মুহাম্মদ মিজান বিন তাহের: বাঁশখালী ( Banshkhali ) উপজেলার পুঁইছড়ি বিটের অধীনে ২৫শ একর বনভূমি দখল করে বনদস্যুরা অস্ত্রের মহড়া চালিয়ে যাচ্ছে। বনরক্ষীদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে পাহাড়ে প্রবেশে বাধা প্রদান করছে তারা। বনদস্যুরা প্রতিনিয়ত বন-অফিস প্রাঙ্গণে গিয়ে কর্মকর্তাদের প্রাণনাশের হুমকিও দিচ্ছে বলে জানা যায়।
কক্সবাজারের পেকুয়া ও চট্টগ্রামের বাঁশখালীর ( Banshkhali ) পাহাড়ী সীমান্ত এলাকা হওয়ায় স্থানীয় ২ জনপ্রতিনিধি ও পেকুয়ার দূর্ধষ দা-বাহিনী বনভূমি দখলের মদদদাতা হিসাবে চিহ্নিত করেছে বন-অফিস। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১৫ মার্চ) পুঁইছড়ি বিট-কর্মকর্তা জহিরুল কবির শাহিন জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে ৬ জনের নাম উল্লেখ করে বাঁশখালী ( Banshkhali ) থানায় সাধারণ ডায়েরী দায়ের করেছে।
সাধারণ ডায়েরীর বিষয়টি স্বীকার করে থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ সালাহ উদ্দিন বলেন, পার্শ্ববর্তী উপজেলা পেকুয়ার দা-বাহিনী পুঁইছড়ির গহীন অরণ্যে গাছ কর্তনের কথা শুনেছি। তবে সাধারণ ডায়েরির মাধ্যমে জানতে পারলাম এদের কর্ম-তৎপরতা। শীঘ্রই এদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও তিনি জানান।
স্থানীয় বন-অফিস সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার জলদী অভয়ারণ্য রেঞ্জের পুঁইছড়ি বিটের আওতাধীন ২৫শ একর বনভূমির মধ্যে ২০০৬-০৭ সনের সৃজিত বাগানে বনরক্ষীরা নিত্যদিনের মত টহল দিতে পাহাড়ের ভেতরে প্রবেশ করে। পথিমধ্যে দা-বাহিনীর ২০-৩০ জন সদস্য ও স্থানীয় কিছু দুষ্কৃতিকারী মিলে বনরক্ষীদের পথরোধ করে। এ সময় বনদস্যুরা আধুনিক আগ্নেয়াস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ফেলে বনরক্ষীদের।
প্রাথমিকভাবে কাউকে হতাহতের মত ঘটনা না-ঘটলেও পুনরায় বাগানে প্রবেশ করলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে বনরক্ষীদের ছেড়ে দেয় বনদস্যুরা। এদিকে পাহাড়ের ভেতর বনদস্যুদের প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়ায় আতঙ্কিত স্থানীয়রা।
এ ব্যাপারে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, পুঁইছড়ি ইউনিয়নের ২ জনপ্রতিনিধির মদদে পেকুয়ার দূর্ধর্ষ দা-বাহিনীর সদস্যরা গাছ কেটে পাহাড় উজাড় করার পায়তারা শুরু করেছে। এমনকি এবাহিনী পাহাড়ের গহিনে ঘাঁটিও গেড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয়রা। এ বাহিনীর রয়েছে অত্যাধুনিক অস্ত্রসহ প্রশিক্ষণের ঘাঁটি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান মোল্লা জানান, রেঞ্জ কর্মকর্তার মাধ্যমে বিষয়টি অবহিত হয়েছি। গুরুত্বসহকারে বিষয়টি খতিয়ে দেখে দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে জলদী অভায়রণ্য রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা উত্তর কুমার পালের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, দা-বাহিনী ও বনদস্যুদের বেপরোয়া তান্ডবে আমাদের বনরক্ষীরা জিম্মি হয়ে পড়েছে। বিষয়টি আমার বন বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। তাছাড়া বনরক্ষীদের নিরাপত্তার চেয়ে বাঁশখালী ( Banshkhali ) থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও করা হয়েছে বলে তিনি জানান।