ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে আরব বিশ্বের প্রতিক্রিয়া
প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনের (পিএলও) মহাসচিব ট্রাম্পের এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে ‘পৃথক দুই রাষ্ট্রের ভাবনা’র সর্বশেষ আশাটুকুও শেষ হয়ে গেছে।
তিনি মনে করেন, এই ঘোষণার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সমস্যার মধ্যস্থতাকারী হিসেবেও মর্যাদা হারিয়েছে।
ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্টের বরাত দিয়ে তার মুখপাত্র নাবিল আবু রুদিনা বলেছেন, ট্রামের এই সিদ্ধান্ত আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করবে এবং বিশ্ব শান্তি প্রক্রিয়া ব্যাহত করবে। তিনি ট্রাম্পকে ভবিষ্যতের বিপজ্জনক পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করেছেন।
জর্ডানের সংসদ থেকে জনগণকে রাস্তায় নেমে আসার আহ্বান জানানো হয় এবং আম্মানের মার্কিন দূতাবাসে ঘেরাও করে বিক্ষোভের আহ্বান জানানো হয়েছে। জর্দান ও ফিলিস্তিন বুধবার আরব পররাষ্ট্রমন্ত্রীর জরুরি বৈঠকে ডেকেছে। এই বৈঠক শনিবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বলে একটি কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে।
বুধবার আঙ্কারাতে একটি যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেসেপ তায়িপ এর্দোগান ও জর্ডানের রাজা আবদুল্লাহ মার্কিন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেসেপ তায়িপ এর্দোগান বলেন “ব্যক্তিগত উচ্চাকাঙ্ক্ষার জন্য কোটি কোটি মানুষের ভাগ্য নিয়ে খেলার কোন অধিকার মিঃ ট্রাম্পের নেই”।
এদিকে রাজা আবুলুল্লাহ বলেন, “জেরুসালেম পুরো মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতার মূল কারণ”, তিনি আরো বলেন যে, তুরস্ক ও জর্দান এই “চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কাঁধে কাঁধ রেখে লড়বে”।
ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রপতি মাহমুদ আব্বাস বলেন, এই সিদ্ধান্ত দিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রক্রিয়ায় “মধ্যস্থতাকারীর” অপব্যবহার করেছেন। টিভিতে একটি প্রাক রেকর্ডকৃত বক্তৃতায় তিনি বলেন, “এই অপ্রীতিকর এবং অগ্রহণযোগ্য পদক্ষেপগুলি ইচ্ছাকৃতভাবে সকল শান্তি প্রচেষ্টাকেই ক্ষতিগ্রস্ত করে”। তিনি জোর দিয়ে বলেন যে জেরুজালেম “প্যালেস্টাইন রাষ্ট্রের শাশ্বত রাজধানী ছিল, ইসরায়েলের নয়”।
তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেওয়াত্তুত কভুসোগ্লু বলেছেন যে এই সিদ্ধান্তটি “দায়িত্বজ্ঞানহীন”।
তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত “দায়িত্বজ্ঞানহীন” উল্লেখ করে টুইটারে লিখেছেন “এই সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক আইনের বিরুদ্ধে এবং প্রাসঙ্গিক জাতিসংঘের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে”।
এদিকে হামাস ট্রাম্পের এই ঘোষণায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। তারা বলেছে এর মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে ‘নরকের দরজা’ খুলে গেল।
তারা আরব ও অন্যান্য মুসলিম দেশকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে যুক্তরাষ্ট্রের দূতকে নিজ নিজ দেশ থেকে বহিষ্কারের আহ্বান জানিয়েছে।