মুহাম্মদ মিজান বিন তাহের: আজ ৩ নভেম্বর। বাঙালি জাতির ইতিহাসে আরেকটি কলঙ্কিত অধ্যায়, জেল হত্যা দিবস। ১৯৭৫ সালের এ দিনে জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী এবং এএইচএম কামারুজ্জামানকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতর গুলি করে ও বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে নিমর্মভাবে হত্যা করে স্বাধীনতাবিরোধীরা। এ দেশে যেন কোনোদিন স্বাধীনতার সপক্ষের শক্তি মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে সেই ষড়যন্ত্র থেকেই নিরাপদ স্থান জেলখানার অভ্যন্তরে এ হত্যাকান্ড সংঘটিত করে তারা।
সারাদেশের মত যথাযোগ্য মর্যাদায় বাঁশখালীতে জেল হত্যা দিবস পালন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে বাঁশখালী উপজেলা আওয়ামীলীগ,যু্বলীগ ও ছাত্রলীগের উদ্যোগে শনিবার (০৩ নভেম্বর) বিকেলে উপজেলা পরিষদ মাঠে
আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল খানখানাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মাহাফুজুর রহমান চৌধুরীর সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অর্থ ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আলহাজ্ব মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী এমপি।
এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন, সরল ইউপি চেয়ারম্যান রশিদ আহমদ চৌধুরী, বাঁশখালী থানা যুবলীগের সভাপতি চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম, কালীপুর ইউপি চেয়ারম্যান এড.আ.ন.ম শাহাদত আলম, চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইয়াছিন,চেয়ারম্যান কফিল উদ্দীন চৌধুরী,চেয়ারম্যান বদরুদ্দীন উদ্দীন চৌধুরী, চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান চৌধুরী, বাঁশখালী উপজেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সভাপতি রেহেনা আক্তার কাজেমী,গন্ডামারা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মাষ্টার শামসুল আলম,সাবেক ছাত্রলীগ নেতা এম এ মালেক মানিক, বাহারছড়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মোস্তাক আলী চৌধুরী টিপু, পুইছড়ি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মুজিবুর রহমান চৌধুরী, বাঁশখালী আওয়ামীলীগ যুবলীগ নেতা আবুল কালাম আজাদ, সরল ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক নুর মোহাম্মদ, বাঁশখালী পৌরসভা যুবলীগের আহবায়ক হামিদ উল্লাহ, সহ আরো অনেকে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমপি মোস্তাফিজ বলেন,পচাঁত্তরের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর দ্বিতীয় কলঙ্কজনক অধ্যায় এই দিনটি।
মুক্তিযুদ্ধকালে মুজিবনগর সরকারের গুরুত্বপূণর্ পদগুলোতে থেকে জাতীয় চার নেতা ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করেছিলেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনুপস্থিতিতে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি ছিলেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম। ওই সরকারের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তাজউদ্দীন আহমদ, অথর্মন্ত্রী ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী, খাদ্য ও ত্রাণমন্ত্রী এএইচএম কামারুজ্জামান।
শুধু মুক্তিযুদ্ধ নয়, সব আন্দোলন-সংগ্রামে এই চার নেতা ঘনিষ্ঠ সহযোদ্ধা হিসেবে বঙ্গবন্ধুর পাশে থেকেছেন। বিভিন্ন সময় বঙ্গবন্ধুকে যখন কারাগারে বন্দি রাখা হয়েছে তখন আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব দিয়ে এই চার নেতা আন্দোলন-সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়েছেন।তাই হয়তো ঘাতক চক্রের লক্ষ্য ছিল বাঙালিকে নেতৃত্বশূন্য করে বাংলাদেশকে আবার পাকিস্তানের পদানত করে মুক্তিযুদ্ধের পরাজয়ের প্রতিশোধ নেয়া। এ কারণে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানে আটক করে রাখার পর যে চার নেতা বঙ্গবন্ধুর হয়ে যোগ্য নেতৃত্ব দিয়ে বিজয় ছিনিয়ে আনেন সেই চার নেতাকেও বঙ্গবন্ধুর মতো নিমর্মভাবে হত্যা করা হয়।
আমি উন্নয়নের রাজনীতিতে বিশ্বাসী,
কোনো প্রতিহিংসার রাজনীতিতে নয়। যার ফলে বর্তমান সরকারের আমলে বাঁশখালীর সর্বত্র উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে পেরেছি।
তারই ধারবাহিকায় গত ৫ বছরে হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ হয়েছে বাঁশখালীতে। এর আগের চারটি নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী বিজয়ী হলেও এবার চার বছরে যে কাজ হয়েছে, তা ৪০ বছরের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। জাতীয় সংসদে দাবি উত্থাপন করে আমার এলাকার পশ্চিম বাঁঁশখালীর উপকূলবাসীর জন্য বেড়িবাঁধ নির্মাণ প্রকল্পে প্রায় ৩ শ’ কোটি টাকার বরাদ্দ এনেছি। হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স ও এক্স-রে মেশিন এনেছি,থানায় নতুন গাড়ি, বিভিন্ন এলাকায় রাস্তাঘাট সংস্কার,বিদ্যুৎতায়, আদালত ভবন ও ফায়ার সার্ভিসের উদ্বোধন সহ উপজেলা পরিষদ ভবন নির্মাণের কাজ চলছে।
সব মিলে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার কাজ চলছে বাঁশখালীতে।আজকে ও পুইছুড়ি ইউনিয়নের বদ্দার হাট এলাকায় ১১ কোটি ২৯ লাখ টাকা ব্যায়ে সুইস গেইট উদ্বোধন করেছি।উন্নয়নের এ ধারা অব্যাহত রাখার জন্য ফের নৌকার ওপরেই আস্থা রাখতে হবে জনগণকে। বাঁশখালীর উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে গতবার ও আমাকে ডেকে নেত্রী নমিনেশন দিয়েছেন। এবার ও আমাকে নেত্রী নমিনেশন দিবে বলে আমার শতভাগ আশা ইনশাআল্লাহ। তবে দল থেকে যদি নমিনেশন না ও পান তিনি দলের সিদ্ধান্তের বাইরে যাবেন না।