BanshkhaliTimes

জমে উঠেছে বাঁশখালীর ঈদ বাজার: পছন্দের শীর্ষে পাঞ্জাবি-থ্রিপিস!

মুহাম্মদ মিজান বিন তাহের, বাঁশখালী: বাঁশখালীতে জমে উঠেছে ঈদ বাজার। ঈদের বাকি আর মাত্র ক’দিন। তাই শেষ মুহূর্তে বেশ জমে উঠেছে বাঁশখালীর ঈদ বাজার। মার্কেটে পুরোদিন জুড়েই থাকে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। সন্ধ্যার ভিড় আরো বেড়ে যায়। পছন্দের জিনিসপত্র কিনতে ব্যস্ত সব বয়সের নারী-পুরুষ।

অভিজাত বিপণি বিতান থেকে শুরু করে ছোট বড় মার্কেটের দোকানগুলো এখন বাহারি পোশাকে ঠাসা। ক্রেতা সাধারণের পদভারে পূর্ণ মার্কেটগুলোর বিক্রেতাদের ঘুম নেই। বাঁশখালী উপজেলার লোকজন ছাড়াও পার্শ্ববর্তী আনোয়ারা-সাতকানিয়া ও চকরিয়া পেকুয়া উপজেলার লোকজন এসে বাঁশখালীর বিভিন্ন মার্কেটগুলোকে ব্যাপক হারে ভিড় জমিয়েছে। উপজেলার আওতাধীন বড় বড় বাজারগুলোতে ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে ক্রেতাদের ভিড় ততই বাড়ছে।

দোকানীরাও ক্রেতাদের ভিড় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে। বেচাকেনা বেশি হওয়ায় দোকানের কর্মচারীর সংখ্যা ও বৃদ্ধি করা হয়েছে। বাঁশখালীর বিভিন্ন এলাকা থেকে চট্টগ্রাম শহরে যাওয়ার বিড়ম্বনার কারণে অনেকে বাধ্য হয়ে বাঁশখালী থেকে কেনাকাটা করছেন।

বাঁশখালী উপজেলা সদর, মিয়ারবাজার, গুনাগরি, কালীপুর, চাম্বল বাজার, প্রেমবাজারের প্রধান সড়কে এই মার্কেটগুলোকে বিভিন্ন ধরনের লাইটিংয়ে সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে। একই সাথে ফুটপাতের দোকানগুলোকেও আকর্ষণীয় করে সাজিয়ে তোলা হয়েছে।

গুনাগরি ও উপজেলা সদরের অত্যাধুনিক শপিং সেন্টারগুলোতে এখন ১ হাজার থেকে শুরু করে প্রায় অর্ধলক্ষাধিক টাকা দামের শাড়ি পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে। ৩০০ থেকে শুরু করে ১৫ হাজার টাকা দামের পাঞ্জাবি, সেলোয়ার কামিজ ও থ্রিপিস ১ থেকে ২০ হাজার টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। মার্কেটগুলোতে বিদেশি কসমেটিক ও ইমিটেশন জুয়েলারির সমাহার রয়েছে।

পৌরসদরের জিএসপ্লাজা, লক্ষ্মী প্লাজা, মিয়ারবাজারের চৌধুরী মার্কেট সহ গুনাগরির এ গণি প্লাজা ও পুকুরিয়া চৌমুহনীর বিভিন্ন মার্কেটে ব্যবসায়ীরা মাইক দিয়ে ক্রেতা আর্কষণের জন্য সারাক্ষণ প্রচার চালাচ্ছে। মাইকে প্রচারের কারণে ক্রেতা সাধারণ কোথায় কোন জিনিস পাওয়া যাচ্ছে তা সহজে বুঝতে পারছেন। ফলে ক্রেতারা সহজেই নির্ধারিত মার্কেট ও দোকানে গিয়ে প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ক্রয়ের সুযোগ পাচ্ছেন। অবশ্য সারাক্ষণ মাইক বাজানোর কারণে শব্দ দূষণের অভিযোগ এনেছেন অনেকে।

