মুহাম্মদ মিজান বিন তাহের: বাঁশখালীতে আজ শুক্রবার (৩১ জানুয়ারী) থেকে ১০ দিন ব্যাপী বাংলাদেশের একমাত্র বিংশতম ঋষিকুম্ভ ও কুম্ভ মেলা শুরু হতে যাচ্ছে, যা বাংলাদেশের একমাত্র ঋষিকুম্ভ মেলা। এই ঋষিকুম্ভ মেলায় প্রতিবারের ন্যায় কয়েক লক্ষাধিক লোকের অংশগ্রহণ হবে বলে সূত্রে জানা যায়। বাঁশখালীর ঋষিধাম সারাদেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম তীর্থ স্থান হিসেবে পরিচিত। মুলত র্পূণকুম্ভের অনুসরণে যুগাবতার শিবকল্পতরু শ্রী শ্রীমৎ স্বামী অদ্বৈতানন্দ পুরী মহারাজ প্রতিষ্ঠিত এই ঋষিধামে বাংলাদেশের একমাত্র ঋষিকুম্ভ অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। প্রতি তিন বছর অন্তর অন্তর অনুষ্ঠিত এই ঋষিকুম্ভ মেলাকে ঘিরে বাংলাদেশ-ভারত তথা উপ-মহাদেশের কয়েক লক্ষাধিক সাধুসন্ন্যাসী ও পূণ্যার্থীগণ উপস্থিত হয়ে এখানে ধর্মীয় কার্যাদি সম্পাদন করেন।
সেই ধারাবাহিকতায় আজ শুক্রবার ৩১ জানুয়ারী থেকে ১০ দিন ব্যাপী বাঁশখালীর কোকদন্ডী ঋষিধামে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশের একমাত্র আন্তর্জাতিক ঋষিকুম্ভ ও কুম্বমেলা। যা বাংলাদেশের আর কোথাও অনুষ্ঠিত হয় না। বাঁশখালীতে শ্রীমৎ স্বামী অদ্বৈতানন্দ পুরী মহারাজ ১৯৫৭ সাল থেকে এই ঋষিকুম্ভ মেলার শুভারম্ভ করেন। প্রতি তিন বছর অন্তর অন্তর এই ঋষিকুম্ভ মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।
এবার হচ্ছে বিংশতম ঋষিকুম্ভ ও কুম্ভমেলা। ভারতের ইতিহাস প্রসিদ্ধ ৪টি স্থানে এই ঋষিকুম্ভ মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। সেগুলো হল- ভারতের ১) হরিদ্ধার ২) প্রয়াগ ৩) উজ্জয়িনী অবন্তিকা ৪) নাসিকা (গোদাবরী তট) স্থানে হয়ে থাকে। যেখানে লাখো ভক্ত জনতা, মুনি, গুণী, ধ্যানী-যোগী, জ্ঞানী, সাধু-সন্ত, ঋষিদের সমাবেশ এবং মিলন মেলা ঘটে। যেখানে দুরত্ব ঘুচিয়ে নৈকট্য, দ্বৈত খ-ত্ব-সীমাবদ্ধতা, সংকীর্ণতা ঘুচিয়ে অদ্বৈত অখ- বা বিরাটত্ব, সীমাহীনতা, সম্প্রসারিতা তথা অসীমের বৃহৎ মহৎ সৎ উদারতা প্রসারতার স্রোতধারায় অবগাহন করে কায়িক, মানসিক, আত্মিক মুক্তির দ্বার উম্মোচন করেন।
প্রথম দিবস ফেব্রুয়ারী ভোরে মঙ্গল আরতি ও জয়গানে মঙ্গল আহবান, জাতীয় পতকা উত্তোলন, বর্ণাঢ্য মহোশোভাযাত্রা, শ্রী শ্রী গুরু মহারাজের পূজা, অতিথিশালার শুভ উদ্বোধন, শ্রী শ্রী গুরু মহারাজের ভোগরাগ ও সমবেত প্রার্থনা, মহাপ্রসাদ বিতরণ, শ্রীমদ্ভগবদগীতা পাঠ, ভক্ত সম্মেলন ও অদ্বৈত সঙ্গীতাঞ্জলি, দশমহাবিদ্যা পূজার অধিবাস, মহাপ্রসাদ বিতরণ অনুষ্ঠিত হবে। দেশ-বিদেশের শুভার্থীরা যাতে যথাযথ ভাবে অবস্থান করতে পারেন সে ব্যাপারে সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়ে থাকে। কুম্ভ মেলা যথাযথ ভাবে সু-সম্পন্ন করার জন্য প্রশাসনসহ সকল সহযোগিতা কামনা করেন।
কুম্ভমেলা উদযাপন পরিষদের আহবায়ক দেবাশীষ পালিত, মেলা সুন্দর ও সুষ্টভাবে পালন করার জন্য আমরা সকল প্রকার নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। মেলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে র্যাব ,পুলিশের পাশাপাশি বিপুল পরিমান আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়ন থাকবে বলে তিনি জানান। এই বার এই মেলায় ১২-১৫ লক্ষাধিক মানুষের জমায়েত হবে।
এ ব্যাপারে বাঁশখালীর ঋষিধাম ও তুলসীধামের মোহন্ত মহারাজ শ্রীমৎ স্বামী সুদর্শানন্দ পুরী মহারাজ বলেন, গুরুজীর আর্শিবাদে আগামী ২০২০ইং মেলা সুষ্ঠ ভাবে সম্পন্ন করার জন্য সকল প্রস্তুতি চলছে এবং তিনি আশাবাদ ব্যাক্ত করে বলেন; গুরর কৃপায় সকলের আন্তরিক উপস্থিতি ও সহযোগীতায় আশারাখি বিংশতম আন্তর্জাতিক ঋষিকুম্ভ ও ঋষিকুম্ভ মেলা সকল ভক্তদের মিলন মেলায় পরিণত হবে। কারণ বাংলাদেশের আর কোন জেলায় বা উপজেলায় এই মেলা হয় না। এই মেলায় কোন সকল প্রকার নিরাপত্তার থাকবে। যাতে কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা না হয়।