
মিজান বিন তাহের, বাঁশখালী টাইমস: বাঁশখালীতে যত্রতত্র অনুমোদনবিহীন দোকানে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার, পেট্রোল ও ডিজেল বিক্রি হচ্ছে। এতে ক্রেতা-বিক্রেতাসহ আশেপাশের লোকজন দুর্ঘটনার ঝুঁকির মুখে রয়েছেন। এছাড়াও এলপি গ্যাসের ঝুঁকিপূর্ণ ব্যবহারে নিরাপত্তার বিষয়ে উদ্বিগ্ন অনেকেই।
উপজেলা সদর ও পৌরসভা ছাড়াও বিভিন্ন ইউনিয়নে যত্রতত্র এলপি গ্যাস সিলিন্ডার,পেট্রোল ও ডিজেল একসাথে একই দোকানে বিক্রি হচ্ছে। এমনকি সেলুন, মুদি দোকান, প্লাস্টিক সামগ্রী, কসমেটিক্স, জুতার দোকান, ফার্নিচার ও ফোন-ফ্যাক্সের দোকানেও বিক্রি হচ্ছে এটি। উপজেলার অধিকাংশ দোকানীর এলপি গ্যাস বিক্রির অনুমোদন নেই। অনেক দোকানে পুরাতন সিলিন্ডারে এলপি গ্যাস বিক্রি হতে দেখা গেছে।
পাশাপাশি অনেক ক্ষেত্রে বিভিন্ন দোকানে দেখা যায় গ্যাস সিলিন্ডারের পাশাপাশি পেট্রোল ও ডিজেল।একই সাথে তিন ধরনের বিস্ফোরক যাহা খুবই ভয়ংকর। ইতি মধ্যে উপজেলার বিভিন্ন জায়গাই সিলিন্ডার গ্যাস বিস্ফোরিত হয়ে অগ্নিকান্ড হয়েছে অহরহ।
এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনের তদারকি দৃশ্যমান নয়।উপজেলার অধিকাংশ দোকানে বিভিন্ন সাইজের এলপি গ্যাস সিলিন্ডারের মূল্য তালিকাও নেই। এসব মৌসুমি দোকানীদের এলপি গ্যাস ব্যবহারের নিয়ম কানুনও জানা নেই। সস্তায় নিম্নমানের রেগুলেটর, গ্যাস সরবরাহ পাইপ ও অনুমোদনহীন বিভিন্ন কোম্পানির ঝুঁকিপূর্ণ চুলা বিক্রির হিড়িক পড়েছে বাঁশখালীতে। বিশেষ করে বিভিন্ন বাসা-বাড়ি ও রেষ্টুরেন্টে এলপি গ্যাসের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় যত্রতত্র গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি হচ্ছে এবং দামও রাখা হচ্ছে ইচ্ছেমতো। এলপি গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারের নিয়ম কানুন না জানায় দুর্ঘটনা ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাও ঘটছে।
জানা যায়, উপজেলা সদরের থেকে উত্তরে জলদী মিয়ার বাজার দক্ষিনে দারোগা বাজার এ ছাড়া উপজেলার বিভিন্ন বাজারে ও পিএবি প্রধান সড়কের ধারে অধিকাংশ দোকানে বিপদজনক অবস্থায় এসব গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করছে ব্যবসায়ীরা। নিয়ম-নীতিকে উপেক্ষা করে মুদি, রড সিমেন্টের দোকানসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে বিক্রি করে আসছে এ সব গ্যাস সিলিন্ডার। নিয়ম অনুযায়ী গ্যাস বিক্রি করতে হলে ফায়ার সার্ভিস ও জ্বালানী অধিদপ্তরের লাইসেন্স এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নিতে হবে কিন্তু কেউ তা মানছেনা। লাইসেন্স ছাড়াই ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। শুধু পৌর সদরে নয় উপজেলার পুকুরিয়া চাঁনপুর বাজার,চৌমুহনী বাজার,বানীগ্রাম সাধনপুর বাজার, গুনাগরি চৌমুহনী, বাহারচড়া মোশারফ আলী বাজার,বশির উল্লাহ বাজার,কাথরিয়া চুনুতী বাজার,কালীপুর রামদাস মুন্সীর হাট,সদর আমিন হাট,ছফিরের দোকান,বৈলছড়ি কে বি বাজার, কাথরিয়া বাজার,চেচুরিয়া হাবিবের দোকান,জালিয়াঘাটা বাজার,জলদী মিয়ার বাজার,সরল বাজার, ভাদালিয়া হারুন বাজার, দারোগা বাজার,মনছুরিয়া বাজার,মিনজিরতলা খালাইচ্চার দোকান,জালিয়াখালী পুরাতন বাজার,নতুন বাজার,শীলকূপ টাইম বাজার, নুরু মার্কেট, গন্ডমারা বাজার,বড়ঘোনা বেয়ান বাজার,সকাল বাজার,চাম্বল বাজার,বাংলা বাজার,শেখেরখীল ফাঁড়ির মুখ,মৌলভী বাজার,ছনুয়া মনু মিয়াজীর বাজার,নাপোড়া বাজার,সরলিয়া বাজার সহ বিভিন্ন বাজারে যত্র-তত্র ভাবে বিক্রি হচ্ছে গ্যাসের সিলিন্ডার।
এ ব্যাপারে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়,এলপি গ্যাস ও পেট্রোলিয়ামের সঙ্গে অনেকগুলো সংস্থা জড়িত। এলপি গ্যাস বিক্রির জন্য সনদ ও তদারকির কাজ বিস্ফোরক অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষ করে থাকেন। এলপি গ্যাস কারা বিক্রি করছে, তাদের বিক্রির অনুমোদন আছে কি না সেটাও বিস্ফোরক অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষ দেখেন। এছাড়াও স্থানীয় প্রশাসনেরও এ ব্যাপারে করণীয় অনেক কিছুই আছে। যারা বিক্রি করছে তাদের ফায়ার অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স লাইসেন্সের আওতায় আনার পরিকল্পনা চলছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরের সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন। সিলিন্ডারগুলোতে মেয়াদ উল্লেখের বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা প্রয়োজন।
এদিক সারাদেশে প্রশাসনের পক্ষ থেকে অনুমোদনহীন এলপি গ্যাস বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হলেও এ ধরনের অভিযান এখন ও বাঁশখালীতে চোখে পড়েনি।
এ বিষয়ে বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোমেনা আক্তার বলেন, গ্যাস বিক্রির জন্য জ্বালানী অধিদপ্তর থেকে লাইসেন্স নেওয়া প্রয়োজন আমার মনে হয় এদের কারোরই ল্যাইসেন্স নেই। আমি জরুরী ভাবে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিব। যত্রতত্র এলপি গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি বন্ধের ব্যাপারে শিগগিরই কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।