জনপ্রিয় নায়ক সালমান শাহ’র ২১তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

সালমান শাহ’র ২১তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

বাংলা চলচ্চিত্রের বৃহৎ নক্ষত্র শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন ওরফে সালমান শাহ’র প্রয়ান দিবস আজ। ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর পৃথিবী ছেড়ে চলে যান। রেখে যান অগণিত ভক্ত ও শুভাকাঙ্খী

সিনেমা জগতে মাত্র তিন বছরের ক্যারিয়ারে জনপ্রিয়তার শীর্ষস্থান দখল করেছিলেন তিনি। রহস্যজনক মৃত্যুর ২১ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো জানা সম্ভব হয়নি এর আসল কারণ। অপমৃত্যু না হত্যাকাণ্ড এখনো রয়েছে ধোঁয়াশা?

মৃত্যুবার্ষিকীতে দেশব্যাপী দোয়া, মিলাদ, কোরআন খতম ও সালমানের রহস্যজনক মৃত্যুর প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের জন্য মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করেছে তার পরিবার ও সালমান শাহ ঐক্য পরিষদ।

গেলো মাসে রাবেয়া সুলতানা রুবি নামে সালমান ও তার স্ত্রী সামিরার ঘনিষ্ঠ এক নারী ফেসবুকে সালমানকে খুন করা হয়েছে দাবি করে একটি ভিডিও বার্তা দেন।

এর পরেই শুরু হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে তোলপাড়। উঠে আসে পুরানো অনেক সমীকরণ। শুরু থেকেই এ মৃত্যুকে হত্যাকাণ্ড দাবি করা সালমানের মা নীলা চৌধুরীও লন্ডরে বসে এনিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। তার অভিযোগ ছিল সালমানের স্ত্রী সামিরা ও তার পরিবার এ ‘হত্যায়’ জড়িত আছে।এ নিয়ে মুখ খুলেন সালমানের শ্বশুড় ও জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক শফিকুল হক হীরা। তিনি দাবি করেন আমেরিকায় থাকা রুবি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত।

এর কয়েকদিন পর কয়েক ধফা ফেসবুকের ভিডিও বার্তার মাধ্যমে কয়েকটি বিষয় নতুন করে সামনে নিয়ে আসেন। আবার নিজেই দাবি করেন তিনি মানসিক ভাবে অসুস্থ।

এসব বিষয় নিয়ে দেশজুড়ে সালমান ভক্তরা মৃত্যু রহস্য উন্মোচনের জন্য পুনরায় তদন্তের জোড় দাবি জানান।

পরে স্ত্রী সামিরও সালমানের মৃত্যু নিয়ে মুখ খুলেন। তিনি তদন্তে কোনো আপত্তি নেই বলে উল্লেখ করেন। গণমাধ্যমকে তিনি জানান, এ মামলার সঠিক তদন্ত আমিও চেয়ে এসেছি। স্বামী খুনের অপবাদ আমি আর বইতে চাই না।

সালমান শাহের জন্ম ১৯৭১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর নানার বাড়ি সিলেটের দাড়িয়া পাড়ায়। তার অভিনয় জীবন শুরু হয় বিটিভিতে শিশু শিল্পী হিসেবে। কিশোর বয়সে তিনি ছিলেন কন্ঠশিল্পী।

১৯৯৩ সালে সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ ছবিতে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে তার চলচ্চিত্রে আগমন। প্রথম ছবিতেই সারা দেশের মানুষের মন জয় করে নিলেন তার অভিনয়, ব্যক্তিত্ব আর সুদর্শন চেহারা দিয়ে।

স্বল্প সময়ের ক্যারিয়ারে সালমান শাহ ২৭টি ছবিতে অভিনয় করেন। তার প্রায় প্রতিটি সিনেমা ব্যবসা সফল ছিল। তার অভিনীত চলচ্চিত্রের মধ্যে কেয়ামত থেকে কেয়ামত, তুমি আমার, অন্তরে অন্তরে, সুজন সখী, বিক্ষোভ, স্নেহ, প্রেমযুদ্ধ, কন্যা দান, দেন মোহর, স্বপ্নের ঠিকানা, আঞ্জুমান, মহা মিলন, আশা ভালোবাসা, বিচার হবে, এইঘর এই সংসার, প্রিয়জন, তোমাকে চাই, স্বপ্নের পৃথিবী, সত্যের মৃত্যু নেই, জীবন সংসার, মায়ের অধিকার, চাওয়া থেকে পাওয়া, প্রেম পিয়সী, স্বপ্নের নায়ক, শুধু তুমি, আনন্দ অশ্রু উল্লেখযোগ্য।

এসব সিনেমায় তার নায়িকা ছিলেন মৌসুমী, শাবনুর, লিমা, শাবনাজ, বৃষ্টি, শাহনাজ,শ্যামা প্রমুখ। কিয়মত থেকে কিয়ামতে সালমানের সঙ্গে মৌসুমীর অভিনয় এবং এই জুটি পরিচিত হলেও শাবনুরের সঙ্গে তার জুটিবদ্ধ সিনেমার সংখ্যা বেশি। এবং এই জুটিই বেশি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। বলা যায় সালমান শাহ শাবনুরকে লাইম লাইটে নিয়ে আসেন।

এছাড়াও টিভি নাটকেও বেশ পরিচিত মুখ ছিলেন তিনি। এগুলো হলো- আকাশ ছোঁয়া, দেয়াল, সব পাখি ঘরে ফিরে, সৈকতে সারস, পাথর সময়, ইতিকথা, নয়ন, স্বপ্নের পৃথিবী (টেলিফিল্ম)।

Spread the love

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *