
কল্যাণ বড়ুয়া মুক্তা: দক্ষিণ চট্টগ্রামের অন্যতম পর্যটন স্পট বাঁশখালী ইকোপার্কে শীত মৌসুমে সামনে রেখে নানামুখী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে কর্তৃপক্ষ। পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে এই উদ্যোগ। বাঁধ ভাঙার কারণে দীর্ঘ ১০ বছর ধরে বামেরছড়া লেক ছিল পানিশূন্য। সেই বাঁধ নির্মাণ করায় আগের রূপ ফিরে পেতে যাচ্ছে বাঁশখালী ইকোপার্ক।
বাঁশখালী ইকোপার্কটি ২০০৩ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে সারা দেশে সাড়া জাগাতে সক্ষম হয়। বিশেষ করে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বৃদ্ধির সাথে জীব- বৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও সমৃদ্ধ করা, জনগণের চিত্তবিনোদনের জন্য ইকো-ট্যুরিজমের সুযোগ সৃষ্টি, শিক্ষা ও গবেষণামূলক কার্যক্রমের সুযোগ- সুবিধা বৃদ্ধির জন্য তথ্য ও শিক্ষা কেন্দ্র স্থাপন, প্রাকৃতিক বনজ সম্পদ ও বন্যপ্রাণীসমূহের সংরক্ষণের জন্য গণসচেতনকতা সৃষ্টি, জলাধার ও আশপাশের এলাকায় জলজ পাখির আবাসস্থল সৃষ্টি, বিরল ও বিলুপ্তপ্রায় বনজ, ফলদ, ভেষজ ও শোভাবর্ধনকারী গাছের বাগান সৃজনের মাধ্যমে উদ্ভিদ প্রজাতির বৈচিত্র্য সংরক্ষণ, সমুদ্রতটে ঝাউবাগান সৃজনের মাধ্যমে চিত্ত বিনোদনের সুযোগ সৃষ্টি, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও দারিদ্র বিমোচনের জন্য অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে বনায়ন সৃজনসহ বহুমুখী পরিকল্পনা নিয়ে বাঁশখালী ইকোপার্কের যাত্রা শুরু হয়েছিল।
শীতে পার্কে অতিথি পাখির কলকাকলি এবং বিনোদনপ্রেমীদের পদভারে মুখরিত থাকত। দূরদূরান্ত থেকে পর্যটকরা ইকোপার্কে ভিড় জমাত। একদিকে গান-বাজনা, অন্যদিকে পাখির কলতান-সব মিলিয়ে বাঁশখালী ইকোপার্কের এখন নতুন রূপ। এ যাত্রায় হঠাৎ ছন্দপতন ঘটে ২০০৮ সালের আগস্টে। ওই সময় বন্যায় বামেরছড়া বাঁধ ভেঙে অধিকাংশ স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সাংসদ মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী ইকোপার্কের উন্নয়নে গ্রহণ করেন বিশেষ উদ্যোগ। এ উদ্যোগের প্রেক্ষিতে বামেরছড়া ও ডানেরছড়া এলাকায় ৪ কোটি ৮ লক্ষ টাকার উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চলছে। ফলে সরকার আগের মতো পাবে রাজস্ব।
এদিকে, বামেরছড়া এবং ডানেরছড়ার পানিতে কয়েক হাজার একর জমিতে বোরো চাষ হবে। এছাড়া মাটির বাঁধ ৩০ মিটার ডব্লিউআরএস নির্মাণ দুটি ডব্লিউআরএস মেরামত দুটি, সেচ চেইন ৫০০ মিটার এবং পানি ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি দায়িত্বশীলদের জন্য একটি ভবন নির্মাণ করা হয় বলে জানান বাঁশখালী উপজেলা প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম ভুঁইয়া।
বর্তমানে বামেরছড়া ও ডানেরছড়ায় পানি থাকায় বোরো চাষের পাশাপাশি আগের মতো শীতের পাখির আগমন হবে-এ ব্যাপারে আশাবাদী বনবিভাগের কর্মকর্তারা। ইকোপার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আনিসুজ্জামান শেখ বলেন, আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি। প্রতিদিন অনেক পর্যটক আসছেন। আমরা তাদের নিরাপত্তা দিতে সচেষ্ট। তাছাড়া অবকাঠামোগত উন্নয়নে অনেক পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। তা বাস্তবায়ন হলে আলোকিত হবে পার্কটি।