পটিয়াকে জেলা ঘোষণা ও বাঁশখালীবাসীর মাথাব্যথার কারণ

গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আগামী ২১ মার্চ চট্টগ্রাম আসছেন।এ উপলক্ষে চারদিকে শুরু হয়েছে মাতামাতি,সাথে আরেকটা বিষয়ও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে, সেটা হল দক্ষিন চট্টগ্রামের ৭ টি উপজেলা নিয়ে পটিয়া নামকরন করে আলাদা একটি জেলা করার ঘোষনা আসা।

কিন্তু এ বিষয়টা নিয়ে পটিয়াবাসীকে অত্যন্ত উৎফুল্ল দেখা গেলেও বাকি উপজেলা সমূহ বিশেষ করে কর্ণফুলী, আনোয়ারা বাঁশখালীর মানুষের মাঝে বিরুপ প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা যাচ্ছে।ব্যক্তিগত ভাবে আমি নিজেও একজন বাঁশখালীবাসী হিসেবে পটিয়া জেলায় যেতে চাই না। কেন যেতে চাইনা তার কয়েকটি কারণ বর্ণনা করতে চাই।

প্রথমত স্বাধীনতার পর থেকে আমরা বাঁশখালীবাসী চট্টগ্রাম শহরকে সবকিছুর কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে জানি। স্বভাবতই জীবিকার তাগিদে বাঁশখালীর বেশির ভাগ মানুষের চাকরী বাকরী,ব্যবসা বানিজ্য চট্টগ্রামকেন্দ্রীক।
এখন বাঁশখালীকে যদি পটিয়া জেলার অধীনে নিয়ে যাওয়া হয় তাহলে স্বভাবতই প্রশাসনিক নানা কাজে তাদেরকে পটিয়া সদরে যেতে হবে, এবং এতে করে সৃষ্টি হবে নানা প্রশাসনিক জটিলতা। বেড়ে যাবে মানুষের কষ্ট। এরপর যে বিষয়টি সমস্যা হয়ে দাড়াবে সেটা হল বাঁশখালীবাসীর সকল সরকারী বেসরকারী কাজের দলিল দস্তাবেজ, কাগজপত্র পটিয়াকেন্দ্রীক হয়ে যাবে, যেহেতু বাঁশখালীর বেশিরভাগ মানুষ বাঁশখালী এবং চট্টগ্রাম শহরে বসবাস করে সেহেতু এসব দলিল দস্তাবেজ, কাগজপত্র ঠিক করতে পটিয়া যেতে হবে। এতে করে কাজের দীর্ঘসূত্রিতা বাড়বে, উল্টো যোগাযোগ ব্যবস্থা হওয়ায় মানুষের কষ্টেরও সীমা থাকবে না।
তিন, যদি পটিয়াকে জেলা করা হয় এবং বাঁশখালীকে পটিয়ার অধিনে নিয়ে যাওয়া হয় তাহলে সমগ্র বাঁশখালীর বিভিন্ন সরকারী বেসরকারী প্রতিষ্ঠান, দোকানপাটের সাইনবোর্ড পরিবর্তন করতে হবে।
চার,আমরা বাঁশখালীবাসীরা যুগ যুগ ধরে চট্টগ্রামের বাসিন্দা,প্রাণের চট্টগ্রামের জন্য আমাদের রয়েছে অফুরন্ত ভালবাসা।আমাদের যদি এখন চট্টগ্রাম থেকে আলাদা হয়ে জেলার জায়গায় পটিয়া লিখতে হয় সেটা হবে অত্যন্ত কষ্টকর।

একটা এলাকার উন্নয়নের জন্য প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ করতে হয়। আমরাও চাই হউক। কিন্তু সেটা পটিয়া নাম দিয়ে না। হতে পারে সেটা দক্ষিন চট্টগ্রাম।এ বং তার প্রানকেন্দ্র হউক বর্তমান চট্টগ্রাম শহরের দক্ষিন সাইড। অর্থাৎ চট্টগ্রাম শহরকে দুই ভাগে ভাগ করে দক্ষিন অংশকে প্রশাসনিক কেন্দ্রবিন্দু করা হউক। যেহেতু ইতোমধ্যে বাঁশখালীবাসী পটিয়া জেলায় যাওয়ার ব্যাপারে নেতিবাচক মনোভাব দেখাচ্ছে সেহেতু সরকারেরও এ বিষয় টা মাথায় রাখা উচিৎ।

লেখক: মো: আরিফুর রহমান সুজন
সভাপতি, সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশন,বাঁশখালী উপজেলা শাখা।

Spread the love

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *