কাজ নিয়ে সৌদি আরবে গিয়ে নারী কর্মীদের নির্যাতনের শিকার হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ফাইট ফর উইমেন রাইটস, চট্টগ্রামের সভাপতি ও প্রাক্তন কাউন্সিলর অ্যাডভোকেট রেহানা বেগম রানু।
বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বরে নিপীড়নের বিরুদ্ধে সচেতন সমাজ ও সারেং এর আয়োজনে সৌদিআরবে বাংলাদেশী নারী গৃহকর্মীদের উপর শারীরিক ও যৌন নির্যাতনের প্রতিবাদে আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন তিনি।
অ্যাডভোকেট রেহানা বেগম রানু বলেন, সৌদিআরবে প্রবাসী নারী শ্রমিকরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন, তারা বিদেশে কাজ করতে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরছেন, নির্যাতন সইতে না পেরে সব খুইয়ে দেশে ফিরে আসছেন। দেশে রেমিটেন্স পাঠানো এই নারী শ্রমিকদের নিরাপত্তায় সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।
তিনি বলেন, নির্যাতনের ফলে মারা যাওয়া নারীদের অপরাধ কী ছিল? তাদের পেটে ক্ষুধা আছে, তাদের চাহিদা আছে। সেই চাহিদা পূরণের জন্য, অর্থ উপার্জনের জন্য প্রিয় মাতৃভূমি, সন্তান, স্বজনকে ছেড়ে তাদের যেতে হয়েছে। কাজ করতে চাওয়া- এটা কী তাদের অপরাধ?
স্মৃতিচারণ করে রেহানা বেগম রানু বলেন, গত বছর সৌদিআরবে ওমরা করতে গিয়েছিলাম। সৌদিআরবে বিমানবন্দরে দেখলাম একজন নারী খুব কাঁদছেন। তিনি সুনামগঞ্জের বাসিন্দা। তিনি একেবারেই অক্ষরজ্ঞানহীন ছিলেন। ঘরের কাজকর্ম করার জন্য নিয়ে গিয়ে তাকে যৌন নির্যাতনও করা হয়েছে। এক বছর তাকে কোন বেতন দেওয়া হয়নি। ফেরার সময় শুধু টিকিটটা করে দিয়েছে। সেদিন ওই নারীর যে কান্না, সেটি দেখে আমরাও কেঁদেছি।
তিনি বলেন, আজকের মানববন্ধন থেকে আমরা দাবি জানাই, যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে যেন নারী শ্রমিক পাঠানো না হয়। এই নারী শ্রমিকরা দেশের সম্পদ। নারী হোক, পুরুষ হোক তাদেরকে মানবসম্পদে রূপান্তর করলে দেশের ক্ষতি নেই। বিদেশে না পাঠিয়ে তাদেরকে যদি ৩ মাস বা ৬ মাসের প্রশিক্ষণ দেওয়া যায়, তাহলে তাকে আর বিদেশ যেতে হবে না।
সাংবাদিক ইমরান এমির সভাপতিত্বে ও সাংবাদিক মিনহাজুল ইসলামের পরিচালনায় মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নগর আওয়ামী লীগ নেতা হাবিব উল্লাহ, সংগঠক নোমান উল্লাহ বাহার, গণসংহতি আন্দোলনের নেতা নাসির জসিম, মিলন দত্ত, আইনজীবী প্রদীপ চৌধুরী, ইলিয়াস কামরু, হামিদ উদ্দীন, নাছির উদ্দীন, অভিজিৎ নাথ, জান্নাতুল ফেরদৌস আখি, সারেং’র কো-ফাউন্ডার আরমান ও তাসনিম প্রমুখ।