উপজেলার আওতাধীন পুকুরিয়া চৌমুহনী, রশিরউল্লাহ মিয়াজীর হাট, মোশারফ আলীর হাট, গুনাগরি রামদাশ মুন্সীর হাট, কাথরিয়া বাজার, সরল বাজার, জালিয়াখালী পুরাতন বাজার, গন্ডামারা ও বড়ঘোনা বেয়ান বাজার, ছনুয়া মনু মিয়াজীর বাজার, সরলিয়া বাজার, প্রেমবাজার, নাপোড়া বাজার ও চাম্বল বাজারে দেদারছে বেচা বিক্রি চলছে।

উপজেলা ও গুনাগরির উৎসব শপিংমল সেন্টারে ঈদ বিক্রি উৎসবের আয়োজন করেছে। এছাড়াও উপজেলার আওতাধীন ছোটবড় বিভিন্ন হাট বাজারে ফুটপাত ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ব্যবসাও জমে উঠেছে।

উপজেলা সদর ও গুনাগরি বিভিন্ন দোকানীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গ্রাউন্ড, লাকি বন্দন, ছামিয়া প্রিন্ট, বাজিরাও মাস্তানি, বাগি ড্রেস, লং কোটি, থ্রি ডি, বিশাল, লকনা, সুইচরন, গোলমহর, ইরানী, বুটিক্স, ফ্লোরটাচ,পাঞ্জাবি, সেলোয়ার কামিজ ও থ্রিপিস, মাস্তানীয়া, কাশিশ, ভিনয়, কিরণমালা, মধুমালা, মায়াপরীসহ বিভিন্ন নামের থ্রিপিস ও ফোর পিস পোশাকও ক্রেতাদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে বলে জানান শপিংমল ও দোকান মালিকরা।

অন্যদিকে পবিত্র ঈদুল ফিতরে বন্ধুদের মধ্যে দলবদ্ধ পাঞ্জাবি সেলাই ও ক্রয়ে হিড়িক পড়েছে।

উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারের বিভিন্ন পাঞ্জাবি দোকান ও টেইলার্সে গিয়ে দেখা যায়, প্রচুর পরিমাণ পাঞ্জাবি ক্রয় ও সেলাই করা হচ্ছে। বিশেষ করে পরিবারিক ও সামাজিক সংগঠনের সমস্যরা মিলে একই কালার ও একই ডিজাইনের পাঞ্জাবি কিনছে এবং সেলাই করছে। বিগত কয়েক বছর ধরে ঈদে একই কালার ও একই ডিজাইনের পাঞ্জাবি পরিধান করা সংস্কৃতি দাঁড়িয়েছে বলে জানান ব্যাবসায়ীরা।

বাঁশখালী গুনাগরিতে অত্যাধুনিক শপিং দোকান উৎসব শপিংমলে বাজার করতে আসা বাহারচড়া এলাকার শানজিদা আক্তার জানান, ঈদের তো আর বেশি দেরি নেই, আর বাচ্চাদের জন্য ঈদের নতুন জামা কেনাকাটা সেরে ফেলছি। তবে কাপড়ের মূল্য গতবারের চেয়ে এবার অনেকটা বেশি মনে হচ্ছে।

বাঁশখালী গুনাগরি এলাকার ব্যবসায়ী মোঃ জসিম উদ্দিন বলেন, প্রতিটি পোশাকই ক্রেতাদের আকৃষ্ট করছে। বিক্রি ভাল হওয়ায় বিভিন্ন দোকানের মালিকরা ও সন্তুষ্ট রয়েছেন। প্রথম দফায় আনা পোশাক বিক্রি প্রায় শেষ। নিম্মবিত্তদের সুবিধার জন্য ভারতীয় কম দামি পোশাকও রাখা হয়েছে।

উপজেলা সদরের লক্ষি স্কয়ার কয়েকজন ব্যবসায়ীর সাথে কথা বলে জানা যায়, দেশিয় পোশাকের চেয়ে ভারতীয় পোশাক বেশি পছন্দ করছে মহিলারা।

বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ কামাল উদ্দিন জানান, আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে বিভিন্ন বাজারে ক্রেতাসাধারণের নিরাপদ কেনাকাটা নিশ্চিত করতে আইনশৃংঙ্খলা বাহিনীর বিশেষ টিম মাঠে সজাগ রয়েছে।

Spread the love

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *