তান্নি চৌধুরীর কবিতা || পুরুষ পাথর

BanshkhaliTimes

পুরুষ পাথর

তান্নি চৌধুরী

পাথরের অপর নাম রাখা হয়েছিল পুরুষ।
মাতৃগর্ভে বেড়ে ওঠা সমুদ্র তখনও পৃথিবী দেখেনি।
মেঘের শরীর বেয়ে নেমে আসা একরত্তি আলো প্রথম জেনেছিল শুকিয়ে যাওয়া নদীর নামই পুরুষ।
ক্রান্তি লগ্নে থমকে যাওয়া বিষাদ এসে ছুঁয়ে গেল কালের ধ্বংসাবশেষ।
রাতের গোঙানি শেষে,
পৃথিবীর কোলে নেমে এলো সমুদ্র শিশু।
ভূমিষ্ঠ হলো মায়া চোখ,
টলমটল অশ্রু আগলে রাখা নদী।
জোছনা সরিয়ে মেঘ এসে বাসা বাঁধে জলজ শরীরে।
চাতক এসে ভিজিয়ে নেয় শরীর,
ক্লান্ত ডাহুক জিরিয়ে নেয় অবসরে।
খরস্রোতা নদীও চিনে নেয় পুরুষ একটি পাথর,
শুকিয়ে যাওয়া প্রাচীন নদী।
এক সময় পাথরের শরীর ছুঁয়ে দেয় শিশিরের ফোঁটা।
মেঘ হতে নেমে আসে শিলা খন্ডের স্তুপ।
পুরুষের চোখে জমা হয় কয়েকশো বৃষ্টির শরীর।
জমা হতে থাকে নীল সরোবর।
কত শত পাথর ধুয়ে গেছে কর্দমাক্ত জলে,
শিউলি- বেলীর স্নানের সুবাসে।
খরতাপে গলে গেছে নীলা,
বদলে গেছে গোমেদ পাথরের আকৃতি।
পুরুষ শুধু সমুদ্র চিনেছে,
জোয়ার ভাটার হিসেব জেনেছে।
পুরুষালি পাথরে কোনো নদীর স্থায়ী নিবাস নেই,
তবু লেখা থাকে নাম,
জমে থাকে অসংখ্য সমুদ্র।

Save

Spread the love

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *