মুহাম্মদ মিজান বিন তাহের, বাঁশখালী টাইমস: বাঁশখালীতে জমে উঠেছে ঈদ বাজার। ঈদের বাকি আর মাত্র ছয় দিন। তাই শেষ মুহুর্তে বেশ জমে উঠেছে বাঁশখালীর ঈদ বাজার। পুরোদিন জুড়েই থাকে ক্রেতাদের উপছে পড়া ভিড়, সন্ধ্যার পরে বাড়ে আরো দ্বিগুন। ঠিকভাবে হাটার জায়গাটুকুও থাকেনা সন্ধ্যা থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত। ক্রেতাদের ভিড়ে মুখরিত হয়ে উঠেছে মার্কেটগুলো। সব বয়সের নারী-পুরুষ তাদের পছন্দের জিনিস পত্র কিনতে ব্যস্ত। ঈদকে সামনে রেখে বাহারি পোশাকের পসরা সাজিয়েছেন দোকানিরা। অভিজাত বিপণি বিতান থেকে শুরু করে ছোট বড় মার্কেটের দোকানগুলো এখন বাহারি পোশাকে ঠাসা। ক্রেতা সাধারণের পদভারে পূর্ণ মার্কেটগুলোর বিক্রেতাদের ঘুম নেই। বাঁশখালী উপজেলার লোকজন ছাড়াও পার্শ্ববর্তী আনোয়ারা-সাতকানিয়া ও চকরিয়া পেকুয়া উপজেলার লোকজন এসে বাঁশখালীর বিভিন্ন মার্কেটগুলোকে ব্যাপক হারে ভিড় জমিয়েছে। উপজেলার আওতাধীন বড় বড় বাজার গুলোতে ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে ক্রেতাদের ভীড় ততই বাড়ছে। দোকানীরাও ক্রেতাদের ভীড় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে। ক্রয় বিক্রি বেশী হওয়ায় দোকানের কর্মচারীর সংখ্যা ও বৃদ্ধি করা হয়েছে। বাঁশখালীর বিভিন্ন এলাকা থেকে চট্টগ্রাম শহরে যাওয়ার গাড়ী বিড়ম্বনার কারণে অনেকে বাধ্য হয়ে বাঁশখালী থেকে কেনাকাটা করছে।
বাঁশখালী উপজেলা সদর, মিয়ারবাজার, গুনাগরি প্রেমবাজারের প্রধান সড়কে এই মার্কেটগুলোকে বিভিন্ন ধরনের লাইটিংয়ে করে সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য। বাড়তি আকর্ষণে করা হয় হরেক রকমের লাইটিংয়ের ব্যবস্থাও। একই সাথে ফুটপাতের দোকানগুলোকেও আকর্ষণীয় করে সাজিয়ে তোলা হয়েছে।
গুনাগরি ও উপজেলা সদরের অত্যাধুনিক শপিং সেন্টার গুলোতে এখন ১ হাজার থেকে শুরু করে প্রায় অর্ধলক্ষাধিক টাকা দামের শাড়ি পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে। ৩০০ থেকে ১০/১৫ হাজার টাকা দামের পাঞ্জাবী, সেলোয়ার কামিজ ও থ্রিপ্রিস ১ থেকে ৪০-৫০ হাজার টাকা দামের বিক্রি হচ্ছে। মার্কেট গুলোতে বিদেশী হরেক রকমের কসমেটিক ও ইমিটেশন জুয়েলারী এর সমাহার রয়েছে।
পৌরসদরের জিএসপ্লাজা, লক্ষী প্লাজা, মিয়ারবাজারের শহিদ ইউছুফ শফিং কমপ্লেক্সে সহ গুনাগরি ও পুকুরিয়া চৌমুহনীর বিভিন্ন মার্কেটে ব্যবসায়ীরা মাইক দিয়ে ক্রেতা আর্কষণের জন্য সারাক্ষণ প্রচার চালাচ্ছে। মাইকে প্রচারের কারণে ক্রেতা সাধারণ কোন দোকানে, কোন মার্কেটে, কোন জিনিস পাওয়া যাচ্ছে তা সহজে বুঝতে পারছে। ফলে ক্রেতারা সহজেই নির্ধারিত মার্কেট ও দোকানে গিয়ে প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ক্রয়ের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। অবশ্য সারাক্ষণ মাইক বাজানোর কারণে শব্দ দূষণের অভিযোগ এনেছেন অনেকে। উপজেলার আওতাধীন পুকুরিয়া চৌমুহনী, রশিরউল্লাহ মিয়াজীর হাট,মোশারফ আলীর হাট,গুনাগারি রামদাশ মুন্সীর হাট,কাথরিয়া বাজার,সরল বাজার,
জালিয়াখালী পুরাতন বাজার,গন্ডামারা ও বড়ঘোনা বেয়ান বাজার,ছনুয়া মনুমিয়াজীর,বাজার,সরলিয়া,বাজার,প্রেমবাজার,নাপোড়া বাজার ও চাম্বল বাজারে দেদারছে বেচা বিক্রি চলছে।
উপজেলা ও গুনাগরির শপিং সেন্টারে ঈদ বিক্রি উৎসবের আয়োজন করেছে। এছাড়াও উপজেলার আওতাধীন ছোটবড় বিভিন্ন হাট বাজারে ফুটপাত ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ব্যবসাও জমে উঠেছে।
উপজেলা সদর ও গুনাগরি বিভিন্ন দোকানীদের সাথে কথা বলে জানা যায়,গ্রাউন্ড, লাকি বন্দন,ছামিয়া প্রিন্ট,বাজিরাও মাস্তানি, বাগি ড্রেস, লং কোটি, থ্রি ডি, বিশাল, লকনা, সুইচরন,গোলমহর,ইরানী,বুটিক্স, ফ্লোরটাচ,পাঞ্জাবী, সেলোয়ার কামিজ ও থ্রিপ্রিস, মাস্তানীয়া, কাশিশ, ভিনয়। কিরণমালা, মধুমালা, মায়াপরীসহ বিভিন্ন নামের থ্রিপিস ও ফোর পিস পোশাকও ক্রেতাদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে বলে জানান শপিং মল ও দোকান মালিকরা।
বাঁশখালী উপজেলা সদরের আজিজ মার্কেটে অত্যাধুনিক শপিং দোকান বাঁশখালী বীগ বাজারে ঈদের বাজার করতে আসা পেকুয়া থানার রাজাখালী গ্রামের সাদিয়া সোলতানা মীম জানান, ঈদের তো আর বেশি দেরি নেই, আর বাচ্চাদের জন্য ঈদের নতুন জামা কেনাকাটা সেরে ফেলছি। তবে কাপড়ের মূল্য গতবারের চেয়ে এবার অনেকটা বেশি মনে হচ্ছে। আর দুই একদিন পরে হলে ও অনেক ভিড়ে পড়ে যেতাম এখন আজকে ও মার্কেটে এসে দেখি অনেক ভিড়।
অন্য দিকে আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে বিভিন্ন বাজারে ক্রেতাসাধারণের নিরাপদ কেনাকাটা নিশ্চিত করতে আইন শৃংঙ্খলাবাহিনী বিশেষ টিম মাঠে সজাগ রয়েছে।