বাঁশখালী ( Banshkhali ) বেড়িবাঁধ নির্মাণে আলোর মুখ

e98e7d7ee48856d687127121e9ed4c41

বাঁশখালী টাইমস ডেস্কঃ

অবশেষে আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে বাঁশখালীবাসীর দীর্ঘদিনের  স্বপ্নের বেড়িবাঁধ এর কার্যক্রম। খুব শিগ্রই নির্মাণ কাজ  শুরু হতে যাচ্ছে । ২শ’ ৫১ কোটি টাকার প্রকল্পে ইতোমধ্যে ৩৩টি প্যাকেজে কাজ পায় ৬টি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। বাঁশখালীবাসীর দীর্ঘদিনের কাঙিক্ষত স্বপ্ন বাস্তবায়নে যাতে কোন ধরনের দুর্নীতি না হয় সে ব্যাপারে প্রশাসনের কঠোর নজরদারির দাবী জানিয়েছেন উপকূলীয় জনগণ। এদিকে যার প্রচেষ্টায় বাঁশখালীবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্নের বাচ্চবায়ন হতে চলেছে বাঁশখালীর ( Banshkhali )  সাংসদ আলহাজ্ব মোচ্চাফিজুর রহমান চৌধুরী কাজে কোন ধরনের অনিয়ম এবং দুর্নীতি সহ্য করা হবে না বলে স্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, পুকুরিয়ায় ১২শ’ ৬৯ মিটার, সাধনপুরে ২১শ’ ৭৯ মিটার, খানখানাবাদে ৪ হাজার ৫শ’ মিটার, বাহারছড়ায় ৬শ’ মিটার, গন্ডামারায় ১৪শ’ মিটার ও ছনুয়ায় ৩ হাজার ২শ’ মিটার স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজ করা হবে উপরোক্ত বরাদ্দের প্রেক্ষিতে। প্রতিটি কাজকে আলাদা প্যাকেজের মাধ্যমে টেন্ডার করা হয়েছে।

