বাঁশখালী টাইমস: বাঁশখালী উপজেলার সাধনপুর ও পুকুরিয়ার পাহাড়ি এলাকায় বন্য হাতি প্রতিরাতে লোকালয়ে হানা দিচ্ছে। হাতির পাল প্রতিরাতে এলাকার লোকালয়ে প্রবেশ করে বাড়িঘর, গাছপালা ও ফসলী ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করছে। একের পর এক হাতির তান্ডরের শিকার মানুষগুলোর জীবন যাত্রা অচল হয়ে পড়েছে ।চলতি মাসে বেশ কয়েকবার হাতির হামলা ও তান্ডবের শিকার পরিবার গুলো দুর্বিসহ জীবন যাপন করতে বাধ্য হচ্ছে । অপরদিকে সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলেই এলাকা গুলোতে ছড়িয়ে পড়ে হাতির আতংক । সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল বনবিভাগ কোন গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন না করায় সাধারন জনগন তাদের প্রতি আস্তা হারাচ্ছে। চলতি মাসে চারবার হাতির হামলার শিকার হয় সাধনপুর ও পুকুরিয়া ইউনিয়নের জনগন । এদিকে পাহাড়ি অঞ্চলের লোকালয়ের যখন এই অবস্থা তখন বন বিভাগের লোকজন হাজারো চেষ্টা চালিয়ে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছেন না বন্য হাতির এই দলটিকে। গত এক সপ্তাহ যাবৎ এই বন্য হাতির পালের তান্ডব অব্যাহত রয়েছে।
তারই ধারাবাহিকতায় গতকাল ও পুকুরিয়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড রাধামুড়া ও নতুন পাড়া এলাকায় বন্য হাতির আক্রমনে ১ জন নিহত ও আহত হয়েছেন অন্তত ৩ জন। গত বুধবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাত ৩ টার দিকে এ ঘটনাটি ঘটে। স্থানীয় সূত্রে যায়, পুকুরিয়া ইউনিয়নের রাধামুড়া এলাকায় গত বুধবার রাত ৩ টার দিকে একদল বন্য হাতির পাল লোকালয়ে প্রবেশ করে।
এদিকে হাতির দলকে তাড়া করতে গিয়ে লোকজন নানা ছোটাছুটি করছিল। এ সময় হাতি তাড়ানোর জন্য বাড়ির বাহিরে যাওয়া ছেলেকে খুঁজতে গিয়ে মরিয়ম বেগম (৬১) নামে এক বৃদ্ধ মহিলা হাতির পায়ে পৃষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন। এ সময় হাতির হামলায় গুরুতর আহত হয় শফিকুল ইসলাম (৩৫) নামে আরো এক ব্যক্তি। গুরুতর আহত শফিকুল ইসলামকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানা যায় । নিহত মরিয়ম বেগম ওই এলাকার ছিদ্দিক আহমদের স্ত্রী ও শফিকুল ইসলাম একই এলাকার মৃত আবদুল কুদ্দুচের পুত্র বলে জানা যায়।
অন্যদিকে এর আগে ও বেশ কয়েকবার সাধনপুর ইউনিয়নের পূর্ব বৈলগাও এলাকার দমদমা দিঘীর পশ্চিম পার্শ্বে ২টি হাতি বাড়িঘর ও আশেপাশের এলাকায় তান্ডব চালিয়েছে ।হাতির হামলার শিকার পরিবারের লোকজন নিজেদের জীবন বাচাঁতে দিকবিদিক ছুটলে ও হাতির দল একে একে গত কয়েক মাস ধরে প্রায় ৩০-৪০ টির অধিক বাড়িঘর তছনছ করে।
এখন প্রতিরাতে এলেই হাতি গুলো প্রতিরাতে কোথাও না কোথাও হানা দিয়ে বাড়িঘর তছনছ করছে । গাছপালার বিপুল পরিমান ক্ষতি সাধন করলে ও এ হাতি গুলো বনে ফিরিয়ে নিতে কোন কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না বনবিভাগ কিংবা দায়িত্ব শীল প্রশাসন ।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ফরিদ আহমদ জানান, বাঁশখালীর পুকুরিয়া ও সাধনপুর এখন আতংকপুরীর নাম। এখানে সূর্যাস্তের সাথে সাথে সদলবলে পাহাড় থেকে নেমে পড়ে হাতির পাল। তাদের অাক্রমনে এখাকার অনেক বসতঘর ভাংচুর সহ নানা ভয়ানয়ক ক্ষতি হয়েছে পূর্বের বিভিন্ন সময়।
এ ব্যাপারে সাধনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মহিউদ্দীন চৌধুরী খোকা চলতি মাসে বেশ কয়েকবার বার হাতি পুকুরিয়া ও সাধনপুরের বৈলগাওঁ,বাণীগ্রাম,কচুজুম থেকে শুরু করে সর্বত্র তছনছ করে বেড়াচ্ছে এর থেকে সাধারন জনগন পরিত্রাণ দিতে হবে নাইলে জনগন সীমাহীন ক্ষতির সন্মুখীন হবে । তিনি আরো বলেন, বিগত দিন গুলোতে হাতির হামলায় বেশ কয়েকজন প্রান হারিয়েছে । তিনি বনবিভাগের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে কিভাবে হাতিকে বনে ফিরিয়ে নেওয়া যায় অথবা হাতির খাবার কিভাবে নিশ্চিত করা যায় সেটার জন্য প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।