তাফহীমুল ইসলাম(বাঁশখালী টাইমস)- করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে চীন, স্পেন, ইতালিসহ বিশ্বের বহু ক্ষমতাধর রাষ্ট্র পরিণত হয়েছে মৃত্যুপুরীতে। বাদ যায়নি বাংলাদেশও। এখানেও শুরু হয়েছে লাশের মিছিল। আইডিসিআরের তথ্যমতে এখন পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৯ জন। শনাক্ত হয়েছে ৮৮ জন জন। সর্বশেষ ২৪ ঘন্টায় সর্বোচ্চ ১৮ জন শনাক্ত হয়েছে বলে আইডিসিআর সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছে। এই অদৃশ্য ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে ১৪ই এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ও গণপরিবহন চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ সরকার। নিত্যপ্রয়োজনীয় ব্যতীত দোকানপাট, শপিংমলও বন্ধ। জনসমাগম ঠেকাতে দেশব্যাপী মোতায়েন করা হয়েছে সেনাবাহিনী। এসব কিছুর পরও মানুষকে গৃহবন্দী রাখা যাচ্ছে না। বাঁশখালীর ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম নয়। বাঁশখালী প্রধান সড়কে সশস্ত্র বাহিনী টহল দিচ্ছে। মাইকিং করে মানুষকে সচেতন করছে। রাস্তা থেকে মানুষকে তাড়িয়ে দিচ্ছে। তারপরও জনগণ সচেতন হচ্ছে না। প্রধান সড়ক কিছুটা ফাঁকা থাকলেও অভ্যন্তরীণ সড়কগুলো ঠিক আগের মতো। গ্রামের চায়ের দোকানগুলোতে চলছে আড্ডা, লুডু খেলা। কোন কোন এলাকায় সরকারী নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সীমিত পরিসরে চালু রাখা হয়েছে প্রদান সড়কঘেঁষা হোটেল, রেস্তেরাও। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া তরুণরাও মাঠে ক্রিকেট, ফুটবল খেলছে; যেন ঈদের ছুটিতে বাড়ি এসেছে। বিশেষ করে পশ্চিম বাঁশখালীর জনসমাগম যেন কোনভাবেই ঠেকানো যাচ্ছে না। সন্ধ্যায় এখানকার স্থানীয় বাজারগুলো লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়।
গত ৩রা এপ্রিল চট্টগ্রামে প্রথমবারের মতো করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্ত রোগী পাবলিক ট্রান্সমিশনের মাধ্যমে আক্রান্ত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এমন সময় জনসমাগম ঠেকানো না গেলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে। বৈশ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করলে যা সহজে বুঝা যাবে। এই মূহুর্তে প্রশাসনের সর্বোচ্চ কঠোরতা অবলম্বন করা উচিত বলে মনে করেন কেউ কেউ। বাঁশখালীর অভ্যন্তরীণ সড়ক ও এলাকা নিয়ন্ত্রণে উপজেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে ইউনিয়ন পরিষদকে দায়িত্ব দিলে ভালো ফলাফল আসবে বলে সচেতন মহলের ধারণা।
এ প্রসঙ্গে বৈলছড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কফিল উদ্দিন বাঁশখালী টাইমসকে বলেন- ‘আমি নিজ উদ্যোগে চৌকিদার পাঠিয়ে গ্রামের বেশ কয়েকটি চায়ের দোকান বন্ধ করতে নির্দেশ দিয়েছি৷ তাছাড়া বিভিন্ন জায়গায় যেখানে খেলাধুলা হচ্ছে তাদেরকেও অনুরোধ জানানো হয়েছে। এমন কি সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী গণজমায়েত না হওয়ার লক্ষ্যে পরিষদের নিয়মিত কার্যক্রম গ্রাম আদালতের কার্যক্রমও বন্ধ রেখেছি। আমার মনে হয় সকল ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিরা আন্তরিকভাবে এগিয়ে আসলে মানুষকে বুঝানো যাবে।’
এ প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গ্রামবাসী বলেন- ‘হায়াত মউত আল্লাহর হাতে আমি একজন সচেতন হয়ে লাভ কি? কার মধ্যে ভাইরাস আছে কেমনে বুঝবো? কাজকর্মে তো ঘর থেকে বের হতে হয়।’