ছোড ছোড ঢেউ তুলি পানির
লুসাই পাহারুত্তন লামিয়ারে যারগই কর্ণফুলি।
সেই কর্ণফুলির গা ঘেঁষে উঠা এবং ছোট বড় পাহাড়ে শোভাম-িত চট্টগ্রাম নগরী। সেই ব্রিটিশ আমল থেকে এই নগরী নানা কারণে তাৎপর্যম-িত। দিনে দিনে এই শহরে গড়ে উঠেছে পোষাকশিল্পসহ নানা ছোটবড় কলকারখানা। এর প্রধান কারণ হলো দেশের প্রধান সমুদ্র বন্দর এবং বিমান বন্দরের উপস্থিতি। বর্তমানে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে এই নগরী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। বর্তমানে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সীমা যেমন বেড়েছে তেমনি লোকসংখ্যাও ঢের বেড়েছে।
এছাড়া প্রতিদিন এর আশপাশের বিভিন্ন উপজেলা ও জেলা থেকে ব্যবসায়িক কাজে অনেক লোক আসা যাওয়া করে থাকেন।
এই বিরাট কর্মযজ্ঞের চট্টগ্রাম নগরী পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার এবং নগরবাসীর বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেখাশুনার দায়িত্ব চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের। কিন্তু আর্থিক অস্বচ্ছলতা এবং সীমিত লোকজন দিয়ে সুচারুভাবে সম্পন্ন করা করপোরেশনের একার পক্ষে সম্ভব হয়ে উঠে না।
তবে স্থানীয় বাসিন্দা এবং ছোটবড় দোকান মালিক ও পথচারীরা কিছুটা সচেতন হলে নগরীকে অনেকটা পরিচ্ছন্ন রাখা সম্ভব।
নগরীর অধিকাংশ বাসিন্দাদের দেখা যায় তাঁদের গৃহস্থালি বর্জ্য রাস্তার পাশে একটি স্থানে ফেলেন ( যেখানে সিটি করপোরেশনের ডাস্টবিন নেই)। অনেক এলাকায় রাস্তার পাশ ঘেঁষে পানি নিষ্কাশনের সরু নালা আছে তাতে বর্জ্য ফেলেন।
পথচারীদেরও দেখা যায় কলা বা ফলমূল খেয়ে খোসা রাস্তায় ছুঁড়ে ফেলেন। আমরা প্রায় সবাই সিটি করপোরেশনের বা মেয়রের সমালোচনা করি কিন্তু নগরবাসী হিসেবে নগরীকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার আমাদের প্রত্যেকের কিছু ন্যূনতম দায়িত্ব রয়েছে তা পালনে তৎপর হই না।
নগরীতে বেশ কিছু ছোটবড় পাহাড় রয়েছে।
কিন্তু সেসব পাহাড় প্রায় অরক্ষিত।
অনেক ছিন্নমূল পরিবারকে দেখা যায় পাহাড়ের পাদদেশে স্থায়ীভাবে বসবাস করছে। প্রথম আলো ২৬ জুলাই সংখ্যায় প্রকাশ নগরীর মতিঝরণায় এক ব্যক্তি পাহাড় কেটে ১৭টি ঘর তৈরী করে ভাড়া দিয়েছেন। সে সব ঘরে অবৈধভাবে বিদ্যুৎ, পানি এবং গ্যাস সংযোগ দেয়া হয়েছে।
এসব দেখার কি কেউ নেই? একেত অবৈধ তার উপর পাহাড়ের পাদদেশে (পাহাড় কেটে) ঘর তৈরী করে ভাড়া দেয়া খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। চট্টগ্রামে শক্তিশালী পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটি রয়েছে।
তাঁদের প্রতি অনুরোধ পাহাড় খেঁকোদের হাত থেকে পাহাড় রক্ষা করুন এবং ঝুঁকিপূর্ণ বসতি যারা তৈরী করছেন তাদের আইনের আওতায় আনুন।
সবশেষে বলবো নগরীর সড়ক, পাড়া-মহল্লার চলাচলের রাস্তার পাশে অসংখ্য কাঁচা বাজার প্রতিদিন বসছে। এতে পথচারীদের এবং যান চলাচলে বিঘœ ঘটছে, পরিবেশ দূষিত হচ্ছে।
অবাক হতে হয় চট্টগ্রামের প্রাণকেন্দ্র নিউমার্কেটের সামনে মেশিনারী ও টুলস মার্কেটের সামনে পথচারীদের চলাচলের ফুটপাথ অনেক আগেই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের দখলে চলে গিয়েছে। এখন রাস্তা (যানবাহনের) দখল করে জুতা সেন্ডেল বিক্রির পসরা বসেছে। এসব দেখার কি কেউ নেই?
চট্টগ্রাম নগরকে সুন্দর করতে হলে নগরবাসী, সিটি করপোরেশন এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে এগিয়ে আসার অনুরোধ করছি। আসুন সবাই মিলে পরিবেশবান্ধব চট্টগ্রাম নগরী গড়ে তুলি।