বাঁশখালী টাইমস প্রতিবেদন: বাঁশখালী-১৬ আসনে নৌকার প্রার্থী মনোনয়নে এনটিভির খবরের সূত্র ধরে বাঁশখালীর বর্তমান এমপি মোস্তাফিজুর রহমান অনুসারীদের মাঝে উল্লাস চলছে। দলীয় সূত্র উল্লেখ করে চট্টগ্রামের ১৬টি আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী নিশ্চিত হওয়ার খবর দিয়েছে এই চ্যানেলটি।
বিএনপি বা জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট যেখানে ‘সংলাপ’, ‘বৈঠক’- এর মাঝেই আটকে আছে সেখানে আওয়ামী লীগ সারাদেশে পুরোদমে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। ক’দিন আগেই দলীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিশাল বহর নিয়ে দক্ষিণ চট্টগ্রামসহ কক্সবাজারে নির্বাচনী শোডাউন করে গেছে।
নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকলেও আওয়ামী লীগ ভেতরে-ভেতরে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে বলে খবরে প্রকাশ। বাঁশখালী-১৬ আসনে কে মনোনয়ন পাবে সেটা এখনও নিশ্চিত হওয়া না-গেলেও বর্তমান এমপি মোস্তাফিজুর রহমান চলতি এমপি হিসাবে ৫০ ভাগ নিশ্চিত। বাকিটুকু আওয়ামী সভানেত্রীর সুদৃষ্টি।
বাঁশখালীতে আওয়ামী লীগের মনোনয়নের জন্য অন্তত চারজন প্রার্থী প্রস্তুত রয়েছেন। বিচ্ছিন্নভাবে আরও কিছু ব্যক্তি প্রার্থী হওয়ার বাসনা রাখলেও নির্বাচনী মাঠে তারা গুরুত্ব পাচ্ছে না। চারজনের মধ্যে আছেন সাবেক মন্ত্রী আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর ভাগিনাখ্যাত আবদুল্লাহ কবির লিটন। বাঁশখালীতে তাঁর মনোনয়ন চেয়ে তাঁর অনুসারীরা ব্যানার দিয়ে ছেঁয়ে ফেলেছে। বাঁশখালীতে তাঁর একনিষ্ট কিছু অনুসারী রয়েছে, যেটা তিনি বঙ্গবন্ধুর শাহাদতবার্ষিকী অনুষ্ঠানে দেখিয়ে দিয়েছিলেন। তবে প্রার্থী হওয়াটা নির্দিষ্ট ঘোষণা না-আসা পর্যন্ত কেউই বলতে পারছে না।
বাঁশখালীতে আওয়ামী লীগের আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশী দৈনিক পূর্বদেশের সম্পাদক, দক্ষিণজেলা আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক, শিল্পপতি মুজিবুর রহমান সিআইপি। তিনিও বছর জুড়ে নানা সামাজিক কর্মকান্ডে সরব আছেন। মাস্টার নজির আহমদ ট্রাস্টের ব্যানারে বিভিন্ন সামাজিক কাজে অনুদান দিয়ে সমানে আলোচনায় আছেন।
বাঁশখালীতে হেভিওয়েট প্রার্থী বলতে অনেকেই সাবেক মেয়র মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরীকেই মনে করছেন। তিনি যেন বর্তমান এমপি মোস্তাফিজুর রহমানের গলার কাঁটা হয়ে আছেন! মহাজোট থেকে যদি জাতীয় পার্টি নির্বাচন করে তবে অনেকেরই ধারণা বাঁশখালী-১৬ আসনে মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরীই হবেন নৌকার মাঝি! তখন মহাজোটের স্বার্থে মোস্তাফিজুর রহমানকে ছেড়ে দিতে হতে পারে এই আসন!
এদিকে আজ ৫ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর সাথে গণভবনে সংলাপে বসেছে জাতীয় পার্টি। তাতে প্রতিনিধিদলে আছেন মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরীও।
তিনিও বাঁশখালীতে গত বছর থেকে চোখে পড়ার মতো দৌড়ঝাঁপ করছেন। কোনও অনুষ্ঠানই বাদ দিচ্ছেন না। সবকিছু মিলিয়ে মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী মনোনয়নে অন্যদের চেয়ে এগিয়ে আছে, যদি না তারা মহাজোটে থাকেন।
তবে বর্তমান এমপি মোস্তাফিজুর রহমান চলতি সংসদসদস্য হিসেবে এমনিতেই অন্যদের চেয়ে ৫০ ভাগ এগিয়ে আছেন, বাকিটা সভানেত্রীর সুদৃষ্টি ও সিদ্ধান্ত।
তিনি সভা-সমাবেশে বারবার তাঁর করা উন্নয়নের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছেন। দেখিয়ে দিচ্ছেন কোথায় কোথায় তাঁর উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। তাঁর আমলে কত শত কোটি টাকার কাজ হয়েছে তার ফিরিস্তিও তিনি প্রতিটি সভায় বারবার জানান দিচ্ছেন। এক সমাবেশে তিনি বলেন, বাঁশখালীর ইতিহাসে তাঁর আমলে যত উন্নয়ন হয়েছে তা অন্য কারও আমলে হয়নি। গত ৪০ বছরে তাঁর আমলেই বাঁশখালীতে সবচেয়ে বেশি উন্নয়ন হয়েছে বলে জানান তিনি। সে হিসেবে তিনি মনে করছেন বাঁশখালীতে নৌকার মাঝি হওয়ার যোগ্যতায় তিনি সবার চেয়ে এগিয়ে আছেন।
এনটিভির খবরের সূত্র ধরে মোস্তাফিজুর রহমান এমপির পিএস বাহারছড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তাজুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বাঁশখালী টাইমসকে জানান, ‘খবর সত্য। আমরা জানতাম নেত্রী আমাদের নিরাশ করবেন না। নৌকার প্রকৃত মাঝিকেই তিনি বাঁশখালীবাসীর জন্য মনোনয়ন করেছেন।’
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও খবরটি ‘চাওর’ হয়েছে। মনোনয়নের খবরে অভিনন্দন ও উল্লাস প্রকাশ করে মোস্তাফিজুর রহমানের ফেসবুক আইডিতে ট্যাগ দিয়ে পোস্টের পর পোস্ট দিয়ে ভরিয়ে দিচ্ছেন তাঁর সমর্থক-অনুসারীরা।