তাফহীমুল ইসলাম (বাঁশখালী টাইমস): বাঁশখালী ফাউন্ডেশনের ২৭তম বৃত্তি পরীক্ষার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান বাঁশখালী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে আজ।
এতে সভাপতি হিসেবে ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যক্ষ নুরুল আমিন, প্রধান অতিথি হিসেবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ইফতেখার উদ্দীন চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান মোল্লা, বাঁশখালী উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রবিউল হোসেন, সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আরিফুল হক মৃদুল, সাবেক পৌর মেয়র কামরুল ইসলাম হোসাইনি, দৈনিক পূর্বদেশের সিনিয়র রিপোর্টার আবু তালেব বেলাল, সাহিত্য সম্পাদক অধ্যাপক কবি কমরুদ্দিন আহমদসহ সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ।
প্রফেসর ইফতেখার উদ্দীন চৌধুরী প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বৃত্তি পরীক্ষার মহত্ব তুলে ধরে বলেন, “আমি ছাত্র থাকাবস্থায় কোনোদিন পরিবার থেকে টাকা নিইনি লেখাপড়ার জন্য। বিভিন্ন বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে বৃত্তিপ্রাপ্ত টাকা দিয়েই লেখাপড়া চালিয়েছি। পরিবারকেও সহযোগিতা করেছি বৃত্তির টাকা দিয়ে”।
প্রধান অতিথি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, মহানবী (সাঃ) বলেছিলেন ‘দেশপ্রেম ঈমানের অঙ্গ’। সবাইকে লেখাপড়া করে দেশের জন্য কাজ করতে হবে। দেশকে ভালোবেসে দেশের কল্যাণে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রচেষ্টা চালাতে হবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অসহায় মানুষের সেবার ব্রত নিয়ে সর্বপ্রথম ‘মুসলিম সেবা সমিতি’ প্রতিষ্ঠা করেন এবং সেই সংগঠনের উদ্যোগে প্রতি রোববারে বাড়ি-বাড়ি গিয়ে চাল তুলে আনতেন। তা দিয়ে গরীব, অসহায় মানুষদের সাহায্য- সহযোগিতা করতেন। তিনি আরো বলেন, বাঁশখালী আমার কাছে একটি পরিচিত নাম। আমি সর্বপ্রথম বাঁশখালী আসি ১৯৯১ সালে ঘূর্ণিঝড় হওয়ার পর কদমরসুল গ্রামে মুজিবুর রহমান প্রতিষ্ঠিত স্কুলে। প্রফেসর আসহাবুদ্দীন কবি ছিলেন। তিনি বাঁশখালীরই কৃতিসন্তান। অনেক উঁচু মাপের মানুষ ছিলেন তিনি। তাছাড়াও তিনি বাঁশখালীর বিশিষ্টজন ও নেতাদের নাম উল্লেখ করে তাদের সাথে সুসম্পর্কের কথা বলেন। বাঁশখালী একটি সম্ভাবনাময় জনপদ। সবাই এগিয়ে এলে বাঁশখালী দেশের অন্যতম উপজেলায় রূপান্তরিত হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান মোল্লা বলেন, আমি গর্ব করে বলি বাঁশখালী ফাউন্ডেশন আমার সংগঠন। আমরা ছাত্র থাকাবস্থায় গল্প, কবিতা, উপন্যাসের বই পড়তাম। কিন্তু বর্তমানের শিক্ষার্থীদের মধ্যে তেমন দিকটা লক্ষ্য করা যায় না। বর্তমানের শিক্ষার্থীরা মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত। আমি সবার সাথে পরামর্শ করে বাঁশখালীর সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মোবাইল নিষিদ্ধ করবো।
২৭তম মেধাবৃত্তি পরীক্ষায় প্রথম হওয়া নাপোড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র পামির ভট্টাচার্যের কাছে অনুভূতি জানতে চাইলে বাঁশখালী টাইমসকে সে জানায়- “আমি বৃত্তি পেয়ে আনন্দিত, আমার খুবই ভালো লাগছে। আমি ইতিপূর্বে আরো পনেরোটির অধিক বৃত্তি পেয়েছি’। তার বাবা জগন্নাথ ভট্টাচার্য জানান, আমরা স্বামী, স্ত্রী দু’জনই শিক্ষক। ছেলে বৃত্তি পাওয়ায় খুব খুশি লাগছে। বৃত্তির পাওয়ার পেছনে সবচেয়ে যাদের অবদান পামিরের শিক্ষকবৃন্দ ও মায়ের প্রতি কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেন জগন্নাথ ভট্টাচার্য।
উল্লেখ্য, অনুষ্ঠান শুরু হয় বেলা বারোটার দিকে পুঁইছড়ি ইসলামিয়া ফাযিল মাদরাসার শিক্ষক মাওলানা ক্বারী নুরুল আমিনের কুরআন তেলাওয়াত ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে। এরপরে সংগঠনের অধ্যক্ষ নুরুল আমিনের স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠানের মূল কার্যক্রম।