জসীম উদ্দীন: বাঁশখালীতে রমজান মাসেও থেমে নেই পল্লী বিদ্যুতের হয়রানি। গ্রীষ্ম কাল শুরু হতে না হতেই প্রতিনিয়ত বেড়েই যাচ্ছে লোডশেডিং।
কখনো কখনো কোন ধরনের পূর্বে ঘোষনা ছাড়াই ঘন্টার পর ঘন্টা লোডশেডিং হয়। সেই সাথে সামান্য বাতাস শুরু হলেই দিনের পর দিন কোন কারণ ছাড়াই বিদুৎ থাকেনা বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।
বর্তমানে বিশেষ করে পবিত্র রমজান মাস শুরু হলে এই লোডশেডিংয়ের মাত্রা চরমে পৌঁছে যায়। সেহেরি, ইফতার ও তারাবির নামাজ শুরু হলেই পল্লী বিদ্যুৎ আর নাই। এই মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিং নিয়ে পুরো বাঁশখালীর জুড়ে পল্লী বিদ্যুতের আলোচনা-সমালোচনা রয়েছে। আবার কেউ কেউ মনের ক্ষোভ প্রকাশ করে গালি দিচ্ছে এই লোডশেডিং এর জন্য।
এই সমস্যার সমাধানের জন্য সরেজমিনে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে গেলে সংবাদ কর্মীর উপস্থিতি টের পেয়ে সবাই অফিসের চেয়ার টেবিল পেলে চলে যায়। বিশেষ করে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের কোন লোক ক্যামরার সামনে কথা বলেনি।
ভোক্তভোগীরা তাদের মনের ক্ষোভ প্রকাশ করে জানায়, আমাদের বাঁশখালীতে বিদ্যুৎ আসে না শুধু যায় । বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার কথা একটা শিশু বাচ্চারও মনে থাকবে। অন্য দিকে আমাদের ফ্রিজের যে অল্প কাঁচা জিনিস পত্র রয়েছে সেগুলো অনেকবার নষ্ট হয়ে গেছে। নানা দুর্গন্ধ ছড়ায় সেখান থেকে। হচ্ছে নানা ধরনের রোগ। আমাদের প্রতিনিয়ত ক্ষতি ছাড়া লাভ হচ্ছে না। এই ডিজিটাল যুগেও কি আমাদের থেকে প্রচীনকালের চ্যারাগ আর মোমবাতিতে ফিরে যেতে হবে। বাংলাদেশ সরকার নিরবিচ্ছিন্নভাবে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিয়েছে পুরো দেশ জুড়ে। তাইলে আমরা কি বাংলাদেশের বাহিরে আমরা বিদ্যুৎ থেকে এত লোডশেডিং পাচ্ছি কেন। আবার কেউ কেউ ক্ষোভ প্রকাশ করে গালি দেন আবার অন্য কেউ বলে বর্তমানে পল্লীবিদ্যুৎ তালত ভাইয়ের মতো হয়ে গেছে। যেমন, তালতো ভাই বোন মিলে যে মশকারি ও ঠাট্টা করে ঠিক একই ভাবে বর্তমানে পল্লী বিদ্যুৎ আমাদের সাথে একই অবস্থা করতেছে। দেশে একদিকে চলছে করোনা মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউ অন্যদিকে লকডাউন সেইসাথে পল্লী বিদ্যুৎও যদি এই হয়রানি শুরু করে তাহলে আমরা ঠিকমত বসবাস করতে পারবো না। আমরা এটার পরিত্রাণ চাই খুব অল্প সময়ের মধ্যে।
বাঁশখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সভাপতি জাফর আহমেদ বলেন, প্রতিবছর গ্রীস্ম কাল আসলেই একটু সমস্যা হয়। গ্রীষ্মকালে পল্লী বিদ্যুতের লোড একটু বেশি থাকে তাই এই সমস্যা হয়। আমরা নিরবিচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ করার জন্য চট্টগ্রাম দোহাজারী, আনোয়ারা ও পেকুয়া উপজেলা থেকে সংযোগ নিয়েছি। পেকুয়া থেকে যে পাঁচ কেবি বিদ্যুৎ আমরা পাই সেগুলো সরাসরি এস এস পাওয়ার প্লান্টে অর্থাৎ কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে চলে যায়। বাকি সংযোগগুলো দিয়ে পুরো বাঁশখালীতে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে সামান্য হিমশিম হয়। আবার কখনো কখনো বাঁশখালী থেকে দোহাজারীর মধ্যে দুর্গম পাহাড়ে যদি বিদ্যুতের কেবল নষ্ট হয় কিংবা জ্বলে যায়, তাইলে কোথায় নষ্ট হয়েছে এটা খুঁজে বের করতে সময় লাগে তিন ঘন্টা তারপর লাইন মেরামতের কাজ করতে হয়। সব মিলিয়ে আমরা আনোয়ারা থেকে মাটির নিচ দিয়ে যে লাইনের কাজ চলতেছে এটা চালু হয়ে গেলে শতভাগ নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যাবে। সেই সাথে আনোয়ারা উপজেলা থেকে মাটির নিচে যে কাজ গুলো হয়েছে বিদ্যুত সংয়োগ দেয়ার জন্য এই কাজ গুলো করতে সংশ্লিষ্ট টিকাদার একটু গড়িমসি করতেছে তাই আমরা একটু সমস্যায় পড়েছি। সবমিলে আশা করতে পারি ছয় মাসের মধ্যে সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
বাঁশখালী পল্লী বিদ্যুত সমিতির ডি.জি.এম জসীম উদ্দীন মুটোফোনে বলেন, বাঁশখালীতে লোডশেডিং বলতে কিছু নাই। যা সমস্যা গুলো হয় গাছের জন্য হয়ে থাকে। গাছ কাঁটার সময় লাইন বন্ধ রাখতে হয় নইলে বড় ধরনের সমস্যা। রাতে সেহেরীর সময়ও গাছ কাঁটে প্রতিনিয়ত এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি একজন মুসলিম গতকাল তারাবীর নামাজ পড়ার সময় আমার পাঞ্জাবীটাও ভিজে গিয়েছে গরমের ঘামে আমি নিজ থেকে কখনো লাইন বন্ধ করি নাই। যে চলমান সমস্যা গুলো হচ্ছে এগুলো বেশী লোডিংয়ের জন্য হচ্ছে। হঠাৎ লোড নিতে না পেরে পল্লী বিদ্যুত চলে যায় তখনও আমার করার কিছু থাকে না।