTimes

‘বাবার অবদান লিখে শেষ করা যায় না’

বাবা
মুজিবুর রহমান সিআইপি

বাবা ছোট্ট একটি শব্দ, যার ব্যাপকতা বিশাল। বাবার হাত ধরে জ্ঞানের জগতে প্রবেশ করা। পুরোটা জীবন জুড়ে বাবার ছায়া। অস্তিত্ব বিশ্বাস আর ভালবাসার নাম বাবা। তিনি সাহস যোগান, স্বপ্ন দেখান, এগিয়ে যাওয়ার পথ তৈরী করেন। বাবা জীবনে পাওয়া সেরা মানুষ।

কথা সাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদ বলেছেন, “দুনিয়াতে অসংখ্য খারাপ মানুষ আছে, কিন্তু খারাপ বাবা একটিও নেই।” জীবনে হিরু, সুপার হিরুকে পাশ কাটিয়ে বাবার আদর্শকে অনুসরণ করতে চেষ্টা করছি। জীবনে বহু কিছু অর্জন করেছি, করছি। কিন্তু বাবার মত নীতি-নৈতিকতায় বড় মানুষ হতে পারা সুকঠিন। ধনে-সম্পদে, বিত্ত-বৈভবে বড় লোক হওয়া হয়তো সহজ, কিন্তু বাবার মত বড় মাপের অনুকরণীয় মানুষ হওয়া দুরুহ।

প্রিয় পাঠক! আমার বাবা আলহাজ্ব মাস্টার নজির আহমদ সাধারণ একজন শিক্ষক ছিলেন। তাঁর মাঝে জড়িয়ে ছিল বিশালত্বে অনুপম ছায়া। বাবার অবদান লিখে শেষ করা যায় না, শুধু অনুভব করা যায়। বাবার কাঁধটা যেন বড়ই চওড়া ছিল, না হয় সমাজ-সংসারের এত বড় দায়ভার কিভাবে বহন করে নিলো, তা এক বিস্ময়! যেন তাঁর পা-দুটো ছিল শক্ত, না হয় এত কঠিন পথ পাড়ি দেওয়া অসম্ভব। আমার বাবার ঋণ জমা আছে প্রতিটি অস্থি-মজ্জায়, শিরা-উপশিরায়। এই ঋণ আমাকে দরিদ্র করেনি, ধনী করেছে। বাবাকে কঠিন জীবন যুদ্ধে কাঁদতে দেখিনি, ঘামতে দেখেছি। সন্তানের জামার চেয়ে বাবার জামা কম দামের হতো। এক জোড়া জুতোয় চলতো বছরের পর বছর। রোদ বৃষ্টি মাথায় নিয়ে করা সঞ্চয় নিজের জন্য কৃপন আর পরিবারের জন্য নিরব যোগানদাতার নাম বাবা। বাবার কারণে পৃথিবীর রং-রুপ-আলোর দর্শন। বাবার দোয়া আদর্শ ধারণ করে পথ চলা, এতটুকু এগিয়ে আসা। আমার বাবা শীতল ছায়ার এক বটবৃক্ষ। যে বাবা বৃক্ষের মত ছায়া দেয়, ফল দেয়, জ্বালানী দেয়, বাঁচার জন্য অক্সিজেন দেয়। সে বাবা-মায়ের দায়িত্ব পালন করা প্রত্যেক সন্তানের এক বড় কর্তব্য।

প্রতিটি ধর্মে বাবা-মায়ের মর্যাদা সম্মান ও তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে দায়িত্ব পালনের রয়েছে কঠোর বিধান। মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে ১৫টি স্থানে বাবা-মায়ের প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্যের কথা উল্লেখ করেছেন। পবিত্র কুরআনে ঘোষণা করেছেন, “তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যে, তোমরা তিনি ছাড়া কারো ইবাদত করো না এবং বাবা -মায়ের সাথে সদ্ব্যবহার করো। তাঁদের কেউ অথবা উভয়ে জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়, তবে তাঁদেরকে ‘উফ’ শব্দটিও বলোনা এবং তাঁদেরকে ধমক দিও না এবং তাঁদের সাথে শিষ্টাচারপূর্ণ কথা বলো। (সুরা বনি ইসরাঈল, আয়াত: ২৩)।

মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, “বাবার সন্তুষ্টিতে মহান রবের সন্তুষ্টি, বাবার অসন্তুষ্টিতে মহান রবের অসন্তুষ্টি।” মা-বাবার সন্তুষ্টিই আল্লাহর সন্তুষ্টির পূর্বশর্ত। দুনিয়ার সব দরবারের সেরা দরবার, যে দরবারের দোয়া আল্লাহ কখনো ফেরত দেন না, সে দরবার হলো মা-বাবার দরবার।

লেখক: অর্থ সম্পাদক, চট্টগ্রাম দক্ষিণজেলা আওয়ামীলীগ, সম্পাদক- দৈনিক পূর্বদেশ

Spread the love

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version