মু.মিজান বিন তাহের: করোনাভাইরাস সংক্রমণের সময়ে চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার ৪০টি কমিউনিটি ক্লিনিকের কর্মীরা কোনো সুরক্ষা ছাড়াই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেবা দিচ্ছেন। গ্রাম এলাকায় ক্লিনিকের অবস্থান হওয়ায় অসচেতন মানুষ প্রতিদিনই ভিড় করছেন ক্লিনিকে। তাছাড়া সরকারিভাবে ক্লিনিকের কর্মীরা হ্যান্ড স্যানিটাইজার বা সুরক্ষা দ্রব্যাদি এখনো পাননি। এ নিয়ে কর্মীদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ১৪টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় ৪০টি কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। ক্লিনিকে সর্দি, কাশি, জ্বরসহ ছোটখাটো রোগ নিয়ে প্রতিদিনই ভীড় করেন গ্রামের রোগিরা। ক্লিনিকে সরকারের পক্ষ থেকে বর্তমানে ২৭ প্রজাতির ওষুধ বিনামূল্যে দেয়া হয়।
কমিউনিটি ক্লিনিকের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এখন উপজেলা ও জেলা হাসপাতালে রোগী কমলেও কমিউনিটি ক্লিনিকে আসা-যাওয়ার সহজলভ্যতা ও গ্রাম এলাকায় অবস্থানের কারণে রোগীর সংখ্যা তেমন কমেনি। এখনো প্রতিদিন গ্রামীণ রোগীরা ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে আসছেন দলে দলে। তারা মাস্ক বা গ্লাভস ব্যবহার না করে হুট করেই ক্লিনিকে ঢুকে স্বাস্থ্যকর্মীদের টেবিলে চলে আসেন। ক্লিনিকের কর্মীরাও তাদেরকে বাধ্য হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে।
কমিউনিটি ক্লিনিকের কর্মীরা জানান, গ্রাম এলাকায় বিভিন্ন দেশ থেকে প্রবাসীরা এসেছেন। তারা তেমনভাবে হোমকোয়ারেন্টাইন মানে না অনেক সময়। অনেককেই চিনিও না । হুট করে চলে আসে ক্লিনিকে। তাদের স্বজনরাই ক্লিনিক নিজ গ্রাম বা পাড়ায় অবস্থানের কারণে চিকিৎসা নিতে আসছেন। এতে করোনা ভাইরাসের ঝুঁকি রয়েছে। তাছাড়া এখন পর্যন্ত ক্লিনিকের স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য নিরাপত্তাসামগ্রী কর্মীরা অনেকে নিজ উদ্যোগেই সাবান, ডেটল বা হ্যান্ড স্যানিটাটাইজার ব্যবহার করে সেবা দিচ্ছেন।
বাঁশখালী উপজেলা কমিউনিটি ক্লিনিক ( সিএইসসিপি) এসোসিয়েশনের সভাপতি আনোয়ারুল আজিম মঈনুল বলেন, এখনো প্রতিদিন ২০-৩০ জন রোগী আসেন। তাছাড়া প্রতিটি গ্রামেই প্রবাসীরা দেশে এসেছেন। তাদের অসচেতন স্বজনরাই কোনো প্রতিরক্ষা ছাড়াই এসেই হুট করে কক্ষে ডুকে যাচ্ছেন। ভিড় না করার অনুরোধ জানালেও তারা কেউ মানেন না। গ্রামের অসচেতন মানুষদের নিয়ে আমাদের কাজ। বর্তমানে লগডাউন সময়ে সাধারণ রোগী হাসপাতালে তেমন যায় না । গ্রামগঞ্জের অধিকাংশ মানুষ ক্লিনিক ছুটে আসেন চিকিৎসা নিতে। আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়ত চিকিৎসা সেবা দিচ্ছি। আমাদেরকে কোন ধরনের মাক্স, হ্যান্ড স্যানিটাইজার বা পিপিই কোন কিছুই দেওয়া হয়নি । অথচ দেশের অনেক জেলা উপজেলায় সিএইসসিপি কর্মিদের সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে করোনার ভাইরাসের এই পরিস্থিতিতে আমরাই সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। তাই আমাদের সুরক্ষা সরঞ্জাম দেওয়া জরুরি। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমরা কিছুই পাইনি।’
এ বিষয়ে বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ শফিকুর রহমান মজুমদার বলেন, উপজেলা কমিউনিটি ক্লিনিকের (সিএইসসিপি) কর্মীদের সুরক্ষার বিষয়ে সরকারের পক্ষে একটা ফান্ড আসবে। ইতিমধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে আমাদেরকে মেসেজ দেওয়া হয়েছে। খুব দ্রুত সময়ে তাদের জন্য সুরক্ষা সরঞ্জাম সরবরাহ করা হবে।