বাঁশখালীর পরিবহন সমস্যা, দায় কার?
আবু ওবাইদা আরাফাত
এক অদ্ভুত অভিভাবকহীনতায় ভুগছে বাঁশখালীবাসী। গুটিকয়েক অসাধু ব্যক্তির মদদে চলা মালিক সমিতির কাছে নিত্য পরাস্ত হচ্ছে বাঁশখালীর আপামর জনতা।
অতি সম্প্রতি অন্যায়ের প্রতিবাদের জবাবে বাস হেলপার কর্তৃক ব্যাংক কর্মকর্তা যাত্রীর উপর হামলার ঘটনায় অনুমেয় কতটা নৈরাজ্যে ডুবে আছে গোটা বাঁশখালী।
বাঁশখালী রুটের পরিবহণ সিন্ডিকেট যেন আইন ও বিচারের উর্ধ্বে। আমাদের প্রশাসন ও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হস্তক্ষেপে আজ পর্যন্ত দৃশ্যমান কোন পদক্ষেপ দেখা যায়নি।
সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণে তাদের একচেটিয়া ত্রাসের বিরুদ্ধে মানুষ সোচ্চার হলেও, রাস্তার প্রতিবাদ ‘সমাধান’ পর্যন্ত গড়ায় না। কোন এক অদৃশ্য শক্তির মোহে তাদের নৈরাজ্য যেন অপ্রতিরোধ্য!
আমাদের নাগরিক দুর্দশার ফিরিস্তি শুনার দায় ও সময় কোনটাই নেই বাঁশখালীর তথাকথিত ‘অভিভাবক’দের।
দুঃখজনক হলেও লিখতে বাধ্য হলাম-
নিজ এলাকার প্রতি ন্যুনতম প্রেম ও দেশাত্মবোধ থাকলেই বাঁশখালীবাসীর
পরিবহণ সমস্যা ২ দিনেই বসে ঠিক করা সম্ভব।
এবার আসি বাঁশখালী রুটে চালিত বাসগুলোর সিট প্রসঙ্গে-
এই চিপায় আটকে আছে বাঁশখালীর যাত্রীসাধারণের ভাগ্য! এমন সোজা (৯০ ডিগ্রী) সিট দেখার সৌভাগ্যটাও শুধু আমাদের ভাগ্যে। এই চিপায় বসে দেড়-দুই ঘন্টা চড়লে পায়ের নলা ও কোমরের গোমর ব্যথা ভুক্তভোগীই জানবেন। একটু মোটা হলেই তিনি মোটা হবার প্রায়শ্চিত্ত নীরবে সয়ে যান।
পেছনে ৫ জনের সিটকে অসাধু সিন্ডেকেটিরে কেটেকুটে ৬ সিটের আদলে নিয়ে এসেছে। উচ্চ বাক্য করতেই বলেন- সিটের মাথা দেখেন!
নতুন ব্রীজে জ্যাম হোক আর না হোক ১৫ মিনিট থেকে শুরু করে স্টার্ট দেয়ার চ্যাচড়ামি চলতে থাকে ঘন্টাবধি।
আমড়া-বাদাম, চায়না কমলা, সম্পাপুড়ি, পেপার ওয়ালার হাকডাক শেষ হলেও চাকা ঘুরে না। চেইন ওয়ালার লেকচার স্পেশাল বাসের রিগুলার টপিক্স। শুনে নেয়া যাক- ‘এই যে দেখুন, এই চেইনটা নিলে ঝাপটাবাজদের কবলে পড়তে হবেনা, জীবনের ঝুঁকি নিতে হবে না। রঙ যাবে না, ডিসকালার হবেনা। যত ঘষবেন তত পূর্ণিমার চাঁদের মত ঝিকঝিক করবে” :p
এই বেদনা ও বিনোদন হতে যেন আমাদের মুক্তি নেই।
স্পেশাল ও সুপারের নামে বিরতিহীন ভেল্কিবাজি ও যাত্রী হয়রানী বন্ধে অসাধু সিন্ডেকেটিদের ঘেটি ধরার মতো সাহসী নেতা বাঁশখালীতে আজ পর্যন্ত তৈরী হয়নি।
সুতরাং আমরা বিরতিহীনভাবে হয়রানির শিকার হতেই থাকবো।
লেখক: প্রাবন্ধিক