বাঁশখালীতে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া খুনের ঘটনাগুলো অনলাইন-অফলাইনে প্রচার করা কতটুকু যৌক্তিক!
পর পর তিনটি নৃশংস খুন!
সচেতন মানুষের বিবেককে নাড়া দেয়।
অনেকই ঘটনাগুলোর প্রচার করে নিজেেদের পুঞ্জিভূত ক্ষোভকে প্রশমন করার চেষ্টা করছেন।
আবার অনেকেই ঘটনার প্রচারকে বাঁশখালীর ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে মনে করেন।
আসলে ঘটনা কেমন।
কি করা উচিত!
একটু আলোচনা করা যাক।
আমেরিকান মনোবিজ্ঞানী #উইনকনসিন_ও_কলম্বিয়া_বিশ্ববিদ্যালয় এর খ্যাতনামা প্রফেসর আবরাহাম মাসলো হায়ারার্কির আলোকে বিষয়টি বিবেচনা করা যায়।
তিনি তাঁর হায়ারার্কিকে পাঁচটি ধাপে ভাগ করেন।
হায়ারার্কির ১ম ধাপটি হলো জৈবিক চাহিদা(Physiological needs): যেখানে খাদ্য,পানি,তাপমাত্রা এবং বিশ্রাম প্রভৃতির কথা বলছেন। মানুষ যখন মৌলিক চাহিদায় স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়।অর্থাৎ প্রথম ধাপটি সম্পন্ন হলেই দ্বিতীয় ধাপে আরোহণ করেন।
২য় ধাপটি হলো নিরাপত্তা চাহিদা(Safety needs):
ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিকসহ সকল নিরাপত্তার কথা বলা হয়েছে। কেউ অভুক্ত থেকে নিরাপত্তার কথা চিন্তা করবেন না নিশ্চয়।
নিরাপত্তা নিশ্চিত হলেই ৩য় ধাপে পদার্পণ করতে চায়।
তৃতীয় ধাপটিতে ভালোবাসা,আদর-স্নেহ(Love and affection) এর কথা বলা হয়েছে।যেখানে বন্ধুত্ব,ভালোবাসা,প্রেম প্রভৃতির অন্তর্ভুক্ত করেন।
১ম ও ২য় পর্যায়ে স্বয়ংসম্পূর্ণ অর্জন করেই বন্ধুত্ব ও ভালোবাসা চাইবেন।
কথায় আছে “অভাব যখন দরজায় এসে দাঁড়ায় ভালোবাসা তখন জানালা দিয়ে পালায়”।
৪র্থ ধাপ হলো সম্মান চাহিদা(Steem needs):
সম্মান, আত্মমর্যাদা, অন্যজনের কাছ থেকে শ্রদ্ধা, সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা ইত্যাদি অর্জন করতে চাইবেন। উপরোক্ত তিনটিতে সন্তুষ্টি ব্যতিরেকে নয়।
সর্বশেষ ব্যক্তি পঞ্চম ধাপে পৌঁছাতে চেষ্টা করবেন।
৫ম ধাপ তথা সর্বশেষ পর্যায়টি হলো আত্ম- উপলদ্ধি বা স্ব বাস্তাবতা( Self actualization) :
সর্বোচ্চ পদে,সর্বোচ্চ সম্মানে পৌঁছানোর চেষ্টা করেন।
যা সর্বোচ্চ ধাপ হিসেবে বিবেচনা করে ব্যক্তি বা রাষ্ট্র নিজেকে সফলতার সর্বোচ্চ শিখরে আরোহণ করে বলে মনে করেন।আত্ম সন্তুষ্টিতে পৌঁছান।
কখনো ১ম ধাপকে মিনিমাইজড করে ২য় ধাপে আরোহণ করা আবার ২য় ধাপকে অবজ্ঞা করে ৪র্থ ধাপে পৌঁছানোর চেষ্টা টেকসই নয়।
অনুরুপভাবে বাঁশখালীর মানুষের সমাজিক নিরাপত্তা, জীবনের নিরাপত্তাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হওয়ার দরুণ প্রতিবাদ থেকে দুরে থাকবেন।
তা অবৈজ্ঞানিক এবং অবান্তর। অন্যদিকে অন্যায়কে
প্রশ্রয় দেওয়ার শামিল।
লেখক
আনিসুর রায়হান
শিক্ষার্থী মনোবিজ্ঞান বিভাগ
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়