পরিবারের ছায়াহীন এতিম শিশুরা কি এ দুর্যোগে খাবার পাচ্ছে?
লায়ন এম আইয়ুব
করোনার বৈশ্বিক থাবায় সর্বোচ্চ প্রযুক্তির দেশ ইতালি, আমেরিকা, স্পেনসহ বলতে গেলে সারা বিশ্ব মৃত্যুপুরী। বৈশ্বিক সংকটের মুখে গোটাবিশ্ব। সারাবিশ্বের ন্যায় সরকার সাধ্যমতো সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করছে।
সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, কলকারখানা, সকল প্রকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও এতিমখানা বন্ধ রাখা হয়েছে, যা করোনাভাইরাস না ছড়ানোর জন্য অত্যন্ত জরুরি ও গুরুত্বপূর্ণ। বৈশ্বিক এ মহামারিতে সরকার সাধারণ মানুষের কষ্টের কথা চিন্তা করে বিশেষ প্রণোদনার ঘোষণা দিয়েছেন যার মধ্যে সকল শিল্পখাতকে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।
বৈশ্বিক মহামারীতে সকল এতিমখানা বন্ধ রাখা হয়েছে। বাড়িতে ফিরে যেতে বলা হয়েছে সকল এতিম শিশুদের, কিন্তু এরা কার কাছে যাবে? কোথায় যাবে? এদের স্বজনরা দেখভাল করতে পারেনি বলেইতো ওরা এতিমখানায় আশ্রয় নিয়েছে। আজ সেই আশ্রয়স্থলও মহামারী কেড়ে নিয়েছে। আমরা জানি সমাজসেবা অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান বিভিন্নভাবে অনুদান পায় কিন্তু যে প্রতিষ্ঠানগুলো তালিকায় নেই মানুষের সাহায্য নিয়ে চলতো সেই প্রতিষ্ঠানের বাচ্চাগুলোর কী হবে? মা-বাবাহীন এতিম শিশুগুলো যেখানেই থাকুক তাদের দু’বেলা খাবার নিশ্চিত করা খুবই জরুরি।
একটি মানবিক বিপর্যয় থেকে তাদের রক্ষা করতে দ্রুত বেসরকারি এতিমখানার তালিকা তৈরি করে দৈনন্দিন খাবার নিশ্চিত করতে হবে, তা না হলে তারা খাবারের সন্ধানে বাইরে বের হবে এবং তাদের মাধ্যমে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। যেহেতু তারা এখন অভিভাবকশূন্য সেহেতু বর্তমানে যেখানে আশ্রয় নিয়েছে তাদের মাধ্যমে খাবার নিশ্চিত করতে পারলেই দেশমাতৃকা নিরাপদ থাকবে অনেকাংশে।
সরকার চাইলে ২৪ ঘন্টার মধ্যে এ তালিকা তৈরি করা সম্ভব, সমাজসবা অধিদপ্তরকে নির্দেশ দিলে সম্মানিত কর্মকর্তাগণ দ্রুত তালিকাভুক্ত করার সক্ষমতা রাখেন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা একমাত্র আপনি এদেশের এতিমের দায়িত্ব নিয়েছিলেন, একমাত্র আপনিই এই এতিমদের ব্যথা অনুভব করতে পারবেন কারণ আপনি নিজেও একজন এতিম। দয়া করে এতিম বাচ্চাগুলোর দিকে নজর দিন, বাংলাদেশের প্রতিটি এতিম শিশুর নির্ভার অভিভাবক আপনি।
এতিম বাচ্চাদের সহযোগিতা করুন, মানবতার হাত প্রসারিত করুন। এতিমের সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন; ‘আমি এবং কোনো এতিমের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি জান্নাতে দুই আঙ্গুল ব্যবধান-দূরত্বে অবস্থান করব।’ (বুখারী, মুসলিম)
রাসুলুল্লাহ (সা.) আরো বলেন; ‘যে ব্যক্তি কোনো এতিম শিশুকে নিজের ঘরে এনে তাকে পানাহার করায়, আল্লাহ তায়ালা তাকে জান্নাত দান করবেন, তবে শর্ত হচ্ছে, সে এমন পাপ করেনি যা ক্ষমার অযোগ্য।’ (তিরমিজি)
সুতরাং এতিম শিশুদের বেশি বেশি সাহায্য করুন। শুধু সরকারের দিকে তাকিয়ে থাকলে হবে না, আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে সেই মানসিকতা দান করুন।
লেখক: সাধারণ সম্পাদক- বাঁশখালী সমিতি চট্টগ্রাম