পিতামাতা ও সন্তানের পারস্পরিক দায়দায়িত্ব
পৃথিবীর সবচেয়ে মধুর সম্পর্কের চিত্র- পিতামাতা ও সন্তানের মধ্যকার সম্পর্ক। তাদের পারস্পরিক সম্পর্কের সুমিষ্ট রসায়ন মৃত্যুর পরেও উভয়ের জন্য মঙ্গলদায়ক।
সন্তানের যেমন পিতা-মাতার প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে তেমনি পিতা-মাতারও সন্তানের প্রতি কর্তব্য অনেক। পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের কর্তব্যগুলো শুরু হওয়ার আগেই শুরু হয় সন্তানের প্রতি পিতা-মাতার কর্তব্য। এগুলো সন্তানের অধিকার। সন্তান জন্মের আগে থেকেই তার অধিকার শুরু হয়।
সন্তানরা আজীবন শিশু হয়ে থাকেনা। বয়স বাড়ার সাথে সাথে তারা সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা অর্জন করে, মানসিক দৃঢ়তা অর্জন করে। বিচিত্র পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে চলার মতো যুদ্ধেও উপনীত হয় এক কালের শিশু!
ঠিক এমন সময়ে সন্তানদের প্রত্যাশা থাকে পিতামাতা সিদ্ধান্ত গ্রহণে তাদেরও সুযোগ দিবে।
এতে সন্তানেরা সমাজ বিনির্মাণে নিজেদেরকে নিয়োজিত করার জন্য প্রস্তুতি নিতে পারেন। ছোট ছোট সিদ্ধান্ত গ্রহণের অভ্যস্ততা সময়ের পরিক্রমায় অসাধারণ সিদ্ধান্ত নেয়ার সাহস জোগাবে।
মানুষ মাত্রই ভুল করে এটা যেমন স্বাভাবিক, ছোটরা ভুল করবে এটাও অস্বাভাবিক কিছুই নয়। সন্তানদের ইতিবাচক অনুপ্রেরণা ও উৎসাহিত করার ফল বড় ধরণের সফলতা হয়ে ধরা দিবে নিঃসন্দেহে।
সন্তান ছেলে বা মেয়ে যে-ই হোক জন্মের পর থেকেই পিতা-মাতার কর্তব্য শুরু। সন্তানকে দৈহিক, আত্মিক, মানসিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী এবং নৈতিক মূল্যবোধসম্পন্ন করে গড়ে তোলার দায়িত্বও পিতা-মাতার।
পিতা-মাতারা সুকৌশলে তিলে তিলে তার সন্তানের কোমল হৃদয়ে আকাশ, চন্দ্র-সূর্য, বৃষ্টিতে যে মহান শক্তির হাত তা শুনিয়ে মহান সৃষ্টিকর্তার প্রতি অবিচল আস্থা-বিশ্বাস, ভালোবাসা ও ভীতির বীজ বপন করেন।
জ্ঞান ছাড়া মানবজীবন পরিপূর্ণরূপে বিকশিত হতে পারে না বলেই ইসলাম প্রত্যেক নর-নারীর ওপর জ্ঞানার্জন ফরজ করেছে। কিন্তু আমরা ধর্মীয় ও নৈতিক আচরণের ত্রুটিগুলোর ব্যাপারে উদাসীন থাকি।
প্রতিটি পিতা-মাতাই সন্তানের প্রথম আদর্শ। সন্তানের কৃতিত্বে যেমন পিতামাতাগণ আনন্দিত হন তেমনি সন্তানের ব্যর্থতার দায়ভার তাদেরকে নিতে হবে। আজ যারা বিদ্যাশ্রমে আছেন নিশ্চয়ই তাদের সন্তানকে নৈতিক শিক্ষা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন।
নৈতিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত সন্তানদের প্রতি একটি মেসেজ প্রতিটি সন্তান তাদের বাবা-মায়ের কাছে প্রিয় এতে কোন সন্দেহ নেই! তাই বৃদ্ধ বয়সে মাতা-পিতার প্রতি দ্বায়িত্ববান হোন যাতে আপনার সন্তান আপনার প্রতি দায়িত্বশীল হওয়ার শিক্ষা গ্রহণ করেই বেড়ে উঠেন।
লেখক: লায়ন এম আইয়ুব, কলামিস্ট, সংগঠক ও সমাজকর্মী