ছাত্রলীগের হামলায় কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থী তরিকুল ইসলাম তারেকের মেরুদণ্ডও ভেঙে গেছে বলে ধারণা করছেন চিকিৎসক।
তরিকুল বর্তমানে নগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
তরিকুলের চিকিৎসার তত্ত্বাবধানে থাকা চিকিৎসক ডা. সাঈদ আহমেদ বলেন, ‘তরিকুলের ডান পা মারাত্মকভাবে ভেঙে গেছে। ওর পিঠের এক্স-রে রিপোর্টে দেখা যায় কোমরের ঠিক ওপরে মেরুদণ্ডের হাড় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, ভেঙে গেছে বলা যায়। ভারী কিছুর আঘাতে এমনটি হয়েছে। তাকে দীর্ঘ সময় চিকিৎসা নিতে হবে।’
গত ২ জুলাই হামলার পর চিকিৎসাধীন তরিকুলের শারীরিক অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। তরিকুল জানান, কোমরের ঠিক ওপরের জায়গায় প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করছেন তিনি। ক্রমে তা বাড়ছে। একটু নড়াচড়া করলেই মনে হচ্ছে কেউ ভারী বস্তু দিয়ে সেখানে আঘাত করছে। বিছানায় উঠে বসতেও পারছেন না।
রাবি ছাত্রলীগের উপ-সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুনের হাতুড়ির আঘাতে মেরুদণ্ডের হাড়টি ভেঙেছে বলে ধারণা তরিকুল ও তার সহপাঠীদের।
হাসপাতালে তরিকুলের সঙ্গে থাকা ছোট বোন ফাতেমা খাতুন জানান, তার বাবা কৃষক। জমি-জমাও নেই তাদের। তিন ভাই-বোন সবাই পড়াশোনা করেন। বাবা-মা কষ্ট করে তাদের পড়াচ্ছিলেন। তরিকুলের জন্য মাসে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা পাঠাতেন। অথচ ভাইয়ের চিকিৎসার জন্য এখন প্রতিদিন পাঁচ হাজার টাকার প্রয়োজন হচ্ছে। এত টাকা তারা কোথায় পাবেন।
তরিকুলের সঙ্গে থাকা সহপাঠীরা জানান, তিনি সুস্থ না হলেও ৫ জুলাই রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দিয়ে দেওয়া হয়। পরে তাকে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অনেক পরীক্ষা করানো হয়েছে। তবে সব রিপোর্ট এখনো হাতে আসেনি।
২ জুলাই বিকেলে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীরা রাবির প্রধান ফটকের সামনে পতাকা মিছিল বের করলে সেখানে ছাত্রলীগ হামলা চালায় বলে অভিযোগ ওঠে। তারা হাতুড়ি, লোহার পাইপ, বাঁশ ও লাঠি দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে তরিকুলকে গুরুতর আহত করে।
প্রিয় ডট কম