তার মধ্যে হাছান ব্রাদার্স ২০টি প্যাকেজ, মেসার্স মশিউর রহমান এন্ড চৌধুরী ৮টি প্যাকেজ, মোচ্চফা এন্ড সন্স্‌ ২টি প্যাকেজ, মেসার্স আরাধনা এন্টারপ্রাইজ ২টি প্যাকেজ ও মেসার্স নিজাম ট্রেডার্স ১টি প্যাকেজ এর টেন্ডার মূলে কাজ পেয়েছে। অপরদিকে আলম এন্ড ব্রাদার্স বিগত বেশ কিছুদিন যাবৎ থেকে মাটির কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। বাঁশখালীবাসী বিগত ১৯৯১ এর ২৯ এপ্রিলের প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ের পর থেকে বেড়িবাঁধ নিয়ে নানা ধরনের সমস্যায় ভুগে আসছেন। প্রতি অমাবশ্যাপূর্ণিমার জোয়ারে উপকূলীয় জনগণ ভাঙা বেড়িবাঁধের মাধ্যমে পানি প্রবেশ করায় সাধারণ জনগণকে নানা ভাবে ভোগান্তির শিকার হতে হয়। তার উপর সম্প্রতি বয়ে যাওয়া রোয়ানুর আঘাতে বাঁশখালীর ( Banshkhali ) উপকূল আরো তছনছ হয়ে পড়ে। রোয়ানুতে আবারো প্রাণ হারায় ছনুয়া, গন্ডামারা ও খানখানাবাদ এলাকার ১০ জন। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে বাঁশখালীর উপকূলীয় বেড়িবাঁধ নির্মাণে যে তোড়জোড় শুরু করেছিল দ্রব্য মূল্য বৃদ্ধি না হলে এর আগেই এ কাজ শুরু হতো। প্রথম পর্যায়ে ২শ’ ৯ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদানের পর কাজ শুরু হলে এতদিন কাজের প্রায় সমাপ্তির পথে থাকতো। কিন্তু দ্রব্য মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় এই কাজের পুনঃটেন্ডার ২শ’ ৫১ কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, বিগত দিনে গন্ডামারা ইউনিয়নের বাংলা বাজার এলাকা, খানখানাবাদের ঈশ্বর বাবুর হাট এলাকা, কাথারিয়া ইউনিয়নের বেড়িবাঁধ, শেখেরখীর ইউনিয়নের অভ্যন্তরীণ বেড়িবাঁধ, ছনুয়া ও পুঁইছড়ি ইউনিয়নের অভ্যন্তরীণ বেড়িবাঁধের উন্নয়নমূলক কার্যক্রম হয়েছে। এদিকে বাঁশখালীর ( Banshkhali ) সাধনপুর এলাকায় শঙ্খ নদীর ভাঙন, খানখানাবাদ, বাহারছড়া, সরল, গন্ডামারা ও ছনুয়ায় বঙ্গোপসাগরের ভাঙন এছাড়াও কাথারিয়া, পুঁইছড়ি, শীলকূপ, শেখেরখীল এলাকার অভ্যন্তরীণ বেড়িবাঁধের ভাঙন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে এবং ইতোমধ্যে বেশ কিছু এলাকায় বেড়িবাঁধের নির্মাণ কাজ হয়েছে। ১৯৯১ এর ২৯ এপ্রিলের প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ে বাঁশখালীর উপকূলীয় এলাকার অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ অকালে প্রাণ হারায়। এছাড়া কোটি কোটি টাকার সম্পদ ধ্বংস হয়। বাঁশখালীর উপকূলে স্থায়ী বেড়িবাঁধ না থাকায় বিগত দিনগুলোতে বাঁশখালী উপকূলীয় এলাকার কয়েক কিলোমিটার জায়গা সাগর গর্ভে বিলীন হয় এবং স্থায়ী বেড়িবাঁধ না থাকায় যে কোন অমাবশ্যা পূর্ণিমায় সাগরে জোয়ারের পানিতে ভাসতে হয় উপকূলবাসীকে। একদিকে বঙ্গোপসাগর, অপরদিকে শঙ্খ নদীর ভাঙনসব মিলিয়ে বাঁশখালীর ভাঙন রোধ করতে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের কোন বিকল্প নেই।

এই গুরুত্ব বিবেচনা করে বাঁশখালীর ( Banshkhali ) সাংসদ সরকারের মাধ্যমে যে বিশাল অংকের বরাদ্দ আনতে সক্ষম হয়েছেন সে কাজের যথাযথ বাচ্চবায়ন চায় স্থানীয় জনগণ। এ ব্যাপারে উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবদুল গফুর বলেন, বাঁশখালীবাসীর দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন এ কাজের মাধ্যমে বাচ্চবায়ন হবে। এ কাজে যাতে কোন ধরনের দুর্নীতি না হয় সে ব্যাপারে তিনি প্রশাসন এমনকি সেনাবাহিনীর হচ্চক্ষেপ কামনা করেন। পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপপ্রকৌশলী ধীমান কৃষ্ণ চৌধুরী বলেন, বর্তমান কাজে যে ভাবে টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। সে অনুসারে কাজ করতে বাধ্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। পাউবো’র পক্ষ থেকে কাজে কোন ধরনের অনিয়ম সহ্য করা হবে না। এদিকে বাঁশখালীবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন বাচ্চবায়ন ও বাঁশখালীর উপকূলে স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণ সম্পর্কে বাঁশখালীর সাংসদ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অর্থ ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সদস্য আলহাজ্ব মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, আ’লীগের রাজনীতি হচ্ছে গণমানুষের রাজনীতি। উন্নয়নের রাজনীতি। এ ধারাকে বিশ্বাস করে বাঁশখালীর সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে এলাকার উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি। বাঁশখালীর ( Banshkhali ) উপকূলে স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজ শেষ হলে উপকূলবাসী দীর্ঘদিনের অভিশাপ থেকে মুক্তি পাবে।

 

 

Spread the love

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *