তাফহীমুল ইসলাম, বাঁশখালী- মহেশখালীর পর এবার চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে আত্মসমর্পণ করছে অর্ধশতাধিক ডাকাত ও জলদস্যু। তারা আগামী ১২ নভেম্বর বৃহস্পতিবার বেলা এগারোটায় বাঁশখালী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের হাতে অস্ত্র ও গোলাবারুদ জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করবেন।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার ছনুয়ার ডাকাত সর্দার ইউনুস মেম্বার ও আবদুল হাকিম প্রকাশ বাইশ্যা ডাকাত ও তাদের অনুসারীসহ বাঁশখালীর বিভিন্ন এলাকার বিশ জনেরও অধিক ডাকাত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে অস্ত্র তুলে দিয়ে আত্মসমর্পণ করবেন। পাশাপাশি মহেশখালী, পেকুয়া, কুতুবদিয়া, চকরিয়াসহ বৃহত্তর চট্টগ্রামের অর্ধ শতাধিক ডাকাত এই অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে আত্মসমর্পণের কথা রয়েছে। বাঁশখালীর ইউনুস মেম্বার ও আবদুল হাকিমসহ আত্মসমর্পণে আগ্রহী এই ডাকাতদের মধ্যে অনেককে ইতিমধ্যে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সেফ হোমে নেয়া হয়েছে। এই আত্মসমর্পণ প্রক্রিয়ায় এক বেসরকারি টিভি চ্যানেলের সাংবাদিক আকরাম হোসাইন মধ্যস্ততা করছেন বলে জানা গেছে।
বাঁশখালীতে জলদস্যুর হাতে এপর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছে ৫৬ জেলে। চিহ্নিত জলদস্যুদের আত্মসমর্পণের খবরে বাঁশখালীর আতঙ্কগ্রস্থ জেলে পরিবার ও এলাকাগুলোতে বইছে স্বস্তির হাওয়া। এই আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছাড়াও আইজিপি, স্বরাষ্ট্র সচিব, র্যাব ডিজিসহ সরকার ও প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকতারা উপস্থিত থাকবেন বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে। আত্মসমর্পণে মধ্যস্থতাকারী সাংবাদিক আকরাম হোসাইন বলেন, ‘বাঁশখালীসহ চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকার অর্ধ শতাধিক ডাকাত, জলদস্যু স্বাভাবিক জীবনে ফেরার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তারা বাঁশখালী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে অস্ত্র, গোলাবারুদ জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করবেন।’
এদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে বাঁশখালী উপজেলা ও চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ব্যাপক তৎপরতা লক্ষ্য করা গেছে। ইতিমধ্যে উপজেলার চাম্বল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে প্রস্তুত করা হয়েছে হ্যালি পেড। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বহনকারী হেলিকপ্টার সেখানে অবতরণ করবে। আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে চলছে প্যান্ডেল নির্মাণসহ প্রয়োজনীয় প্রস্তুতির কাজ। এপ্রসঙ্গে বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ রেজাউল করিম মজুমদার বলেন, ‘ডাকাত ও জলদস্যুদের আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে আগামী বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাঁশখালী আসছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে আমাদের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতির কাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।’
উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৮ সালের ২০ অক্টোবর কক্সবাজারের মহেশখালীতে ৪৩ জলদস্যু এবং ২০১৯ সালের ২২ নভেম্বর দ্বিতীয় ধাপে ৯৬ জন ডাকাত ও জলদস্যু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে অস্ত্র জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করেন।