BanshkhaliTimes

পুঁইছড়িতে জোর করে ধান কেটে নিল প্রতিপক্ষ!

জোর করে কৃষকের পাকা ধান কেটে নিল প্রতিপক্ষ
বাঁশখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধিঃ

করোনা দুর্যোগকালে ক্ষেতের ধানগুলোই আশা দিচ্ছিল কৃষক আব্দুস ছালামকে (৫০)। আর কয়েক দিন পরেই ঘরে তোলার কথা ছিল ধান। কিন্তু পূর্ববিরোধের জেরে তাঁর সব ধান জোর করে কেটে নিয়ে গেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। ফসল হারিয়ে একেবারে পথে বসে গেছেন তিনি। চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার পশ্চিম পুুঁইছুড়ি ২নং ওয়ার্ডে গত বৃহস্পতিবার এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানায়, দীর্ঘদিন ধরে ৪৯ শতাংশ জমি নিয়ে আব্দুস ছালামের সঙ্গে একই গ্রামের গোলাম কাদেরের মাঝে বিরোধ চলে আসছিল। তবে ধান চাষের সময় বাধাও আসেনি প্রতিপক্ষের তরফ থেকে। তিনি ধারকার্জ করে এই ৪৯ শতক জমিতে এবার বি আর ৪৮ ধান চাষ করেছিলেন। ধান পেকে যাওয়ায় এগুলো কাটার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার সকালে দেশের মহামরি করোনা ভাইরাসের এই সুযোগ কে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে সন্ত্রাসী ভাড়া করে দেশীয় অস্ত্র স্বস্ত্র নিয়ে জমির সব ধান কেটে নিয়ে যায় প্রতিপক্ষ গোলাম কাদের ও তার লোকজন। এ সময় কৃষক আব্দুস ছালাম ধান কাটতে বাঁধা দিলে তাঁকে মারধর করা হয়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে বাঁশখালী হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করে। পরর্বতীতে তার রোপনাকৃত সব পাঁকা ধান কেটে নেয় যায় প্রতিপক্ষ গোলাম কাদের। এ নিয়ে বাঁশখালী থানায় মামলা দায়ের প্রস্তুতি চলছে বলে জানা যায়।
ভুক্তভোগী আব্দুস ছালাম জানান, এ জমিটুকু তাঁর পৈতৃক সম্পত্তি। শত বছর ধরে তাঁর বাবা-দাদারা এটি ভোগদখল করে আসছেন। বহু বছর যাবৎ আমার মোঃ ছৈয়দ এই জমিটি চাষবাধ করে আসছেন। গতবছর চাষবাদ করার জন্য স্থানীয় জসিম উদ্দীনকে লাগিয়ত দিয়। তিনি জমিটিতে ধান রোপন করেছেন। বিগত কয়েক বছর আগে গোলাম কাদের এ জায়গার মালিকানা দাবি করলে স্থানীয়ভাবে একটি সালিস হয়। তিনি জমির কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। তবু তিনি গায়ের জোরে জায়গাটি দখল করার পায়তারা চালিয়ে আসছেন। তখন ও তিনি সন্ত্রাসী ভাড়া করে আমার পরিবারের ৫-৬ জন ব্যক্তিকে পিটিয়ে জখম করে। পরর্বতীতে আমি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এর আদালত (দক্ষিন) চট্টগ্রামে মিচ মামলা দায়ের করি । উক্ত মামলায় ফৌজদারী র্কাযবিধি আইনের ১৪৫ ধারা মোতাবেক বি.এস খতিয়ান নং-৩৩৯ , বি.এস দাগ ১৪১৭/১৪১৮/১৪২২ দাগাদির ৯৬ শতক তফসিলোক্ত সম্পত্তিতে জোরপূর্বক অনুপ্রবেশ,দখল এবং দাঙ্গা-হাঙ্গামার মাধ্যমে শান্তি শৃঙ্খলা নষ্ট না করার জন্য স্থিতিবস্থার আদেশ দেওয়া হয়। তবু তিনি আইন অমান্যকরে ধানগুলো কেটে নিয়ে গেল।
লাগিয়ত নেওয়া চাষী মোঃ জসিম উদ্দীন জানান, গতবছর আমি জমি টা খাজনা দিয়ে আব্দুস ছালামের কাছ থেকে নিয়ে ধান রোপন করি। কেউ বাধা দেন নি । ধান যখন পেকে যায় ,আমি ধান গুলো কাটার আগেই গোলাম কাদেরের লোকজন জোরর্পূবক কেটে নিয়া যায়।
এ ব্যাপারে প্রতিপক্ষ গোলাম কাদেরের লোকজন ধান কেটে বাড়িতে নিয়ে আসার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘জমি টা আমাদের ক্রয় কৃত তায় আমরা জমির ধান কেটে নিয়ে এসেছি।’ এ ব্যাপারে গোলাম কাদেরের সাথে মুটোফোনে বেশ কয়েকবার যোগাযোগের চেস্টা করা হলে ও তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে ইউপি সদস্য আবুল কাশেম বলেন, বিষয়টি নিয়ে আদালতে মামলা চলমান থাকায় আমার এর কোন বিচার করতে পারি না। তবে তিনি ধান গুলো গোলাম কাদের রোপন করেছেন বলে জানান।
বাঁশখালী থানার অফিসার ইনর্চাজ (ওসি) মুহাম্মদ রেজাউল করিম মজুমদার ববলেন, এখন পর্যন্ত কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মুহাম্মদ মিজান বিন তাহ

Spread the love

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *